নেশার পয়সা জোগাতে এ বার ত্রিফলায় হাত পড়ল দুই দুষ্কৃতীর। সম্প্রতি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পশ্চিম দিকের প্রবেশপথের সামনে থাকা কয়েকটি বাতিস্তম্ভ থেকে ১০টি বাতি-সহ ঢাকনা খুলে নেয় ওই দুই মাদকাসক্ত। পুরসভার হিসেবে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৯০ হাজার টাকা। যদিও মাল নিয়ে পালানোর আগেই তাদের ধরে ফেলে পুলিশ।
শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ১০ হাজারেরও বেশি বাতিস্তম্ভ লাগিয়েছে পুরসভা। কিন্তু সেগুলি দেখভালের কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেই। পুরসভার হিসেবে গত এক বছরে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার অনেক রাস্তার বাতিস্তম্ভ থেকে বাতি উধাও হয়েছে। কোথাও বা বেঁকে রয়েছে বাতিহীন স্তম্ভ। মানিকতলা থেকে এপিসি রোডে লাগানো অনেক ত্রিফলায় বাতি নেই। একই হাল দক্ষিণ কলকাতার জাজেস কোর্ট রোডে। গড়িয়াহাট কানেক্টরে অনেকগুলি স্তম্ভ বাতিহীন।
পুরসভার কি কোনও দায় নেই?
এক পদস্থ অফিসারের কথায়, “শহরের বিভিন্ন রাস্তায় হাজার হাজার বাতিস্তম্ভ দেখভাল করা কি সম্ভব?” তাঁর বক্তব্য, “এত কাল রাস্তার আলো ছিল বড় পোস্টের উপরে। চুরি হত না বললেই চলে। কিন্তু ত্রিফলার স্তম্ভ তো ছোট। একটু চেষ্টা করলেই নাগালের মধ্যে আনা যায়। চুরি বাড়ছে সে কারণেই।”
শহরের অন্যত্র ত্রিফলা নিয়ে পুরসভা ততটা চিন্তিত না হলেও, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে মহাকরণ যাতায়তের পথটুকুতে প্রায়শই নজরদারি চালান পুরকর্মীরা। শুধু আলো বিভাগ নয়, ওই পথে পুর-পরিষেবার কোনও ঘাটতি না রাখতে মেয়র থেকে পুরকমিশনার, সকলেই অন্তত এক বার করে খোঁজখবর নেন।
পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে রাস্তা থেকে শুরু করে শৌচাগার, ফুটপাথ, ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ এবং জঞ্জাল সাফাই সব কিছু ঠিকঠাক রয়েছে কি না, তা দেখা হয়ে থাকে।” তার জন্য প্রায় প্রতিদিনই পুরসভার কোনও কোনও অফিসার ওই এলাকা টহল দেন।
আলো দফতরের এক অফিসার বলেন, “রাস্তাঘাটের কোথায় কোন বাতিস্তম্ভ থেকে বাতি চুরি হচ্ছে, তা দেখা পুলিশের কাজ। আমাদের নয়।” তিনি জানান, সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কাছে এবং ডি এল খান রোডে ত্রিফলার বেশ কয়েকটি বাতি চুরি যায়। পুলিশকে জানানোও হয়েছে। কিন্তু উদ্ধার হয়নি। যদিও এক পদস্থ পুলিশ অফিসার বলেন, “পুলিশের হাজারো কাজ। এর মধ্যে ত্রিফলা থেকে কে কোথায় বাতি নিয়ে পালাচ্ছে, তা ধরা কঠিন। টহলের সময়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে হয়তো ধরা পড়েছে। এর বেশি কিছু নয়।” |