|
|
|
|
মোদীর পাশে আডবাণী, ঐক্যের ছবি বিজেপির
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
লালকৃষ্ণ আডবাণীর পাশে নরেন্দ্র মোদী। সংসদীয় বোর্ডের এই ঐক্যের ছবি তুলে ধরেই মোদীর প্রচার কৌশল চূড়ান্ত করলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
প্রচার কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার মোদী যে ভাবে দিল্লি এসে দলের সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন, তাতে রুষ্ট হন আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, মুরলীমনোহর জোশীরা। সভাপতি রাজনাথ সিংহ তাই আজ সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডেকে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করলেন। আডবাণীর পাশে বসালেন মোদীকে। পরিবর্তে অরুণ জেটলি নিজের আসনটি ছেড়ে সুষমার পাশে বসলেন। আর মোদী এ বার কী ভাবে দেশজুড়ে প্রচার শুরু করবেন, আডবাণী-সুষমাদের সঙ্গে নিয়েই সেই কৌশল চূড়ান্ত করলেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলে মোদী-বিরোধীদের খুশি রাখতে স্থির হয়েছে, সংসদীয় বোর্ডই এ বার যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। সেই কারণে আবার চার দিন পর আরও একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বৈঠকের পর বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, “মোদীই যে দলের প্রধান মুখ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আডবাণী-সুষমারা চান, মোদীর হাতে অসীম ক্ষমতা চলে না যাক। তাই সংসদীয় বোর্ডই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে। মোদীরও তাতে আপত্তি নেই। তিনি জানেন, তিনিই কাণ্ডারী। কিন্তু সকলকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যের ছবিটি প্রকাশ্যে এলেও কোনও লোকসান নেই।” আগামিকালই মোদী টেলি কনফারেন্সে কথা বলবেন বিহারের প্রায় দেড় হাজার নেতার সঙ্গে। তার পর রথযাত্রার সময় যাবেন পুরীতে, অগস্টের গোড়ায় হায়দরাবাদে। |
সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে আডবাণী ও মোদী। ছবি: এপি। |
আডবাণী শিবির যদিও মনে করে, ইশরাত জহান মামলায় মোদী সরকারের অস্বস্তি জারি থাকলে মেরুকরণের একটা আশঙ্কা রয়েছে। ঐক্যের ছবি দেখাতে আডবাণী যতই সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে যান, মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ করার ব্যাপারে এখনও তাঁর আপত্তি। আগামিকাল আডবাণী আরএসএসের সদর দফতর নাগপুরে যাচ্ছেন। গোয়ার বৈঠকের পর ইস্তফা দিয়ে মোহন ভাগবতের কাছে যে সমস্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন, সে সবের নিদান চান তিনি। অমরাবতীতে আরএসএসের আসন্ন বৈঠক থেকেও বেশ কিছু প্রত্যাশা রয়েছে আডবাণীদের। আডবাণীর নির্বাচনী কেন্দ্র গাঁধীনগর থেকে তাঁর কন্যাকে প্রার্থী করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা চলছে।
আজকের বৈঠকে লক্ষ্যণীয় ভাবে গরহাজির ছিলেন নিতিন গডকড়ী ও মুরলীমনোহর জোশী। তাঁদের সঙ্গে এমনিতে মোদীর তেমন সুসম্পর্ক নেই। তবু কিছু দিন আগে জোশীর বাড়ি গিয়ে বৈঠক করেছিলেন মোদী। প্রাতঃরাশ করেছিলেন গডকড়ীর বাড়িতে। গডকড়ী এখন বিদেশে। জোশী দিল্লির বাইরে। এর মধ্যে আবার জোশীর আসন বারাণসী থেকেই মোদীকে লোকসভায় প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে মোদী মনে করছেন, এ সব অন্তর্কলহ নিয়ে আর সময় নষ্ট করে লাভ নেই। ভোটের আর দু’শো দিনও নেই। তা-ও কংগ্রেস এ বছরেই ভোট করিয়ে দিতে চাইছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে একজোট হয়েই ঝাঁপাতে হবে।
আজকের বৈঠকেও সেই কথা বলেছেন মোদী। তাই দিল্লি এসে আজ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর সঙ্গে যেমন বৈঠক করেছেন, তেমন আলাদা করে কথা বলেছেন বরুণ গাঁধীর সঙ্গেও। আবার সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক শেষ করেই গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে। ক’দিন আগে রাষ্ট্রপতির অসুস্থ হওয়ার খবর জেনে ফুল পাঠিয়েছিলেন মোদী। বিজেপির এক নেতার কথায়, “দলের মধ্যে কলহের চোরাস্রোত সত্ত্বেও মোদী ধীরে ধীরে নিজেকে জাতীয় স্তরের নেতা হিসেবে তৈরি করে ফেলছেন। এর পর উপযুক্ত সময়ে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ করা না হলে দলে তাঁর বিরোধী নেতারাই রোষের মুখে পড়বেন।”
|
পুরনো খবর: আপত্তি খারিজ আডবাণীদের |
|
|
|
|
|