নির্বাচনী প্রচার সেরে ফেরার পথে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের জেলাপরিষদের প্রার্থী কাজি রবিউল ইসলামের উপরে হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা। খড়গ্রাম থানার হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহী সড়কের উপরে জোড়া সাঁকোর কাছে তাঁর গাড়ি পৌঁছলে গুলি ছোড়ে দুই দুষ্কৃতী। একটি গুলি লাগে তাঁর গাড়িতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর উত্তর মোকামবেড়িয়াতেও তৃণমূল প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দু’টি ঘটনাই বৃহস্পতিবার রাতের। অভিযোগের তির কংগ্রেস ও বামেদের দিকে। তাঁরা অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওই রাতেই জলপাইগুড়ির জয়গাঁ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বড় মেচিয়া বস্তিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এক নেত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজন কংগ্রেস কর্মীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় মোর্চা নেতা ও জেলা পরিষদের প্রার্থী সুরেশ ঠাকুরির দাবি, কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রার্থী মোহন শর্মার নেতৃত্বে ২০-২৫ জন মিলে হামলা চালায় ওই মোর্চা নেত্রীর বাড়িতে। তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগও হয়েছে। মোহনবাবুর বক্তব্য, “অভিযোগ মিথ্যা। ওই মহিলার বাড়িতে মদের আসর বসানো নিয়ে বাসিন্দারা প্রতিবাদ করেছিলেন।” স্থানীয় কংগ্রেসের দাবি তাঁদের এক নেত্রীরই বরং শ্লীলতাহানি করেছেন মোর্চা নেতারা।
শুক্রবার সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়েছে কয়েকটি জায়গায়। বালুরঘাটের বংশীহারিতে কড়ইমিধ্যা পাড়ায় সিপিএম কার্যালয়ের সামনে তৃণমূলের মিছিলের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পাঁচ পুলিশকর্মী ঢিলের আঘাতে জখম হয়েছেন। ৭ তৃণমূল কর্মীও জখম হন। তাঁদের তিন জনকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। কোচবিহারের ধূপগুড়িতে তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে। পোড়ানো হয়েছে তৃণমূলের পতাকাও। এই দিনই পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের পাকুড়সেনির তেঁতুলিয়া-ভুমজান এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে গণ্ডগোল বাঁধে সিপিআই-সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। দু’পক্ষের মোট ৬ জন জখম হন। এঁদের মধ্যে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী বর্ণালী সিংহও রয়েছেন।
রাতে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের সুন্দরপুরের বৈদ্যনাথপুরে এক নির্দল প্রার্থী আসমত হকের বাড়িতে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আহত আসমতকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। খোরজুনাতে বোমা ছোড়াছুড়ি হয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূলের সমর্থকদের মধ্যে। তবে তাতে কেউ জখম হননি। নদিয়ার নাকাশিপাড়ার রঘুনাথপুরে সিপিএমের পতাকা অবমাননার অভিযোগে গণ্ডগোল বাঁধে। তাতে জখম হয়েছেন একটি শিশু ও দুই মহিলা সহ তিন জন।
প্রথম দফার ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুরে একমাত্র শালবনি ছাড়া জেলার আর কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগানো হয়নি বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডেকে শুক্রবার চিঠি দিয়েছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তাঁর অভিযোগ, “সবংয়ের ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ বুথ অতি সংবেদনশীল ছিল। কিন্তু সেখানে একটা বুথেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়নি। আমি কমিশনারকে লিখেছি জেলা পুলিশ প্রশাসন কেন তাঁর এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেছে, তা অনুগ্রহ করে খোঁজ নিয়ে দেখুন।” |