পঞ্চায়েতে কোচবিহার
এবার ভোটে প্রতিশ্রুতি সেতুর
সেই একই গোলকধাঁধাঁ! ভোট-সেতু, প্রতিশ্রুতি-ভোট। এ বারেও আছে। তবে একটু অন্যরকম ভাবে। সেতুর ১৩ টি স্তম্ভ তৈরির কাজ প্রায় শেষ। সিতাইয়ের স্বপ্ন সিঙিমারি নদীর উপর সেতু আর বেশি দেরি নয় দাবি করে দিনহাটা এবং মাথাভাঙায় প্রচারে নেমেছে তৃণমূল। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই সেতু দুই মহকুমায় তাদের প্রধান বাজি। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ তো বটেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব প্রচারে এসে ওই সেতুর সফলতা নিয়ে বার বার বক্তব্য রেখেছেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “গত ৩৪ বছরে বামেরা যা পারেনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার দুই বছরে সেই কাজ করে দেখিয়েছে। দিনহাটা মহকুমার অংশ হয়েও যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল সিতাই। এ বারে তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।” রবীন্দ্রনাথবাবুর দাবি, দুই মহকুমার মানুষ তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ওই সেতুর জন্য কত যুগ অপেক্ষা করে ছিলেন তাঁরা। বাম সরকার একাধিক বার প্রতিশ্রুতি দিলে কিছু করেনি। ফরওয়ার্ড ব্লকের পক্ষে দাবি করা হয়েছে সিঙিমারি নদীতে সেতু তৈরির জন্য আশির দশক থেকে আন্দোলন শুরু করেছিলেন কমল গুহ। উদয়ন গুহ, পরেশ অধিকারীরাও ওই দাবিতে সরব হন। বাম সরকারের শেষ সময়ে সেতু তৈরির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হীরালাল দাম বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লকের আন্দোলনের ফলশ্রুতি ওই সেতু। বাম সরকারের আমলেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজ্যে সরকারের পরিবর্তনের পর নতুন সরকার সেই সিদ্ধান্ত মেনেই কাজ শুরু করেছে।”
সিতাইয়ের বিধায়ক কংগ্রেস নেতা কেশব রায় দাবি করেন, ফজলে হক সিতাইয়ের বিধায়ক থাকার সময়কাল থেকে সিঙিমারি নদীর সেতুর জন্য লড়াই করছে কংগ্রেস। বাম সরকারের সময় পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী তাদের দাবি মেনে সেতুর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। ওই সেতু আদাবাড়ি ঘাট না হয়ে সাগরদিঘি ঘাটে হবে সে ব্যাপারে ফজলে হকই পরামর্শ দেন। নতুন সরকার আসার পর কেশববাবু নিজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পূর্ত মন্ত্রী সুব্রত বক্সির কাছে দরবার করেন। তিনি বলেন, “আমরা সেতুর দাবিতে ধর্নায় বসেছিলাম। সেটা মহাকরণের সবাই জানেন। সেতু তৈরিতে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও ভূমিকা নেই।”
সিঙিমারি নদীর সেতু নিয়ে সিতাই, শীতলখুচির বাসিন্দাদের দাবি কয়েক দশকের পুরনো। দিনহাটা মহকুমার অংশ সিতাই ব্লকে কয়েক লক্ষ মানুষ বসবাস করেন। প্রতিদিন স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে নানা কাজে তাঁদের মহকুমা শহরে যাতায়াত করতে হয়। সিতাই সংলগ্ন শীতলখুচি এলাকার একটি বড় অংশ দিনহাটার উপর নির্ভরশীল। ওই এলাকার প্রধান কৃষিপণ্য তামাক। যার বাজার রয়েছে দিনহাটা শহরে। ওই বাসিন্দাদের দিনহাটায় যাতায়াতে ভরসা করতে হয় ভুটভুটির উপরে। বর্ষাকালে নদীর জলস্তর বেড়ে গেলে আতঙ্কে থাকেন বাসিন্দারা। অনেক সময় প্রায় ১০০ কিলোমিটার ঘুরে মাথাভাঙা হয়ে তাদের দিনহাটায় যাতায়াত করতে হয়। বাসিন্দাদের ওই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই সেতুর দাবি ওঠে। আর ভোট এলেই নেতামন্ত্রীরা সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। সিতাইয়ের বাসিন্দা নিমাই রায়, জব্বর আলিরা বলেন, “বাম সরকারের সময় শুধু প্রতিশ্রুতি শুনেছি। সেতুর কাজ তারা শুরু করতে পারেনি। নতুন সরকার আসার পর সেতুর কাজ শুরু করেছে। শেষ না হওয়া পর্যন্ত আশ্বস্ত হতে পারছি না।” বাম সরকারের পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী এই সেতুর শিলান্যাস করেন। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রী গৌতম দেব সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কেশববাবু হাজির ছিলেন। তিনি বলেন, সাগরদিঘি ঘাট দিয়ে করা ওই ৯৯৫ মিটার সেতুর জন্য ১০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ১০টি স্তম্ভের কাজ অনেকটা হয়েছে। আর১০টি স্তম্ভ-সহ বাকি কাজ হবে। তা ছাড়া সংযোগকারী রস্তার জন্য আদালা টাকা বরাদ্দ করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.