শহর জুড়ে চলা অটো, শাট্ল কিংবা স্কুলগাড়ির উপর নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের।
এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সল্টলেকও তার ব্যতিক্রম নয়। শুক্রবার সল্টলেক পুরসভার সামনে ছাত্র সমেত একটি স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে ফের সেই অভিযোগ সামনে এসেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে গেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পারেননি গাড়িচালক। গাড়িটি যে স্কুলগাড়ি হিসেবে চালানো হচ্ছে তারও কোনও বৈধ অনুমতি দেখাতে পারেননি। ফলে পথচারীদের সঙ্গে গাড়িমালিকেরাও প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
সমস্যার কথা স্বীকার করে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের আশ্বাস, বেআইনি কাজ বরদাস্ত করা হবে না। পরিবহণ দফতর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেবে।
পুলিশ জানায়, এ দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার কিছু আগে একটি স্কুলগাড়ি বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্কুলের ছাত্রদের বাড়ি পৌঁছনোর পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সামান্য আহত হয়েছে এক ছাত্র। আটক করা হয়েছে হারান মণ্ডল নামে ওই গাড়িচালককে। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক পথচারী জানান, পুরসভার সামনের রাস্তায় একটি গাড়ির পিছনেই যাচ্ছিল স্কুলগাড়িটি। সামনের গাড়িটি আচমকা পুরসভার গেটের দিকে ঘুরতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। স্কুলগাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তখন ধাক্কা মারে সামনের গাড়িটিকে। তুবড়ে যায় স্কুলগাড়ির সামনের দিক। গাড়ির ভিতরের ছাত্রদের একাংশের কথায়, আচমকা একটা আওয়াজের পরে গাড়ির মধ্যেই তারা একে অন্যের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে। |
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকে একাধিক স্কুল-কলেজ হয়েছে, বেড়েছে অফিস, শপিং মল, রেস্তোরাঁর সংখ্যা। ফলে রোজ লক্ষাধিক মানুষ এখানে যাতায়াত করেন। পাল্লা দিয়ে অটো, শাট্ল বা স্কুলগাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। অথচ এগুলির কোনও বৈধ অনুমতি রয়েছে কি না, তা নিয়ে হুঁশ নেই প্রশাসনের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, চার হাজারেরও বেশি অটো চলাচল করে, অথচ সকলের বৈধ অনুমতি নেই। তেমন করেই স্কুলগাড়ি-সহ বাণিজ্যিক ভাবে অন্যান্য গাড়ির ক্ষেত্রেও অভিযোগ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল পরিবহণ দফতর। অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “অভিযোগ রয়েছে। আমরা বার বার বলছি, নবীকরণের জন্য। ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করেছি। সল্টলেক বিচ্ছিন্ন নয়, সেখানেও অভিযান করা হবে।”
পুলকার অ্যাসোসিয়েশন কিন্তু অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধেই। ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক আবির রায় বলেন, “পারমিট না দেওয়া হলে স্কুলগাড়ি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। অথচ পরিবহণমন্ত্রীর চেষ্টা সত্ত্বেও একমাত্র আলিপুর ছাড়া অন্যান্য আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর থেকে পারমিট দেওয়া বন্ধ রয়েছে। পারমিট চেয়ে বাম জমানা থেকে দেড় হাজারের বেশি আবেদনপত্র জমা পড়লেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” যদিও পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের পরে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |