|
|
|
|
ধোনিকে এর পরেও যে ভাগ্যবান বলে সে মূর্খ |
গৌতম ভট্টাচার্য • কলকাতা |
ক্রিকেট বিপণন জগতের মানুষরা নিয়ত বলে থাকেন, কোনও ভারতীয় ক্রিকেটার যদি শনি বা রোববার রাতে দেশকে জেতাতে পারে, তার এবং এজেন্টের সোনায় সোহাগা! ওই দুটো রাত্তিরে যে টিভির সামনে সবচেয়ে বেশি দর্শক বসে। দেশ জেতার মতো তোলপাড় করা কিছু ঘটলে তার রেশটাও আমজনতায় অনেক বেশি স্থায়ী থাকে। লোকে পরের দিন আলোচনা করতেই থাকে। সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার ব্র্যান্ড হিসেবে এক রাত্তিরে বহুতল বাড়ি থেকে স্কাইস্ক্র্যাপারে পৌঁছে যায়। এক লাফে গাছের মগডালে চড়ার মতন!
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যখন শুক্রবার ভোররাতে পোর্ট অব স্পেন মাঠে ভারতকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিচ্ছিলেন, তখন ক্রিকেট দর্শক সংখ্যার পাঁচ শতাংশও টিভি দেখছিলেন কি না ঘোরতর সন্দেহ। সেটা যদি পাঁচ না হয়ে সাত বা দশও হয়, শেষ ওভারে যে আরও কমে গেছিল কোনও সমীক্ষা না করেই বলে ফেলা যায়। ভারত আসলে তখন শেষ চুল্লি থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে। টিভি ক্যামেরা ক্রমাগত প্যান করছে কোহলি-রায়না-জাডেজাদের মুখে। তাঁদের মুখের অবস্থাটাই লাইভ ম্যাচ রিপোর্ট। জয় থেকে ১৫ রান দূরে। আর সেটা কিনা করতে হবে শেষ ওভারে। এমন দুঃসহ পরিস্থিতি, ১৫ মানে বুঝতে হবে ১৫০। শেষ সঙ্গী ইশান্ত শর্মা বলে ওটা ১৫০-এর বদলে ২০০। যুধিষ্ঠিরের শেষ যাত্রার সঙ্গী কুকুরটা যত বিশ্বস্ত ছিল, এঁকে ঠিক ততটাই অবিশ্বস্ত দেখাচ্ছে। কখন আউট হবে স্রেফ তার অপেক্ষা। |
|
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে কোন টুর্নামেন্ট জিতে ভারত অবিশ্বাস্য দ্বিমুকুটবিজয়ী হয়ে ফিরছে তা মনে হয় পঞ্চায়েতের ফল বেরোনোর আগেই লোকে ভুলে যাবে। এ রকম ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট গণ্ডায় গণ্ডায় হয়। দ্রুতই ক্রিকেটপ্রেমীর মনের মুদির দোকানে চলে যায়। অথচ উল্টো দিকে ইশান্তকে সঙ্গে নিয়ে ধোনির ইনিংসটা মুদির দোকান নয়, ক্রিকেট জাদুঘরে চলে গেল। রাতের ইউ-টিউব দেখাচ্ছে সদ্য পোস্ট করা শেষ ওভারের ভিডিওতে হিট হয়েছে মাত্র ৩১৫। আগামী কয়েক মাসে ওটা তিন লাখে না পৌঁছলেই আশ্চর্য হওয়ার আছে। ভারতীয় ওয়ান ডে ক্রিকেটের হল অব ফেমে অবশ্যই পোর্ট অব স্পেন ইনিংসটা থাকবে। সর্বকালের সেরা দশের একটা হয়ে।
ঐতিহাসিক ভাবে ওয়ান ডে-তে রান তাড়া করে জেতানোর ব্যাপারে ধোনির সমতুল্য কেউ নন। সচিন-সৌরভ-কপিল কেউ না। ব্র্যাডম্যানোচিত রেকর্ড যে ভারত অধিনায়কের! তাঁর নিজের খেলা ৭২ সফল ওয়ান ডে রান চেজ-এর মধ্যে ধোনি খেলেছেন ৫৪ ইনিংস। তাতে নট আউট ৩৩। গড় অবিশ্বাস্য ১০০.০৯। ওয়ান ডে ফাইনালে ধোনি বলতেই লোকে দ্রুত খুঁজে পায় ওয়াংখেড়ের দোসরা এপ্রিলের রাত। পোর্ট অব স্পেনে উইনিং হিটটা মেরে উচ্ছ্বাস ইঙ্গিত দিল, তাঁর মনে যেন এই ইনিংসটা বিশ্বকাপেরও আগে!
ওয়াংখেড়েতে পেছন ফিরে নির্বিকার ভাবে স্টাম্পটা কুড়িয়েছিলেন। এখানে শুরুতেই স্টাম্পটা খপ করে তুলে নিলেন। ভাবভঙ্গি দেখে মনে হল শেষ ওভারে বদলানো ব্যাটটা যদি বা ওয়াংখেড়ের ব্যাটের মতোই নিলামে যায়, স্টাম্পের নিশ্চিত ঠিকানা ঝাড়খণ্ড।
ধোনির মতোই রান তাড়া করে জেতানো এবং চাপে মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যাপারে যাঁর টেস্ট-ম্যাচ সুখ্যাতি আর ধারাবাহিকতা কাছাকাছি মাপের, সেই ভিভিএস লক্ষ্মণকে এ দিন ধরা গেল হায়দরাবাদে। লক্ষ্মণ জানালেন শেষ ওভারটা দেখেননি। কিন্তু বিলক্ষণ আন্দাজ করতে পারছেন ধোনি তখন কী ভাবছিলেন। “এমএস-কে দেখে দেখে এমন অভ্যেস, আমি এখন অবিকল বলে দিতে পারি ও কী ভাবছিল। আর সবাই হলে পরিস্থিতির চাপে থরহরি কম্পমান হত। আমার চেনা অনেক বড় প্লেয়ারও। এমএস-এর অনন্য ব্যাপার হল ও সমস্যার মধ্যে সমস্যার কথা ভাবে না। ও সমস্যায় পড়ে প্রতিনিয়ত সমাধান খোঁজে। উল্টো দিকে যখন ধড়াধ্ধড় উইকেট পড়ছে, তখন ও অবধারিত ভাবছিল এখন রানের জন্য ঝুঁকি নেওয়া নেই। আক্রমণ করব পরে, শেষ ওভারে গিয়ে। এই কখন আক্রমণ করব সেই সিদ্ধান্তটা বারবার ঠিক নিতে পারাটাই হল এম এস ধোনি!” ধোনিই তাঁর দেখা সেরা ভারত অধিনায়ক কি না, বিতর্কে যেতে রাজি নন ভিভিএস। আজকের দিনেও না। |
শাসক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি |
শাসিত সামিন্দা এরঙ্গা |
|
|
|
কিন্তু তাঁর মনে হয়, ক্রিকেটকে স্রেফ ভালবেসে খেলার এই অদ্ভুত ক্ষমতা আর কোনও সহ খেলোয়াড়ের মধ্যে দেখেননি। “এমএস-এর স্টাইলটা হল আমরা সবাই যেমন হারের মধ্যে চাপ, হেরে যাওয়ার গ্লানি, কেরিয়ার আর হাজারো সব নেগেটিভ চিন্তা করি, ও সেই সময় জিতের উল্টো দিকে হার থাকবে এ রকম একটা সহজ ভঙ্গিতে ব্যাপারটাকে নিতে পারে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় যখন আমরা ক্রমাগত হারছিলাম, ওই রকম কঠিন সময়ে তখনও ওকে দেখেছি ক্রিকেটটাকে কেরিয়ার হিসেবে না দেখে স্পোর্ট হিসেবে দেখছে। ক্ষমতাটা অসাধারণ।”
একই সঙ্গে সৌরভ-কপিলের মতো হায়দরাবাদিও মেনে নিচ্ছেন ভারত অধিনায়কের তৃতীয় দক্ষতার কথাটা। যখন-তখন মাঠ পার করে দেওয়ার ক্ষমতা। “এই ক্ষমতাটা ধোনিকে আরও কনফিডেন্স দেয়,” বললেন লক্ষ্মণ। কিন্তু ত্রিমাত্রিক দক্ষতার পরেও আরও একটা কাজ বাকি থেকে যায়। প্রাণান্তকর চাপের মধ্যে পারফেকশনটা ঠিক রাখা। পোর্ট অব স্পেনে যখন শেষ ওভার করতে আসছেন সামিন্দা এরাঙ্গা, তখন ভাষ্যকাররা অবধি টেনশনে অস্থির। বলছেন বিশ্বক্রিকেটে ধোনি এক নম্বর ফিনিশার ঠিকই। কিন্তু এই উইকেট বড় বিপজ্জনক। দেখাও গিয়েছে বিপজ্জনক। রোহিত শর্মার বলটা যেমন অপ্রতিরোধ্য গড়িয়ে গিয়েছে। অশ্বিনের ডেলিভারিটা যেমন ঘুরেছে। তাতে আর যা-ই হোক, ওয়াংখেড়ের উদ্ধত মারের খেলা চলবে না।
এই অবস্থায় এরাঙ্গার প্রথম বলে ধোনি উদ্দাম ব্যাট চালালেন। লাগল না। কমে গেল একটা বল। পাঁচ বলে করতে হবে ১৫। উল্টো দিকে কোনও ভরসা নেই কারণ তিনি ইশান্ত শর্মা। তার আগেই রান না হওয়া বলে ছুটে দু’বার ভারতীয় সমর্থকের বাইপাস সার্জারির ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। এই অবস্থায় ধোনি দ্বিতীয় বলটায় যে ছক্কা মারলেন, সেটা ক্রিস গেইলসদৃশ হয়ে উল্টো দিকের কংক্রিটে গিয়ে লাগল। থাকল বাকি ৯। পরের বল পয়েন্টের ওপর দিয়ে চার। তার পরের ডেলিভারি ক্রিকেটের কঠিনতম স্ট্রোক। এক্সট্রা কভারের ওপর দিয়ে ছক্কা। রাখে ধোনি মারে কে। সেটাই সম্ভব করে ফেললেন। অত রাত্তিরে এমনিতেই বুজে আসা চোখের সামনে যেন ভারতীয় সমর্থকরা রূপকথাসদৃশ ইনিংস দেখে ফেললেন। শুধু সমর্থক বারবার বলছি কেন। ক্রিকেটাররাও তো রুদ্ধশ্বাস হ্যাংওভারে আক্রান্ত। আশির দশকে ভারতীয় দলের এক ডাকসাইটে ক্রিকেটার এ দিন ফোনে বললেন, “আমাদের টিমে ধোনি থাকলে শারজায় এত ম্যাচ পাকিস্তান জিতত না!” ক্রিকেটজগতের বাইরেও অবিমিশ্র হ্যাংওভার। ডাক্তার-অভিনেতা-আইনজীবী সমাজের বিভিন্ন অংশ ধোনির ভোররাতের আরও একটা নিখুঁত অপারেশন দেখে স্তম্ভিত। গত সেপ্টেম্বরে কলম্বোর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে মধ্য জুলাইতে ক্রিকেট মরসুম শেষ করা ধোনি এ বার তিনটে এমন ইনিংস খেলেছেন যার ব্যাটে রিবক স্টিকার নেই। আছে অদৃশ্য এমএসডি। চেন্নাই টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ডাবল সেঞ্চুরি। চেন্নাইয়েই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সেঞ্চুরি। আর শুক্রবারের পোর্ট অব স্পেন। তৃতীয়টাই বোধহয় তাঁর সর্বোত্তম জাদুকরি হিসেবে থেকে গেল। আর বোধহয় ফের দাবি তোলাল, এই লোকটার ব্রেন ম্যাপিং হওয়া দরকার। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য জানা দরকার কোনও পেশাদার কঠিনতম পরিস্থিতিতে কী করে এত সহজ থেকে তার স্কিলটা অক্ষত রাখে! |
এমএস-এর স্টাইলটা হল আমরা সবাই যেমন হারের মধ্যে চাপ, হেরে যাওয়ার গ্লানি, কেরিয়ার আর হাজারো সব নেগেটিভ চিন্তা করি, ও সেই সময় জিতের উল্টো দিকে হার থাকবে এ রকম একটা সহজ ভঙ্গিতে ব্যাপারটাকে নিতে পারে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় যখন আমরা ক্রমাগত হারছিলাম, ওই রকম কঠিন সময়ে তখনও ওকে দেখেছি ক্রিকেটটাকে কেরিয়ার হিসেবে না দেখে স্পোর্ট হিসেবে দেখছে। ক্ষমতাটা অসাধারণ।
ভি ভি এস লক্ষ্মণ |
|
ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা পরের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হল, চিরভাগ্যবান ধোনি অবশেষে পারফর্মার ধোনিতে উত্তীর্ণ। তাঁর সম্পর্কে চিরসন্দিগ্ধরাও এ বার মেনে নিচ্ছেন নাহ, স্কিলটা আছে বলেই না ভাগ্যটা আছে। ধোনির নিজের কি এ সব আলোচনায় কোনও আগ্রহ আছে? দশ জনে সাড়ে ন’জন ফলাও করে ইন্টারভিউ-টিন্টারভিউ দিত। ধোনি একটা একশো চল্লিশ অক্ষরের টুইট করেছেন, ‘এখন ডিএনডি। বিশ্রামে চললাম।’ তাঁকে তাই জিজ্ঞেস করার উপায় থাকল না, কোনটা বেশি আনন্দ দিল? পেশাদার যুদ্ধ জেতা? না পুরনো ব্যক্তিগত ক্ষতচিহ্নকে হারানো? পোর্ট অব স্পেন সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র মাঠ যেখানে ড্রেসিংরুমের বাইরে অনেকটা জায়গা। শুধুই প্লেয়ারদের জন্য। প্লেয়াররা ওখানেই বসে খেলা দেখে। আর টিভি ক্যামেরায় তাই সর্বক্ষণ মোটামুটি গোটা টিম পাওয়া যায়। চিন্তাক্লিষ্ট কোহলিদের দেখে মনে পড়ে যাচ্ছিল ছ’বছর আগে ভারতীয় ক্রিকেটের এক কলঙ্কিত বিকেল। ২৩ মার্চ, ২০০৭। প্লেয়ার্স গ্যালারিতে সে দিন টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে ছিলেন কোহলিদের পূর্বপুরুষরা। যন্ত্রণায় বাকশূন্য, কাতর, চোখে প্রায় জল এসে যাওয়া সচিন-রাহুল-সহবাগ। আর তাঁদের কিছু দূরে এই ধোনি। সে দিনের আর গতকালের টিমে একমাত্র তিনিই কমন। আরও একটা জিনিস কমন প্রতিপক্ষ। এই শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেই সে দিন ভারত বিশ্বকাপের বাইরে চলে গেছিল। সচিন করেছিলেন শূন্য। ধোনি তিনি ১ বলে ০। মুরলীর বলে এলবিডব্লিউ। পরের দিনই রাঁচিতে তাঁর বাড়ি আক্রান্ত হয়। এতই দীর্ঘস্থায়ী ছিল দেশে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভের রেশ যে, ঝাড়খণ্ড না ফিরে কলকাতার হোটেলে ছিলেন ক’দিন। সন্ধে হলে গাড়ির কাচ তুলে ভিক্টোরিয়ার কাছে ঘুরতেন। লক্ষ্মণ যে ধোনিকে দেখেছেন তিনি হার-জিতে অবিচলিত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ যে ধোনিকে দেখেছিল, তিনি সবে এক বছর দলে আসা। টিমকে ওই রকম ডুবিয়ে রীতিমতো মুষড়ে পড়েছিলেন। |
|
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি
বিদায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফিরছি ভাল স্মৃতি নিয়ে। ‘ডিএনডি’ (ডু নট ডিস্টার্ব) কারণ এখন ছুটি কাটানোর সময়। খুব দরকার ছিল এই ছুটিটার। |
শিখর ধবন
ক্রিকেটের দুটো দারুণ মাস গেল। ফিরছি দুটো ট্রফি নিয়ে। ভালবাসা আর সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। |
রবীন্দ্র জাডেজা
দুর্দান্ত জয় পেলাম গতকাল। বাড়ি উড়ে যাচ্ছি দুটো ট্রফি নিয়ে...আমরা চ্যাম্পিয়ন। জয় হিন্দ। |
সুরেশ রায়না
দুর্দান্ত জয়! আবার নায়কের মতো ইনিংস এমএস ধোনির। |
ভুবনেশ্বর কুমার
খুব খুশি ম্যান অব দ্য সিরিজ পুরস্কার পাওয়ার জন্য। দুটো ভাল মাস গেল। বাড়ি ফিরছি দুটো ট্রফি নিয়ে। দলগত ভাবে আমরা দারুণ খেলেছি। |
|
ভারত ত্রিনিদাদ থেকেই বিশ্বকাপের বাইরে চলে যায়। তাঁর ব্যাগে যে বারোশো জামাইকান ডলার রাখা ছিল, পরিচিত কলকাতার সাংবাদিককে ডেকে ধোনি বলেছিলেন, রেখে দিন। আমার তো আর কোনও কাজে আসবে না। সাংবাদিকটি বলেছিলেন, আরে আপনি রাখুন। আবার তো এ দেশে আসবেন। ধোনি ঘাড় নেড়েছিলেন, আর মনে হয় না আমার এ দেশে আসা হবে বলে।
২০১৩-র ১১ জুলাই ধোনি শুধু ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অমর সৃষ্টিই করে গেলেন না। তাঁর ব্যক্তিগত একটা হিসেব চুকোনোর বিকেলও যে বাকি ছিল পোর্ট অব স্পেনের সঙ্গে। ট্রফি হাতে তোলা, ব্র্যান্ড জোরালো হওয়া, ব্র্যাডম্যানোচিত গড় রক্ষা সে সব তো তুচ্ছ।
ছ’বছর আগের এক মহাযন্ত্রণাকে যে তিনি শেষ পর্যন্ত হারালেন। নাই বা তুলল কেউ সেটা রেকর্ডবইতে।
|
ভারতীয় সময়: রাত তিনটে
ফাইনালের শেষ ওভার
ভারতের দরকার: ১৫ রান
শ্রীলঙ্কার দরকার: ১ উইকেট
ওভার শুরুর আগে ব্যাট বদলালেন ধোনি। |
এরঙ্গার প্রথম বল: অফ স্টাম্পের বাইরে। উদ্দাম ব্যাট চালিয়ে নাগাল পেলেন না ধোনি। ০ রান।
দ্বিতীয় বল: বোলারের মাথার উপর দিয়ে উড়িয়ে দিলেন সোজা গ্যালারির ছাদে। ৬ রান।
তৃতীয় বল: গুড লেংথ। স্লাইস শটে পয়েন্ট বাউন্ডারি পার। ৪ রান।
চতুর্থ বল: আগেরটার মতোই। একস্ট্রা কভারের ওপর দিয়ে মাঠের বাইরে। রান ৬। |
চার বলে ১৬ রান |
|
জয়-ধোনি
(জুলাই ২০১২ থেকে) |
টিম ধোনি
টেস্ট ১০, জয় ৭, হার ২, ড্র ১, সাফল্য ৭০%
ওয়ান ডে ২৩, জয় ১৬, হার ৭, সাফল্য ৬৯.৫%
টি-টোয়েন্টি ১১, জয় ৭, হার ৪, সাফল্য ৬৩.৬% |
অধিনায়ক ধোনি
টেস্ট ১০, রান ৭০০, গড় ৫৮.৩৩ ওয়ান ডে ২০, রান ৫৮৫, গড় ৪৮.৭৫
টি-টোয়েন্টি ১১, রান ১৯৯, গড় ৩৯.৮০ |
|
|
|
|
|
|
|