এর আগে দু’-দু’বার হারতে হয়েছে। এমনকী প্রতিবারই খুব কম সংখ্যক ভোট পেয়েছেন। তা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াটা কোথাও যেন একটা নেশায় পরিণত হয়েছে দুবরাজপুরের হেতমপুর পঞ্চায়েতের অজয় বাগদি ও তাঁর স্ত্রী মাধুরীদেবীর। শর্ত একটাই মহিলা সংরক্ষিত আসন হলে স্ত্রী-কে দাঁড় করাবেন নতুবা নিজেই লড়বেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ বারও মহিলা সংরক্ষিত আসন হওয়ায় গ্রামপঞ্চায়েত আসনে হেতমপুরের আট নম্বর সংসদ থেকে সিপিআই(এমএল) সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়েছেন মাধুরীদেবী। প্রতীক ‘লাঙল’। জেতার ব্যপারে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী দেখাল না মাধুরীদেবীকে। তবে তাঁর জবাব, “খেলায় যেমন জয় পরাজয় আছেই। ভোটটাকে তেমন ভাবেই দেখছি এর বেশি কিছু নয়।” তা হলে ভোটে দাঁড়ানো কেন? বিপিএল তালিকায় নাম থাকা নিঃসন্তান দম্পতীর উত্তর, “আমাদের বাগদি পাড়ায় খুব একটা উন্নয়ন হয়নি। যদি জিততে পারি তা হলে মানুষের হয়ে কাজ করব।” কিন্তু প্রতিবেশী এবং ওই সংসদের বাসিন্দারা যেটা বলছেন, তা হল প্রায় সাড়ে তেরোশো ভোটার ওই সংসদে থাকলেও আগের নির্বাচনগুলিতে ৪০-৫০টির বেশি ভোট পাননি স্বামী বা স্ত্রী। |
মাধুরীদেবীর নামে দেওয়াল লিখন। |
শুধু তাই নয়, প্রচারেও ওই ওয়ার্ডে মোট ছয় প্রার্থীর মধ্যে বেশ পিছিয়ে মাধুরীদেবী। আর যে রাজনৈতিক দলের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন সেই দলের সংগঠন কোথায় এই পঞ্চায়েত এলাকায়। ভোট প্রচারের জন্য খরচই বা কে দেবে দিনমজুর অজয় বাগদিকে। এ কথা অবশ্য স্বীকার করে নিয়ে আজয়বাবু বলেন, “যেহেতু খরচ নিজেকেই জোগাড় করতে হয়, মোট ১১টি জায়গায় দেওয়াল লিখন করানো সম্ভব হয়েছে। যেখানে একই ওয়ার্ডের সদ্য প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান চায়না দাস (এবার অবশ্য দলের প্রতীক না পেয়ে নির্দলে দাঁড়িয়েছেন) ইতিমধ্যেই নিজের হয়ে ১১৯ জায়গায় দেওয়াল লিখন করিয়েছেন। অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রচারে পিছিয়ে নেই। তাঁদের সঙ্গে পাল্লা কী ভাবে দেবেন।” বিষয়টি নিয়ে খুব একটা ভাবতে রাজি নন তাঁরা। সিপিআই(এমএল)-র জেলা সম্পাদক শৈলেন মিশ্র বলেন, “আজয় ভোটে দাঁড়াতে চেয়ে আমায় ফোন করেছিল। আমি বলেছি, সম্মানজনক ভোট পেলে দাঁড়াও। এর বেশি কিছু নয়।”
তবে এই বাগদি পরিবার হারের হ্যাটট্রিক হবে, না জয়ের মুখ দেখবেন সেটা সময়ই বলবে। |