সন্ত্রাসের অভিযোগের তদন্ত শুরু কমিশনারেটের |
নিজস্ব সংবাদদাতা, দুর্গাপুর |
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে দুর্গাপুরের জেমুয়া এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমের তোলা অভিযোগের তদন্ত শুরু করল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট।
নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই দুর্গাপুরের জেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে এই অভিযোগে সিপিএমের তরফে একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। শুক্রবার সেই অভিযোগের কিনারা করতে সেখানকার ৭ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং দুই পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীকে নিজের অফিসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) এস সিলভা মুরুগান। অবাধ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সিপিএমের অভিযোগ, ভোটের আগে বার বার দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপরে চড়াও হয়েছে তৃণমূল। অভিযুক্তদের নাম ধরে অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। দলের বিধাননগর-জেমুয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “কিন্তু নিউ টাউনশিপ থানা পুলিশের উচ্চস্তরে যে রিপোর্ট পাঠায় সেখানে বলা হয়, নির্দিষ্ট ভাবে অভিযুক্তদের নাম না থাকায় পুলিশ কারওর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি।” এরপরেই ৭ জুন ৭ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী এবং দুই পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী বিষয়টি জানিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে ওই থানার ওসি’র অপসারণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার ওই প্রার্থীদের বাড়িতে চিঠি পাঠায় পুলিশ। প্রার্থীরা যে ‘পিটিশন’ জমা দিয়েছেন, সে ব্যাপারে তাঁদের এসিপি (পূর্ব) দফতরে শুক্রবার সকালে হাজির হতে বলা হয়।
পুলিশ জানায়, জেমুয়া গ্রামের ৪ জন এবং পরাণগঞ্জের এক পঞ্চায়েত প্রার্থী তাদের জানান, প্রকাশ্যে মদের ঠেক বসছে। বহিরাগতেরা এসে ভয় দেখাচ্ছে। কালিগঞ্জ, টেটিখোলার পঞ্চায়েত প্রার্থী মঞ্জু সূত্রধর, মনিভূষণ সূত্রধর এবং শংকরপুরের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী ধর্মপদ ঘোষ জানান, বেশ কয়েকদিন ঘরছাড়া থাকার পর ফিরেও শান্তি নেই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে হুমকি চলছেই। এসিপি (পূর্ব) জানান, মদের ঠেক ভাঙা-সহ এলাকার নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবাধ নির্বাচনের জন যা করার করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এ দিনের ঘটনায় খুশি সিপিএম। পঙ্কজবাবু বলেন, “নিউ টাউন শিপ থানার ওসি নির্লজ্জ ভাবে পক্ষপাতিত্ব করছেন। তাই নির্দিষ্ট ভাবে অভিযুক্তের নাম অভিযোগপত্রে দেওয়ার পরেও তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো রিপোর্টে জানিয়েছেন, অভিযুক্তের নাম না পাওয়ায় তিনি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। আশা করি এবার পরিস্থিতি বদলাবে।” তৃণমূল অবশ্য পুলিশের সাহায্য নেওয়ার কথা মানতে চায়নি। দলের দুর্গাপুরের ৩ নম্বর ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে হার নিশ্চিত জেনে সহানুভূতি আদায়ের জন্য ভুড়ি ভুড়ি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করছে সিপিএম। আমরা নির্বাচনে লড়ছি শুধু মানুষের ভরসায়। অন্য কারওর সহযোগিতা প্রার্থনা করার দরকার পড়বে না।” |