দু’কেজির ব্যাটে ধামাকা
‘সৌভাগ্য যে আমার ক্রিকেট বুদ্ধিটা ভালই’
ছ’বলে ১৫ রানজিততে গেলে এই কঠিন কাজটা করে দেখাতে হবে। ম্যাথেউজ, মালিঙ্গাদের ওভারের কোটা শেষ। বল হাতে নিলেন এরঙ্গা। ড্রেসিংরুমের দিকে নিজের ব্যাট দেখিয়ে ইশারা করলেন ধোনি, অন্য ব্যাট চাই। রায়াডু আর মুরলী বিজয় যতগুলো পারলেন ব্যাট নিয়ে মাঠের ভিতর দৌড়লেন। প্রত্যেকটা পরখ করে নিলেন ক্রিজে থাকা ভারত অধিনায়ক। ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে দেখে নিলেন, কোনটার ওজন কেমন। বেছে নিলেন বেশ ভারী একটা। তার পরেই ব্রায়ান লারার জন্মভূমিতে উঠল ধোনি-ঝড়।
এরঙ্গার প্রথম বল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। নাগাল পেলেন না অধিনায়ক। পরেরটা যে শুধু নাগাল পেলেন, তাই নয়, বোলারের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে দিলেন সোজা গ্যালারির ছাদে। এর পরেরটা গুড লেংথ। এক স্লাইসে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারি পার করিয়ে দিলেন ধোনি। বাকি তিন বলে পাঁচ রান করলেই জয়। ঝিমিয়ে পড়া ভারতীয় সমর্থকরা আর ধোনির দলের ড্রেসিংরুম তখন ফুটতে শুরু করেছে। চার নম্বর বলটাও আগেরটার মতোই। এ বার ব্যাটে-বলে হওয়ার স্পষ্ট আওয়াজ শোনা গেল। একস্ট্রা কভারের উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দিলেন ধোনি। বল যখন আকাশে, তখনই সেলিব্রেশন শুরু। উল্টো দিকে থাকা ইশান্ত শর্মা জড়িয়ে ধরলেন ক্যাপ্টেনকে। ড্রেসিংরুম থেকে ছুটে এলেন কোহলি, রায়না, ভুবনেশ্বর, মুরলী বিজয়রা। বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস। ধোনির না আস্ফালন, না লম্ফঝম্প। মুখে শুধু সেই চেনা হাসি। ধোনি তখনও ‘ক্যাপ্টেন কুল’।
ব্যাট বদলেই কামাল? জয়ের পর ধোনি বললেন, “ওটা দু’কেজির ব্যাট ছিল। বেশ ভারী। ওই সময়ে ওটাই দরকার ছিল।” নিজের ক্রিকেট-বুদ্ধির প্রশংসায় ধোনিই বললেন, “আমি সৌভাগ্যবান যে, আমার ক্রিকেট বুদ্ধিটা ভালই। শেষ ওভারে ১৫ রান উঠবে বলে মনে হয়েছিল। কারণ, শেষ ওভারে অভিজ্ঞ বোলারকে পাবে না শ্রীলঙ্কা, তা আগেই বোঝা যাচ্ছিল। তাই ম্যাথেউজ, মালিঙ্গাদের সামলে খেলাটাকে শেষ ওভার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়াই ভাল। বুদ্ধিটা কাজে লেগে গেল।” কিন্তু পুরোপুরি ফিট না হয়েও খেলতে গেলেন কেন? জবাবে ধোনি বললেন, “আগামী দু’মাস তো খেলা নেই, তাই। ঝুঁকিটা নিয়েই নিলাম। মাঝে মাঝে এমন ঝুঁকি না নিয়ে থাকা যায় না।” ইশান্তের ওই সময় দু’বার রান আউট হওয়ার উপক্রম নিয়ে বেশ মজা করে ক্যাপ্টেন কুল বলেন, “লম্বা ফাস্ট বোলারদের সমস্যা হল ওদের মস্তিষ্ক এত উঁচুতে হয় যে, কাজ হতে দেরি হয়।”
প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেটে তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেও কি সবচেয়ে সফল ‘ফিনিশার’ ধোনিই? দিলীপ বেঙ্গসরকর নির্দ্বিধায় সার্টিফিকেট দিচ্ছেন ধোনিকে। “এমন ফিনিশার আমি কখনও দেখিনি। কোনও পরিস্থিতিতেই ভেঙে পড়ে না। ছেলেগুলো কী অসাধারণ ফাইট-ব্যাক করল। জাস্ট গ্রেট,” বলেছেন বেঙ্গসরকর।

শ্রীলঙ্কা
তরঙ্গা ক ধোনি বো ভুবনেশ্বর ১১
জয়বর্ধনে ক অশ্বিন বো ভুবনেশ্বর ২২
সঙ্গকারা ক বিনয় বো অশ্বিন ৭১
তিরিমানে ক ভুবনেশ্বর বো ইশান্ত ৪৬
ম্যাথেউজ ক বিনয় বো ইশান্ত ১০
পেরেরা স্টা ধোনি বো অশ্বিন ২
চান্দিমল ক অশ্বিন বো জাডেজা ৫
হেরাথ স্টা ধোনি বো জাডেজা ৫
এরঙ্গা ন আ ৫
মালিঙ্গা ক ভুবনেশ্বর বো জাডেজা ০
লাকমল স্টা ধোনি বো জাডেজা ১
অতিরিক্ত ২৩
মোট ৪৮.৫ ওভারে ২০১
পতন: ২৭, ৪৯, ১৭১, ১৭৪, ১৭৬, ১৮৩, ১৯৩, ১৯৬, ১৯৬।
বোলিং: ভুবনেশ্বর ৮-৪-২৪-২, বিনয় ৬-১-১৫-০, ইশান্ত ৮-১-৪৫-২,
কোহলি ৩-০-১৭-০, রায়না ৬-০-২৫-০, অশ্বিন ১০-০-৪২-২, জাডেজা ৭.৫-১-২৩-৪।

ভারত
রোহিত বো হেরাথ ৫৮
ধবন ক সঙ্গকারা বো এরঙ্গা ১৬
কোহলি ক সঙ্গকারা বো এরঙ্গা ২
কার্তিক ক জয়বর্ধনে বো হেরাথ ২৩
রায়না ক সঙ্গকারা বো লাকমল ৩২
ধোনি ন আ ৪৫
জাডেজা এলবিডব্লিউ বো হেরাথ ৫
অশ্বিন এলবিডব্লিউ বো হেরাথ ০
ভুবনেশ্বর এলবিডব্লু বো মালিঙ্গা ০
বিনয় ক সেনানায়েকে বো ম্যাথেউজ ৫
ইশান্ত ন আ ২
অতিরিক্ত ১৫
মোট ৪৯.৪ ওভারে ৯ উইকেটে ২০৩
পতন: ২৩, ২৭, ৭৭, ১৩৯, ১৪৫, ১৫২, ১৫২, ১৬৭, ১৮২
বোলিং: এরঙ্গা ৯.৪-২-৫০-২, লাকমল ১০-১-৩৩-১, ম্যাথেউজ ১০-১-৩৮-১,
মালিঙ্গা ১০-১-৫৮-১, হেরাথ ১০-২-২০-৪।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.