দেওয়াল লিখন আছে, আছে ফ্লেক্স, ফেস্টুন, লিফলেট বাড়ি বাড়ি প্রচার, জনসভা। কিন্তু এত কিছুর পরেও প্রার্থীদের নাম, রাজনৈতিক দল আর কোন স্তরে কত নম্বর আসনে তাঁরা দাঁড়িয়েছেন নির্বাচনের প্রচারে প্রার্থীদের সম্পর্কে সাধারণত এর বেশি কিছু জানা যায় না।
প্রার্থীদের সম্পর্কে বিশদে আর কোন তথ্য নির্বাচন কমিশন জানলেও সাধারণ মানুষের কাছে তা অজানাই থাকে। আর এখানেই অন্য সবার থেকে আলাদা করে নজর কেড়েছে করিমপুরে সিপিএমের তরফে প্রচারিত লিফলেট। দলের লোকজনের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ভোটের প্রচারে গিয়ে হাসিমুখে সে সব লিফলেট বিলি করছেন প্রার্থীরাই।
কি আছে সেই লিফলেটে? স্থানীয় পঞ্চায়েতের সমস্যার সাতকাহন ও সে সব সমস্যার সমাধানের অঙ্গীকারের পাশাপাশি রয়েছে ‘প্রার্থী পরিচিতি’। আর এই প্রার্থী পরিচিতিতেই ‘অভিনব’ হয়ে ওঠা সিপিএমের ওই লিফলেটে এক বার চোখ বুলিয়ে নিলেই জানা যাবে প্রার্থীদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। প্রার্থীদের নাম, কে কোন স্তরে কত নম্বর আসনে দাঁড়িয়েছেন, প্রার্থীদের জন্ম কত সালে, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, কর্মজীবন ও তাঁরা কোন সম্প্রদায়ের মানুষ সবই দেওয়া রয়েছে ওই লিফলেটে। |
করিমপুরের আনন্দপল্লী ২ শাখা নির্বাচনি কমিটির পক্ষে প্রকাশিত ওই লিফলেটের বিষয়ে সিপিএমের স্থানীয় শাখা সম্পাদক সঞ্জয় সরকার বলেন, ‘‘আমরা মনে করি এলাকার ভোটার ও সাধারণ মানুষকে প্রার্থীদের সম্পর্কে বিশদে জানানোটা জরুরি ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের লিফলেটও আমরা এরকমই করেছিলাম। এতে এলাকায় প্রার্থী সম্পর্কে ভোটারদের একটা স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়।’’
সঞ্জয়বাবুর কথায়,‘‘ বি.এ, বি.কম, এম.এ পাশ প্রার্থীদের পাশাপাশি মাধ্যমিক পাশ বা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত যাঁরা পড়াশোনা করেছেন তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতাও আমরা লিফলেটে দিয়েছি অন্য রাজনৈতিক দলের মতো ফ্লেক্সে প্রার্থীর নামের পাশে ‘অধ্যাপক’ লিখে পরে আবার কালি দিয়ে সেটা মুছে দেওয়ার দরকার হয় না যেটা সত্যি আমরা সেটাই দিয়েছি।’’
কিন্তু ব্যালট বাক্সে এর কি আদৌ কোন প্রভাব পড়বে? শাসকদল এটাকে গুরুত্ব না দিলেও স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ‘‘সেটা আমরা ভোটারদের উপরেই ছেড়ে দিয়েছি। তবে ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহকুমার সিংহভাগ পঞ্চায়েত বামেদের হাতছাড়া হলেও করিমপুরের যে চার জন সিপিএম প্রার্থীর নাম ও বিশদ বিবরণ দিয়ে লিফলেট ছাপানো হয়েছিল তাঁরা কিন্তু প্রত্যেকেই জিতেছিলেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন,‘‘ এবারের নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে নতুন মুখ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা- এই দুটো বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল ফলে নতুন প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটারদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ারও একটা বিষয় থেকে যায় পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জ্লো পরিষদে যাঁরা প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁদের সম্পর্কে এলাকার মানুষের কাছে একটা স্পষ্ট ধারণা থাকাও দরকার।’’ |