টাকা ফেরত চাওয়ায় খুন
দুই অভিযুক্তর যাবজ্জীবন দণ্ড
ট হাজার টাকা ফেরত চাওয়ায় এক যুবককে শ্বাস রোধ করে মেরে নদীর চরে পুঁতে রাখার ঘটনায় ২ যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল জলপাইগুড়ি জেলা আদালত। বৃহস্পতিবার জেলা আদালতের অতিরিক্ত বিশেষ বিচারক (তৃতীয়) জন্মেজয় পাত্র অভিযুক্ত ভিক্টর বড়ুয়া এবং রাহুল বড়ুয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা জমা না দিলে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২০০৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি লাগোয়া হায়দারপাড়ার বাসিন্দা ২১ বছরের যুবক রাজু দে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়ে যান। রাজুর পরিবারের তরফে ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়েরের পরে পুলিশ তদন্তে নামে। মোবাইল কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখা যায়, অভিযুক্ত ভিক্টর বড়ুয়ার সঙ্গে নিখোঁজ হওয়ার দিন তাঁর একাধিকবার কথা হয়েছে। সে সময়ে রাজুর মোবাইল বন্ধ থাকলেও, তাঁর মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার মোবাইল ফোনে অন্য নম্বরের সিম ঢুকিয়ে ভিক্টর বড়ুয়াই ব্যবহার করছে। এই তথ্য পেয়ে ভক্তিনগর থানার পুলিশ ভিক্টরকে গ্রেফতার করে। রায় শোনার পরে নিহতের বাড়ির লোকজনের তরফে ভক্তিনগর তানার তৎকালীন ওসি অচিন্ত্য গুপ্তের তদন্তের প্রশংসা করা হয়। বাড়ির লোকজনের বক্তব্য, পুলিশ তদন্তে এতটুকুও ঢিলেমি না দেওয়ায় খুনের কিনারা হয়েছে।
ধৃত ভিক্টরকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, একটি মোবাইল সংসস্থার সিম বিলির লাইসেন্স দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিহত রাজু দের থেকে ভিক্টর ১০ হাজার টাকা নিয়েছিল। অভিযোগ, ভিক্টররা অনেকের থেকেই মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে টাকা তোলে। সেই টাকা ফেরৎ চাইতে থাকায় ২০০৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভিক্টর এবং তার সঙ্গীরা রাজুকে ডেকে পাঠায়। তদন্তের পরে, আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ১৬ ডিসেম্বর রাজুকে ডেকে হায়দারপাড়ার একটি অন্ধকার গলিতে নিয়ে যায় ভিক্টর এবং রাহুল। মাফলার দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সাহুনদীর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, রাজুর বাইকে ভিক্টর এবং রাহুল বসে মধ্যে রাজুর মৃতদেহ রেখে নিয়ে যাওয়া হয়। নদীর চরে দেহ পুঁতে বাইকটি জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ির সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে পুলিশ তদন্তে জেনেছে।
মূল অভিযুক্ত ভিক্টর এবং রাহুলের সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যার সাহায্যে বাংলাদেশে বাইক পাচার করা হয়েছিল তাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে, বাকিদের একজন জামিনে মুক্তি পেয়ে যায় অবং অন্যজন মামলা থেকে খালাস পেয়েছে। মূল অভিযুক্ত ভিক্টর বড়ুয়া ২০০৭ সালে ৮ অক্টোবর জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের পুলিশ সেল থেকে পালায়। বছর দেড়েক আগে সে ফের ধরা পড়ে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মামলার সরকারি আইনজীবী কমলকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “খুনের অভিযোগ এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অপরাধে ভিক্টর বড়ুয়া এবং রাহুল বড়ুয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিরা মূল অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।”
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশি তদন্তের পরে মামলাটি ২০০৫ সালে জেলা আদালতে শুনানি শুরু হয়। পুলিশের তদন্তকারী অফিসার, এলাকাবাসী, মোবাইল সংস্থার কর্মী থেকে শুরু করে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এদিন মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা। মৃতের কাকা মানিক দে এদিন আদালতে রায় শোনার জন্য উপস্থিত ছিলেন। মানিকবাবু বলেন, “আমার ভাইপোকে ফেরৎ পাব না ঠিকই। তবে ওঁকে যারা খুন করেছে, তাদের যে শাস্তি হয়েছে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে পুলিশ যে তদন্ত করেছে, তাতেই সত্য উদঘাটন হয়েছে।” অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী আক্রাম হুসেন বলেন, “রায় শুনেছি। হাইকোর্টে যাব।” ঘেরাও। টাকা ফেরত না পাওয়ায় অর্থলগ্নি সংস্থার কর্তার স্ত্রীকে ঘেরাও করল আমানতকারী ও এজেন্টরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি কালচিনি ব্লকের ওল্ড হাসিমারায়। ডিসেম্বর মাস থেকে ওই অর্থ লগ্নিকারী সংস্থা তাঁদের সুদ ও টাকা দেওয়া নিয়ে গড়িমসি শুরু করে। হাসিমারা ফাঁড়ির ওসি বিভূতি বর্মন বলেন, “অভিযোগ আসেনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.