ট্যাক্সির মিটার
কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও মেলে না ভাড়ার রসিদ
ট্যাক্সিতে প্রিন্টার বসিয়ে রসিদ দেওয়ার আইনি নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। মিটারের সঙ্গে প্রিন্টার যুক্ত করে এই রসিদ দিতে দু’বছরে দু’বার নির্দেশও দিয়েছিল তারা। তা সত্ত্বেও যাত্রীরা সেই রসিদ পাচ্ছেন না। কিন্তু হেলদোল নেই ট্যাক্সির মালিক-চালক কোনও পক্ষেরই। কবে থেকে রসিদ পাওয়া যাবে, মিলছে না তার উত্তর। কেন এই পরিস্থিতি, তা জানতে পরিবহণ দফতরকে চিঠি দিল ক্রেতা সুরক্ষা দফতর।
যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো ভাড়া নেওয়ার আশঙ্কা রুখতে ২০১১-এর জুলাই মাসে প্রদীপ কুমার নামে এক আইনজীবী আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন। সে বছরই সেপ্টেম্বর থেকে এ রকম প্রিন্টার লাগাতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়। তার বিরুদ্ধে আবেদন করে ‘বেঙ্গল ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ (বিটিএ) এবং ‘ক্যালকাটা ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশন’ (সিটিএ)। ২০১২-এর ৩০ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল এবং বিচারপতি এস চক্রবর্তীর বেঞ্চে রাজ্যের তৎকালীন অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র বলেন, পাবলিক ভেহিক্যাল্স বিভাগ অর্থাৎ পিভিডি-র হিসেবে ৩২৩৪টি ট্যাক্সিতে এই প্রিন্টার লাগানো হয়েছে। দুই বিচারপতি হাইকোর্টের আগের নির্দেশ বহাল রেখে পরদিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ থেকে ট্যাক্সিতে প্রিন্টার লাগানো বাধ্যতামূলক করেন।
ট্যাক্সির নম্বর, যাত্রীর নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, কতটা পথ তিনি গেলেন, কত ভাড়া উঠল-- প্রিন্টারে এ বিষয়গুলির উল্লেখ থাকার কথা। এর ফলে ভাড়ার কারচুপি যেমন ধরা যায়, তেমনই ট্যাক্সিতে যাত্রী কোনও জিনিস ফেলে গেলে খুঁজে পাওয়ারও সুবিধা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অপরাধ-দমনের সহায়ক হয় এই তথ্য। ট্যাক্সি ভাড়ার টাকা নিয়োগকর্তার কাছ থেকে চাইতে গেলেও এই মুদ্রিত রসিদ সহায়ক হয়।
গত বছর হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ১৫ মাস। মুদ্রিত রসিদ চাইলে চালক দিচ্ছেন না। কেন এই হাল, তার সদুত্তর পাচ্ছেন না যাত্রীরা। সিটিএ-র সম্পাদক তারকনাথ বারি বলেন, “আমি যত দূর জানি, সব ট্যাক্সিতেই প্রিন্টার বসানো হয়েছে। কিন্তু যাত্রীরা রসিদ পাচ্ছেন কি না, জানি না।”
বিটিএ-র সভাপতি এবং ট্যাক্সির মালিক-চালক যৌথ কমিটির আহ্বায়ক বিমল গুহ স্বীকার করেছেন, যাত্রীরা ওই সব প্রিন্টারের রসিদ পাচ্ছেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “মিটারের সঙ্গে প্রিন্টার একসঙ্গে লাগানো। মিটারগুলি পুরনোই রয়ে গিয়েছে। এর পরে একাধিকবার ভাড়ার হার বদল হয়েছে। শেষ বার হয়েছে ২০১২-র অক্টোবরে। প্রিন্টারের সঙ্গে তা ক্যালিব্রেট করতে গেলে পিভিডি-র অনুমতি দরকার। তা পাচ্ছি না।” অর্থাৎ, এখন প্রিন্টারের রসিদে পুরনো ভাড়া উঠবে। যাত্রী সেটাই দিতে চাইবেন। কিন্তু চালক নেবেন নতুন ভাড়া। অর্থাৎ, মিটারে ১০০ টাকা উঠলে রসিদে ছাপা হবে ২০২ টাকা। কিন্তু বর্তমান হার অনুযায়ী চালক নেবেন ২৪১ টাকা। সমস্যা এখানেই।
পিভিডি-র সচিব গৌতম মিত্র বলেন, “প্রিন্টারের সঙ্গে ভাড়ার বর্তমান হার ক্যালিব্রেট করতে গেলে মিটারের সিল ভাঙতে হবে। এই ক্যালিব্রেশনের জন্য পরিবহণ দফতরের একটি নির্দেশিকা দরকার। সেটি চেয়ে বেশ কিছু দিন আগে মহাকরণে আর্জি জানিয়েছি।” তা এখনও পিভিডি-তে আসেনি বলে গৌতমবাবু জানান।
কেন মহাকরণের কর্তারা এ ব্যাপারে সক্রিয় হচ্ছেন না? পরিবহণ দফতরের বিশেষ সচিব আশিস ঠাকুর জানান, যুগ্ম সচিব অবনীন্দ্রনাথ সিংহ বিষয়টি দেখছেন। অবনীন্দ্রবাবু বলেন, “খোঁজ করে দেখছি।” ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সচিব বিবেক ভরদ্বাজ বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। পরিবহণ দফতরের কাছে সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছি।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.