|
|
|
|
ভোটের বাকি দু’দিন |
পূর্বে চলছেই ভোট-সন্ত্রাস |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
পঞ্চায়েত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ভোট গ্রহণের আর দু’দিন বাকি। তার মধ্যেই জেলার একাধিক জায়গায় অব্যাহত রয়েছে হামলা, মারধরের মতো ঘটনা।
বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ায় সিপিএমের লোকাল কমিটির অফিসে ভাঙচুর ও দলের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাঁশকুড়া পুরাতন বাজার থেকে কিছু দূরে জয়কৃষ্ণপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে সিপিএমের পাঁশকুড়া উত্তর লোকাল কমিটির অফিসে এ দিন দুপুরে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার সেরে সিপিএমের কয়েক জন কর্মী আসেন। সিপিএমের ওই লোকাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ মণ্ডলের অভিযোগ, “অফিসে বিশ্রাম নেওয়ার সময় বিকেলবেলা তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রার্থী হানিফ মহম্মদের নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জন সমর্থক দলীয় অফিসে হামলা চালায়। প্রার্থী ইব্রাহিম আলি-সহ তিন কর্মীকে মারধর করে।” তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তিকুমার জানার অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “এ দিন বিকেলে ওই এলাকায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে মিছিল ও পথসভা হওয়ার কর্মসূচির সময় সিপিএম কর্মীরা হামলা করে। তখন আমাদের সমর্থকদের তাড়া খেয়ে ওই সিপিএম কর্মীরা পালিয়ে ওদের অফিসে ঢুকে যায়। তবে আমাদের কেউ সিপিএমের অফিস ভাঙচুর করেনি।”
রামনগর ২ ব্লকের দেপালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভোট প্রচারে বের হওয়ার ‘অপরাধে’ মহিলা কংগ্রেস প্রার্থী আবেদা বিবির কোল থেকে ৯ মাসের শিশুপুত্রকে কেড়ে নিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমুলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শেখ মইদুল, শেখ নেজারুল ও হিমাদ্রী মান্নার নেতৃত্বে কয়েক জন দুষ্কৃতী ওই প্রার্থী ও তার শাশুড়ি দুনিয়ার বিবিকেও ব্যাপক মারধর করেছে।
পটাশপুর ২ ব্লকের পঁচেট গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের মহিলা প্রার্থী ও দলীয় কর্মীদের মারধর করে বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সিপিএমের প্রতাপদিঘি জোনাল কমিটির সম্পাদক কালিপদ দাস মহাপাত্রের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রচার করার সময় পুরুষোত্তমপুর গ্রামের দলীয় কর্মী ক্ষুদিরাম জানাকে মারধর করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। পরে পুরুষোত্তমপুর পশ্চিম বুথের মহিলা প্রার্থী মামনি মহাপাত্র, তাঁর মেয়ে সুনন্দা ও জা প্রভাতীদেবীকে মারধর করা হয়। তাঁদের এগরা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। থানার ওই ঘটনার অভিযোগ দায়ের করার অপরাধে শুক্রবার সকালে ওই প্রার্থী-সহ দুই সিপিএম কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ, ওই ঘটনায় নেতৃত্ব দেন পুরুষোত্তমপুর পূর্ব বুথের তৃণমূল প্রার্থী প্রণব কর ও পশ্চিম বুথের প্রার্থীর স্বামী মানিক কররা। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তাপস বেরা। অন্য দিকে, এগরা ১ ব্লকের বিদ্যাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাবিশ্রা গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে সিপিএম কর্মী কালাচাঁদ মণ্ডলকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় উভয় দলের ছ’জন আহত হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত পণ্ডার অভিযোগ, দলীয় কর্মীরা কালাচাঁদবাবুকে তুলে নিয়ে যেতে বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়।
মারধরের অভিযোগ এসেছে হলদিয়া থেকেও। সিপিএমর বিরুদ্ধে দলের তিন কর্মী-সমর্থককে মারধরের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হলদিয়ার হাঁদিয়া গ্রামের নতুন বাজারের কাছে। এ দিন দ্বারিবেড়িয়া থেকে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী অরুণ মাইতি কাজ করে বাড়ি ফেরার পথে সিপিএম নেতা নন্দ জানাকে কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। সেই সময় নন্দ জানা উত্তেজিত হয়ে চড়াও হয় অরুণের উপর। খবর পেয়ে ছুটে আসে উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা। জখম হন তৃণমূলের সুরজিত্ দাস, মিলন দাস, রবীন্দ্রনাথ মাইতি ও অরুণ মাইতি। তাঁদের সকলকেই সুতাহাটা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সুতাহাটা থানায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্থানীয় সিপিএম নেতা সমীরণ দাস, নন্দ জানা, মদন জানা-সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। এ দিকে ওই এলাকাতেই এক সিপিএম কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। |
|
|
|
|
|