|
|
|
|
প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি |
অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার মান বাড়াতে জিপিএসের ভাবনা |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
অসুস্থ রোগী যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য হা-পিত্যেশ করছেন স্বজনেরা। চলছে ফোনাফুনি, দৌড়ঝাঁপ। কিন্তু কোথায় অ্যাম্বুল্যান্স? অগত্যা বেশি টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে ঝুঁকি নিয়েই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
গাঁ-গঞ্জ থেকে মফস্সলপশ্চিম মেদিনীপুর জুড়ে এই ছবি অত্যন্ত চেনা। অথচ পরিসংখ্যান বলছে, জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। জেলা পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিনশো। শুধু অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়া এক মাত্র অভিযোগ নয়, পেলেও বেশি টাকা দাবি করা, সরকারি প্রকল্পে চলা অ্যাম্বুল্যান্সগুলির ক্ষেত্রে কিলোমিটার বাড়িয়ে বেশি টাকা বিল করা-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কিছু কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশে রোগী না নিয়ে গিয়ে টাকা তোলার অভিযোগও রয়েছে। সব কিছুর উপরে নজরদারি চালাতে এ বার তাই অ্যাম্বুল্যান্সে ‘জিপিএস ট্র্যাকিং কাম টেলিকনফারেন্সিং’ ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা নিচ্ছে প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ বলেন, “অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাকে সুনিশ্চিত করতেই জিপিএস ট্র্যাকিং করার কথা ভাবা হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা চলছে।”
প্রশাসন জানিয়েছে, এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এই পরিষেবা চালু করা হবে। মেদিনীপুরে থাকবে কন্ট্রোল রুম। জেলার সাড়ে ৩০০ অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৬৫টি অ্যাম্বুল্যান্স স্বাস্থ্য দফতরের কাজে যুক্ত থাকার জন্য নথিভুক্ত করেছে। বাকিদেরও এর আওতায় নিয়ে আসা হবে। তা হলে সহজেই কোন অ্যাম্বুল্যান্স কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে রওনা দিল, কত কিলোমিটার দূরে কোন হাসপাতালে রোগী পৌঁছলতার নথি পাওয়া যাবে কন্ট্রোল রুম থেকে। এক্ষেত্রে চালক ভুল নথিও দিতে পারবে না।
অনেক সময় ‘দূরে রয়েছি’ বা ‘গাড়ি খারাপ’ বলে রোগীদের পরিবারকে এড়িয়ে যান অ্যাম্বুল্যান্স চালক। আবার কখনও চালককে মোবাইলে ধরাই যায় না। ‘টেলিকনফারেন্স সিস্টেম’ থাকলে চালকের মোবাইল ছাড়াও তাঁর সঙ্গে গাড়িতে লাগানো স্পিকারের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে। কন্ট্রোল রুমে রোগীর আত্মীয়েরা ফোন করলেই জানতে পারবেন সেই এলাকার কোন অ্যাম্বুল্যান্সটি কোথায় রয়েছে। যেটি সামনে থাকবে তাকেই নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, আদৌ এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে তো? যেখানে সরকারি সুবিধে নিয়ে নিখরচায় রেজিস্ট্রেশন করানোর পরে অধিকাংশ অ্যাম্বুল্যান্সই ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ব্যবহৃত হয়। অনেক অ্যাম্বুল্যান্স আবার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলো নিজেদের কাজে ব্যবহার করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, “একদিন দেখি সাইরেন বাজিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স যাচ্ছে। কাছাকাছি আসার পর দেখলাম, ভেতরে রোগী নেই। রয়েছেন সুবেশা এক মহিলা। অনেকেই এ ভাবে অ্যাম্বুল্যান্সের অপব্যবহার করছেন। আর জরুরি সময়ে আমজনতা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” |
|
|
|
|
|