দু’জনেই তরণী বর্মন। দু’জনেরই এলাকায় বেশ ‘প্রভাব’ রয়েছে। অন্ততপক্ষে শালমাড়ার রাজনীতিতে। দুই তরণীর বাড়িতে পাঁচজন প্রার্থী। পঞ্চায়েতের বাকি প্রার্থীরাও তাদের মত নিয়েই ঠিক হয়েছে বলে শোনা যায়। শালমাড়ার পঞ্চায়েতের দখল নিতে দুই তরণীর উপরে ভরসা করছে তৃণমূল এবং বামেরা।
এক তরণী বর্মন ফরওয়ার্ড ব্লকের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা। বর্তমানে দলের দিনহাটা পূর্ব জোনাল কমিটির সহ সভাপতি। পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সদস্য। এ বার তিনি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রার্থী হয়েছেন। তরণী দেবীর স্ত্রী দীপালি দেবী, শালমাড়া পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান। এ বার তিনিও পঞ্চায়েত সমিতির আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তরণীবাবুর মেয়ে ভানুপ্রিয়া বর্মনও ছাট নোটাফেলা থেকে প্রার্থী হন।
একই পরিবারের ৩ প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। বিশেষ করে তরণীবাবু একাধিক মামলায় জড়িয়ে রয়েছেন। খুট্টিমারিতে তৃণমূল কর্মী খুনে তাঁর নামে অভিযোগ হয়। তার পর থেকেই তিনি ফেরার হয়ে রয়েছেন। তা ছাড়াও ইন্দিরা আবাসনের ঘর নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তরণীবাবুর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। দীপালি দেবী বলেন, “গ্রামের মানুষ চান আমরা প্রার্থী হই। সে জন্য বাড়ি থেকে তিন জন প্রার্থী হয়েছেন। তা নিয়ে কোনও ক্ষোভ নেই দলে।” তিনি জানান, তরণীবাবুর নামে মিথ্যে মামলা করে তৃণমূল। এলাকায় যাতে তিনি প্রচারে বার হতে না পারেন সে জন্য ওই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, “পরিবারতন্ত্র ইদানীং মানুষ খুব একটা পছন্দ করেন না। এই সময়ে বামফ্রন্ট যখন ক্ষমতায় নেই, তা না করলেই ভাল হত।” দ্বিতীয় তরণী বর্মন তৃণমূলের শালমাড়া অঞ্চল কমিটির সভাপতি। দল ক্ষমতায় না থাকার সময় থেকে লড়াইতে আছেন তিনি। এ বার তিনি জেলা পরিষদের ২৫ নম্বর আসনে দলের প্রার্থী। তাঁর স্ত্রী দেবকী শালমাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে প্রার্থী। স্বামী-স্ত্রী দুজন প্রার্থী হওয়া অনেকেই দলে প্রশ্ন তুলেছেন।
তরণীবাবু বলেন, “দীর্ঘদিন দলের হয়ে লড়াই করেছি। মানুষ জানে বলে আমাকে, আমার স্ত্রীকে প্রার্থী হিসাবে রাখতে চেয়েছেন। তাই প্রার্থী হয়েছি। গ্রাম পঞ্চায়েত আমাদের দখলে আসবে আশা করছি।” শালমাড়া পঞ্চায়েতে গত বার ১২টি আসন ছিল। একটি সিপিএম ও বাকিগুলি ফরওয়ার্ড ব্লক -এর দখলে ছিল। এ বার ১৪টি আসনে তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই বামেদের। ৩টি পঞ্চায়েত সমিতির তিনটিই বামেদের দখলে ছিল। এ বার ওই তিনি আসনে লড়াই তুঙ্গে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের স্থানীয় এক নেতা বলেন, “আমাদের তরণী বর্মন ফেরার হয়ে থাকায় ভোটের প্রচারে কর্মীরা মুষড়ে পড়েছেন। তাঁকে এখন ময়দানে দরকার।” তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী জানান, ‘তরণীদা রাতদিন খাটছেন’। তাই এ বার ফল ভাল হবে। |