প্রবীণতম বাম নেতা অশোক ঘোষের জন্মদিন থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘গাঁধীগিরি’র পথে হাঁটতে শুরু করল ফরওয়ার্ড ব্লক! অশোকবাবুর ৯১তম জন্মদিন ছিল মঙ্গলবার। সেই দিনই ফ ব-র তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সব মন্ত্রী এবং পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি-র জন্য ফুল পাঠানো হল! অশোকবাবুর কথায়, “নারী নির্যাতন বাড়ছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে এবং বিরোধী পক্ষের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। সে সবের বিরুদ্ধে গোলাপ পাঠিয়ে এ আমাদের প্রতীকী প্রতিবাদ! এই প্রতিবাদের পন্থা আমরা চালু রাখব। গোলাপ না পেলে, নিদেন পক্ষে একটা করে লাল জবা পাঠাবেন আমাদের জেলার কর্মীরা।” |
তাঁর জন্মদিনে মহাকরণে ফুল গেল। সরকারের তরফ থেকে কোনও শুভেচ্ছা বা ফুল এসেছে কি? ফ ব সূত্রের বক্তব্য, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। অশোকবাবু নিজেও তেমন কিছু আশা করেননি। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর (সোমবার, ১ জুলাই ঘটনাচক্রে যার জন্মদিন ছিল) শুভেচ্ছা পেয়ে তিনি আনন্দিত। এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নানা অভিজ্ঞতার আলোয় বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের হাল দেখে তিনি যথেষ্ট ব্যথিত। দলের সদর দফতরে শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে সাক্ষাতের ফাঁকেই অশোকবাবু বলেছেন, “প্রতিবাদ করলেই যে ভাবে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে, এ জিনিস রাজ্যে আগে দেখিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় মাত্র দু’বছরে রাজ্যটা যে ভাবে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা আর গুন্ডারাজের কবলে চলে গেল, আগে তা-ও দেখিনি!” |
সিপিএমের শতায়ু নেতা সমর মুখোপাধ্যায়ের পরে অশোকবাবুই এখন বাম নেতৃত্বের মধ্যে প্রবীণতম। সমরবাবু অবশ্য প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে নেই। অশোকবাবু এখনও সক্রিয়। দলের রাজ্য সম্পাদকের পদে নানা জমানা পেরিয়ে এসে অশোকবাবুর মত, “টানা ৩৪ বছর সরকারে ছিলাম। সেই সরকারেরও অনেক ভুল-ত্রুটি, অন্যায় ছিল। বামফ্রন্টের মধ্যে থেকেই অনেক সময় প্রতিবাদ করেছি, আলাদা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে রাস্তাতেও নেমেছি। কিন্তু গোটা প্রক্রিয়ায় একটা গঠনমূলক দিক ছিল। এখন প্রতিহিংসাই বড়!”
|