পুজোর মরসুমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের পশ্চিমবঙ্গে আনতে আসরে নেমেছে রাজ্য পর্যটন দফতর। গুজরাত থেকে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশ কিংবা অন্ধ্রপ্রদেশে প্রচার চালানো হচ্ছে দফতরের তরফে। আগামী অগস্ট অবধি চলবে এই প্রচার। মূলত পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম পুজোর জন্য ১৭টি প্যাকেজ সামনে রেখে রোড শো করছে। গত ৬-৭ জুলাই হায়দরাবাদে হয়েছে রোড শো। সেখানে পর্যটন ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক, বিমান সংস্থা এবং সাধারণ পর্যটকদের ডেকে তুলে ধরা হচ্ছে ‘ডেস্টিনেশন ওয়েস্টবেঙ্গল’কে। সহযোগিতায় রয়েছে ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি।
পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ভীষ্মদেব দাশগুপ্ত বলেন, “এই প্রথমবার পাহাড় ও ডুয়ার্সকে পুজো প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দেশব্যাপী প্রচারও শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য রাজ্যের পাশাপাশি রাজ্যেও প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, মহালয়া থেকে দশমী অবধি প্যাকেজ থাকবে। সনাতনী পুজো, রাঢ়বঙ্গের পুজো, গ্রামীণ পুজো ছাড়াও প্যাকেজে মহালয়া, বিসর্জন, গঙ্গাবক্ষে ভ্রমণের মতো বিষয় থাকছে। ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের পাশাপাশি রাজ্যের বাসিন্দাদের কাছে বিষয়টি আকর্ষণীয় করতে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় হোর্ডিং, ফ্লেক্স লাগানো হবে।
|
পর্যটকদের স্বাগত জানাতে তৈরি হচ্ছে গরুমারা।—ফাইল চিত্র। |
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, প্রতি বছরই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা বা সনাতনী পুজো দেখার ব্যবস্থা করে পর্যটন দফতর। গাইড, বাস-গাড়ির ব্যবস্থা এবং আহার, এই তিনটি বিষয় রেখেই তৈরি করা হয় প্যাকেজগুলি। কলকাতার পাশাপাশি শহরতলির বাসিন্দাদের কাছেও এই প্যাকেজগুলি জনপ্রিয়। তবে গত মে মাসে পুজোর প্যাকেজ নিয়ে দফতরের বৈঠকে ঠিক হয়, চিরাচরিত প্যাকেজকে বাদ দিয়ে এ বার তৈরি করা হবে নতুন আকর্ষণীয় প্যাকেজ। যেগুলির খরচও সাধারণের নাগালের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করছে নিগম। ৪ অক্টোবর, মহালয়ার দিন থেকে প্যাকেজগুলি শুরু হচ্ছে। চলবে একেবারে বিজয়া দশমী, অর্থাৎ ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত।
দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, মহালয়ায় গঙ্গাবক্ষে তর্পণ, কুমারটুলির প্রতিমা, বেলুড়মঠ, দক্ষিণেশ্বর ঘোরার ব্যবস্থা থাকছে। তেমনই, পঞ্চমী ও ষষ্ঠীতে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা পুজো মণ্ডপগুলি ঘুরিয়ে দেখানো হবে। একই ব্যবস্থা পুজোর তিনদিনও থাকবে। সনাতনী প্যাকেজে শোভাবাজার রাজবাড়ি, ছাতুবাবু-লাটুবাবুর বাড়ি, চন্দ্রাবাড়ি, রানী রাসমণি-র বাড়ির মতো বাড়িতে ঘোরানো হবে। মহানগরের বাইরে গ্রামীণ পুজোয় হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, শান্তিনিকেতন বা বীরভূম সফর রয়েছে। এ ছাড়াও বাবুঘাটে প্রমোদ তরণীতে ঘোরার ব্যবস্থা রয়েছে। মাথা পিছু খরচ ৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে। একমাত্র মুর্শিদাবাদ প্যাকেজটি হবে দু’দিনের। খরচ পড়বে ৩ হাজার টাকার মতো।
দফতরের ‘প্রিমিয়াম প্যাকেজ’ হিসেবে রাখা হয়েছে ৭ দিন ৬ রাতের পাহাড় ও ডুয়ার্স ভ্রমণ। মহালয়ার দিন শুরু হওয়া এই প্যাকেজে গরুমারা, বিন্দু, ঝালং, কালিম্পং, দার্জিলিং ঘোরার ব্যবস্থা ছাড়াও কলকাতার পুজো এবং কেনাকাটা করার সুযোগ মিলবে। ট্রেন ভাড়া-সহ মাথা পিছু খরচ রাখা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। একই ভাবে তৈরি হয়েছে সুন্দরবন, বিষ্ণুপুরের প্যাকেজ। প্যাকেজ প্রচারের অঙ্গ হিসাবে ২০-২১ জুলাই চেন্নাই, ২৭-২৮ জুলাই আহমদাবাদ, ৩-৪ অগস্ট মুম্বই, ১০-১১ অগস্ট বেঙ্গালুরু এবং ১৭-১৮ অগস্ট লখনউতে রোড শো করার কথা পর্যটন দফতরের। |