অনুজের খাসতালুকে জোড়াফুল ফোটানোই চ্যালেঞ্জ তৃণমূলের
‘হাইপ্রোফাইল’ ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখলে আসবে তো?
জঙ্গলমহলের ভোটপর্ব সাঙ্গ হওয়ার পর লালগড় ব্লক তৃণমূল নেতা-কর্মীদের এখন এটাই প্রশ্ন। গোপাল মাহাতো, অজিত মাহাতোদের মতো তৃণমূল কর্মীরা অবশ্য প্রকাশ্যে দাবি করছেন, গ্রাম পঞ্চায়েত তাঁরাই দখল করবেন। কিন্তু আড়ালে-আবডালে তাঁদেরই একাংশ মানছেন, ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘পরিবর্তন’ হবে কি-নাসেটা এত সহজে বলা যাবে না।
সিপিএম নেতা অনুজ পাণ্ডে ও ডালিম পাণ্ডেদের খাসতালুকে জোড়াফুল ফোটানোটাই তৃণমূলের কাছে এখন মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ! হবে নাই-বা কেন! এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, এই তো চার বছর আগেও ধরমপুরে অনুজবাবু ও তাঁর সম্পর্কিত ভাই ডালিমবাবুরাই ছিলেন শেষ কথা। এলাকায় পঞ্চায়েত-প্রশাসন ও পুলিশ অনুজবাবুরাই চালাতেন। ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতকে বিরোধীশূন্য করে দিয়েছিলেন পাণ্ডে-ভাইয়েরা। ২০০৮-এর নির্বাচনে ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮টি আসনের ৬টিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি। ফলে ওই আসনগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন সিপিএম প্রার্থীরা। অভিযোগ, গতবার ওই বুথ দখল করে সে বার একতরফা ভোট করিয়েছিলেন অনুজ-ডালিম। চ্যামিটাড়া বুথে অবশ্য তৃণমূলের এক প্রার্থী থাকলেও তিনি হেরে যান। এ বার ধরমপুরে আসন বেড়ে হয়েছে দশ। প্রতিটিতেই প্রার্থী রয়েছে তৃণমূলের। সিপিএমও প্রার্থী দিয়েছে ৯টি আসনে। আর চ্যামিটাড়া (দক্ষিণ) বুথে আছে সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী।
ভোটের লাইনে উজ্জ্বল পাণ্ডে (নীল জামা)। নিজস্ব চিত্র।
গত চার বছরে জঙ্গলমহলের পরিস্থিতি পাল্টেছে। নেতাই মামলায় অভিযুক্ত হয়ে সিবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অনুজ-ডালিমরা এলাকা ছাড়া। তা সত্ত্বেও এ বার ধরমপুর নিয়ে তৃণমূলের কেন এত চিন্তা?
এলাকাবাসীর একাংশের কথায়, খুন-সন্ত্রাসে অভিযুক্ত প্রাক্তন মাওবাদীরা বিধানসভা ভোটের পরে শাসকদলে নাম লিখিয়েছেন। তাঁরাই এখন এলাকার তৃণমূল নেতা। এই বিষয়টি অনেকেই ভাল চোখে নেননি বলে জানা গিয়েছে। মাওবাদী-কমিটির লোকজনের অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। আর এই ক্ষোভকেই কাজে লাগিয়ে ফের ফিরতে চাইছে সিপিএম। দলের তরফে প্রচার চালানো হচ্ছে‘জননেতা’ অনুজ পাণ্ডেকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। এই দাবিতে পোস্টার-ব্যানারও দেখা যাচ্ছে এলাকায়। সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুশান্ত কুণ্ডু বলেন, “ওই ক্ষোভের প্রতিফলনে ধরমপুরের সিংহভাগ আসন পাওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”
বৃহস্পতিবার, প্রথম দফার ভোটের দিন ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গিয়েছে, স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোটারদের লাইনে বেশ কয়েকজন সিপিএম সমর্থকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনুজবাবুর দুই সহোদর ভাই উজ্জ্বল পাণ্ডে ও মানস পাণ্ডে। খানিক আগেই অনুজবাবুর বৃদ্ধা মা কণকলতাদেবী ও তাঁর দুই পুত্রবধূ ভোট দিয়ে গিয়েছেন। ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাসতালুক ধরমপুর গ্রামের মহিলা সংরক্ষিত ৩ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থী অঞ্জনা মাহাতোর বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী সাবিত্রী মাহাতো। অঞ্জনাদেবীর খুড়ি-শাশুড়ি হন সাবিত্রীদেবী। আগামী ২২ জুলাই অঞ্জনাদেবীর বাড়ির বিয়েতে সাবিত্রীদেবীর পরিবারের নিমন্ত্রণ রয়েছে। রাজনৈতিক সম্প্রীতির এই আবহের মধ্যেও জেতার প্রশ্নে অস্বস্তি দুই প্রার্থীর মধ্যেই। দু’জনেই বলছেন, “সব আসনেই লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি।” আর সব দেখেশুনে তাই অনুজ পাণ্ডের পড়শি স্থানীয় তৃণমূল কর্মী বিমল াণ্ডের সতর্ক জবাব, “হিসেব বলছে, তৃণমূলই ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করবে। তবে এখন কিছু বলাটা বোধহয় ঠিক হবে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.