রাজ পরিবারের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের রথযাত্রা উৎসবের বাজেট বাড়াল কোচবিহার দেবত্তোর ট্রাস্ট। গত বছর রথযাত্রা উৎসবের বাজেট ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। মূল্যবৃদ্ধির জেরে ওই বাজেট ৪০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
রথযাত্রা উৎসব আকর্ষণীয় করে তোলার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এর পাশাপাশি, ইসকন অনুমোদিত হরেকৃষ্ণ নামহট্ট সংঘের উদ্যোগে জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা আয়োজনেরও প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে রথযাত্রা ঘিরে এ বছর বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক তথা দেবত্তোর ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য বিকাশ সাহা বলেন, “মদনমোহন দেবের রথযাত্রা ঘিরে আয়োজনে খামতি রাখতে চাইছি না। সে কথা মাথায় রেখে বাজেট বাড়ানো হয়।” ইসকনের তরফে উত্তরবঙ্গের প্রচারকের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্বজিৎ দাস ব্রক্ষচারী বলেন, “এবারই কোচবিহারে প্রথম রথযাত্রার আয়োজন হয়েছে। নজরকাড়া আয়োজন করা হচ্ছে।” |
দেবত্তোর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ জুলাই রাজপরিবারের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের বিগ্রহ রথে শহর পরিক্রমার পর গুঞ্জবাড়ির ডাংগোরাই মন্দিরে পৌঁছবে। উল্টো রথের দিন ফের বিগ্রহ মূল মন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে বলে। রথযাত্রা উপলক্ষে রথ সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে শহর জুড়ে। ডাংগোরাই মন্দির রঙের কাজ অনেকটাই সারা। রাজ পরিবারের দুয়ারবক্সি অমিয় দেববক্সি প্রথম রথের দড়ি টেনে যাত্রা সূচনা করবেন। ট্রাস্ট বোর্ডের কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “মদনমোহন মন্দিরের বিগ্রহ ছাড়াও প্রথা মেনে ওই রথে ডাংগোরাই ও রাজমাতা মন্দিরের মদনমোহন বিগ্রহও রথে যাবে। দুটি মন্দিরের বিগ্রহ ৯ জুলাই মদনমোহন মন্দিরে আনা হবে।” ফি বছরের মত এ বারেও গুঞ্জবাড়িতে সাত দিনের মেলা বসবে। ভক্তদের উৎসাহ বাড়াতে রথ উপলক্ষে বর্ধমান কলকাতা ও বহরমপুর থেকে কীর্তনের দল আসার বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়েছে বলে জান গিয়েছে। স্থানীয় কীর্তন দলের পাশাপাশি বহিরাগত জনপ্রিয় কীর্তনের দলের সদস্যরা রথের দিন শহর পরিক্রমা করে কীর্তন পরিবেশন করবেন। এবারের রথযাত্রাকে স্মরণীয় করে রাখতে মদনমোহন মন্দিরে ভক্তদের দেওয়া রুপোর সামগ্রী গলিয়ে, দেবদেবীর ছবি সংবলিত স্মারক তৈরি করে ভক্তদের কেনার সুযোগ দেওয়া হবে। আগ্রহীরা উল্টো রথের দিন সেগুলি কেনার সুযোগ পাবেন বলে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, ইসকন অনুমোদিত হরেকৃষ্ণ নামহট্ট সংঘের ব্যবস্থাপনায় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রার সূচনা হবে নতুনপল্লী এলাকায় সঙ্ঘের মন্দির চত্বর থেকে। ওই দিন দুপুর আড়াইটেয় সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিস্কারের মাধ্যমে রথযাত্রার সূচনা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। দিনভর প্রসাদ বিতরণ, কীর্তন, বিশেষ পুজো এবং আরতির ব্যবস্থা করেছেন উদ্যোক্তারা। অনুষ্ঠানের আয়োজকদের দাবি শহরে প্রথম বর্ষের এই রথযাত্রার অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে রাশিয়া, ব্রাজিল আর কানাডা থেকেও বেশ কয়েক জন ভক্ত এই জেলায় আসছেন। |