|
|
|
|
নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল রায়গঞ্জ হাসপাতালের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল চত্বরের নিকাশি পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে রোগীদের পরিবারের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই হাসপাতাল চত্বরের একাধিক নিকাশি নালা উপচে হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যাচ্ছে। জলের পাড়িয়ে তাঁদের হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢুকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এক-দু পশলা বৃষ্টি হলেই জল জমে যাচ্ছে।
হাসপাতাল সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “হাসপাতালে একাধিক নিকাশি নালার জল হাসপাতাল চত্বরের একটি গর্তে জমা হয়। টানা বৃষ্টির জেরে সেই গর্তটি জলে ভরে যাওয়ায় নিকাশিনালা উপচে হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যাচ্ছে। ফলে চিকিত্সক, স্বাস্থ্যকর্মী ও রোগীর পরিবারের লোক সমস্যায় পড়ছেন। তিনি জানান, সমস্যার সমাধানে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে হাসপাতালের নিকাশির নিষ্কাশনের জন্য একটি বড় নিকাশিনালা তৈরির দাবি জানানো হয়েছে।”
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও নিকাশি নালা সাফাইয়ের দায়িত্বে রয়েছে রায়গঞ্জ পুরসভা। পুরসভার সাফাইকর্মীরা প্রতিদিন কাজ করেন। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রণজকুমার দাস বলেন, “আসলে হাসপাতালের নিকাশিনালার জল নিষ্কাশনের জন্য হাসপাতাল চত্বরের ওই গর্তটি পর্যাপ্ত নয়। ফলে বেশি বৃষ্টি হলেই ওই গর্ত ভরে যাওয়ায় নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পূর্ত দফতরের কাছে হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় একটি বড় নিকাশিনালা তৈরির প্রস্তাব পাঠিয়েছি। নিকাশিনালা তৈরি হলে হাসপাতালের একাধিক নিকাশির জল অনায়াসেই নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে।”
রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর অভিযোগ, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের গাফিলতির জেরেই গত তিন দশকেরও বেশি সময়ে হাসপাতাল চত্বরে নিকাশি পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। তিনি বলেন, “আমি নিজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমস্যার কথা জানিয়েছি। তিনি স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন।” উত্তর দিনাজপুর জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “হাসপাতাল ও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে রাজনীতি করাটা শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের অন্যতম দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। বামফ্রন্ট সরকারের গাফিলতি থাকলে হাসপাতাল চত্বরে কোনও নিকাশিনালাই তৈরি হত না।” তাঁর দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবে হাসপাতালের নিকাশিনালার জল নিষ্কাশনের জন্য বড় নিকাশিনালা গড়ে ওঠে নি।
হাসপাতাল চত্বরের চারিদিকে ছোট ও বড় মিলিয়ে ১০টি নিকাশিনালা রয়েছে। প্রতিটি নিকাশিনালার জলই হাসপাতাল চত্বরের একটি বড় গর্তে জমা হয়। বেশি বৃষ্টি হলে ওই গর্তটি জলে ভরে যাওয়ায় নিকাশিনালা উপচে হাসপাতাল চত্বরে জল দাঁড়িয়ে যায়। গত শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টির জেরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, ব্লাডব্যাঙ্ক, ক্যান্টিন, সুপারের দফতর, বিশ্রামাগার সহ বিভিন্ন এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়। বুধবার পর্যন্ত জল জমে ছিল বলে অভিযোগ। সেই জল শুকিয়ে গেলেও হাসপাতাল চত্বরে যত্রতত্র কাদা জমে রয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ পাল ও স্বাস্থ্যকর্মী পঙ্কজ রায় বলেন, “কয়েকঘন্টা বৃষ্টি হলেই হাসপাতাল চত্বরে জল জমে যায়। ফলে জল মাড়িয়েই আমাদের হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার সমস্যার কথা জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।” চাকুলিয়ার বাসিন্দা চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয় কিশোর ঝাঁ বলেন, “গত কয়েক দিন জল কাদা মাড়িয়ে হাসপাতালে ঢুকতে গিয়ে বহু মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকে পা পিছলে কাদায় পড়ে গিয়েছেন।” |
|
|
|
|
|