সিপিএমের চেনা দুর্গে জিততে মরিয়া তৃণমূল
ড়াইটা হচ্ছে। অনেক জায়গাতেই শাসকদল যেমন ‘ওয়াকওভার’ পেয়ে গিয়েছে, মন্তেশ্বর সেই তালিকায় পড়ে না। গোটা ব্লকে ঘাসফুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উড়ছে লালঝান্ডা। ১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১৭৩টি, পঞ্চায়েত সমিতির ২৬টি ও তিনটি জেলা পরিষদ আসনের সব ক’টিতেই প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট।
শুধু কি তাই? প্রাক্তন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষদের মধ্যে মাত্র যে দু’জনকে সিপিএম ফের প্রার্থী করেছে তাঁদেরই এক জন, অভিজ্ঞ অশেষ কোঙার দাঁড়িয়েছেন মন্তেশ্বরের ১৬ নম্বর আসনে। মুখোমুখি তৃণমূলের নারায়ণ হাজরা চৌধুরী, যাঁর এর আগে দু’বার বিধানসভা আসনে হারার রেকর্ড আছে। অশেষবাবু তাই আপাত নিশ্চিন্ত মুখে ঘুরছেন। তবে ব্লকের ৬৫টি বুথে ইতিমধ্যে প্রচার সেরে ফেলেছে দুই পক্ষই।
নারায়ণ হাজরা চৌধুরী। অশেষ কোঙার।
এই যুদ্ধে নারায়ণবাবু মূল সহায় মনের জোর। ২০০১ ও ২০০৬ সালে তিনি মন্তেশ্বর বিধানসভায় তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়িয়ে হেরেছিলেন। ২০১১ সালে দল আর তাঁকে ভরসা করে দাঁড় করাতে পারেনি। তাঁর বদলে প্রার্থী হন সিপিএম ছেড়ে আসা আবু আয়েশ মণ্ডল। তাতে অবশ্য ফল পাল্টায়নি। সিপিএমই জেতে। হারের পর হারে ভেঙে পড়ে বর্ধমানের বাড়িতে বসে না থেকে নারায়ণবাবু ওরফে ‘নারান’ যে এখনও দৌড়ে চলেছেন, তারই পুরস্কারস্বরূপ এ বার তাঁকে নিয়ে ফের বাজি ধরেছে দল।
মধ্যমগ্রাম, জামনা, পিপলন আর ভাগড়া-মূলগ্রাম এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত চষে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে নারায়ণবাবু বলছেন, “উনি চার বার পঞ্চায়েত সমিতিতে, এক বার জেলা পরিষদে নির্বাচিত হয়েছেন। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। নিজের স্ত্রীকে স্কুলে চাকরি করে দেওয়া ছাড়া কিন্তু আর একটা কাজও করেননি।”
শুনে হাসছেন অশেষবাবু। পোড় খাওয়া রাজনীতিকের খোলসের থেকে মুখ বাড়িয়েই বলছেন, “আমার স্ত্রী ১৭ বছর আগে চাকরি পেয়েছেন। উনি ইংরিজি অনার্স, বিএড। প্রায় সব কিছুতেই প্রথম বিভাগ ছিল। এমন মানুষ কি বসে থাকবে?” প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে তাঁর সাফ কথা, “উনি তো বহিরাগত। তাই উন্নয়ন না হওয়ার কিছু কল্পিত কথা বলছেন।” এলাকায় অনেকে জানে, নারায়ণবাবু সর্বক্ষণের রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু অশেষবাবু পাল্টা বলেন, “উনি তো আসলে ঠিকেদারি করেন। কে না জানে?”
নারায়ণবাবুর দ্বিতীয় হার্ডল দলের মধ্যেই প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অজয় রায়ের অনুগামীদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া। যদিও তিনি জোর গলায় বলে চলেছেন, “চার-পাঁচ হাজার ভোটে জিতবই।” তাঁর দাবি, ওই আসনে ষাট হাজারের বেশি ভোটারের অর্ধেকই সংখ্যালঘু এবং তাঁরা এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন।
অশেষবাবুর সম্পর্কে নিন্দুকেরা বলে, কাজের চেয়ে গানবাজনার দিকে ঝোঁক বেশি তাঁর। তিনি পাল্টা বলেন, “গত আড়াই বছর তো আমাদের জেলা পরিষদকে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে। কাজ হবে কী করে?” তাঁর দাবি, ভোট দিতে পারলে মানুষই এর জবাব দেবে। কিন্তু পারবে কি?
বস্তুত গোটা মন্তেশ্বর জুড়েই এই প্রশ্ন ঘুরছে। ১৫ জুলাই ক’টা বুথ জ্যাম হবে? কতগুলো বুথে ছাপ্পা পড়বে আকছার? নারায়ণবাবু কিন্তু বলছেন, “আমরা কেউই টুকে পাশ করতে চাই না। ভোট শান্তিতেই হবে।”

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.