প্রেসিডেন্সি
বিদেশি শিক্ষক নিতে ভরসা এখন কেন্দ্রই
দেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য বিদেশি শিক্ষকদের নিয়োগ করার নিয়ম নেই। অথচ প্রসিডেন্সির দর্শন, সমাজবিদ্যা ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জন্য তিন বিদেশি শিক্ষককে বাছাই করা হয়েছে প্রায় আট মাস আগে। ওই তিন জনও প্রেসিডেন্সিতে আসতে আগ্রহী বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
কিন্তু নিয়মই যখন নেই, বিদেশি শিক্ষকদের নেওয়া হবে কী ভাবে?
কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় এটা সম্ভব হতে পারে বলে আশা করছে প্রেসিডেন্সি। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে ওই তিন জন যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারেন, সেই জন্য দিল্লিতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা করবেন প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপের উপদেষ্টা অমর্ত্য সেন ও চেয়ারম্যান সুগত বসু।
মঙ্গলবার সুগতবাবু বলেন, “কোনও বিদেশি নাগরিক এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে পারেন না বলে বিভিন্ন মহল থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। কিন্তু ওই তিন বিদেশি যাতে প্রেসিডেন্সিতে পড়াতে পারেন, সেই জন্য কেন্দ্রের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানানো হবে।” চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে প্রেসিডেন্সিতে মেন্টর গ্রুপের বৈঠক হবে। অমর্ত্যবাবুও সেই সময় থাকবেন বলে জানান সুগতবাবু। তিনি বলেন, “ওই তিন বিদেশিকে আমরা ঠিকঠাক কিছু জানাতে পারছি না। ২০ জুলাই অমর্ত্যবাবু আর আমার দিল্লি যাওয়ার কথা। তার পরে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” তবে ঠিক কাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন, তা জানাতে চাননি সুগতবাবু।
প্রেসিডেন্সিকে ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’ বা উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ চলছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের উন্নীত করার জন্য কর্তৃপক্ষ এবং মেন্টর গ্রুপ দেশ-বিদেশ থেকে ভাল শিক্ষক আনতে উদ্যোগী হয়েছেন। বিভিন্ন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেকে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্সিতে। সেই সঙ্গে তিন বিভাগের জন্য তিন বিদেশি নাগরিককেও শিক্ষক হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। তাঁরা হলেন দর্শনে ইংল্যান্ডের ডেভিড রবিয়্যান্ট, সমাজবিদ্যায় বাংলাদেশের অন্টু সাহা এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ক্যামেরুনের জয় অ্যাসোনগ্যাজো অ্যালেমাজাঙ্গ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, মাস আষ্টেক আগে ওই তিন বিদেশিকে শিক্ষক হিসেবে বেছে নেওয়ার খবর রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরকে জানানো হয়। তাঁদের বেতন, পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড ইত্যাদি কী ভাবে দেওয়া হবে, সেই প্রশ্ন ওঠে তখনই। ওই দফতর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেয়।
প্রেসিডেন্সির উপাচার্য মালবিকা সরকার এ দিন বলেন, “বিশ্বভারতীর মতো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চিন, জাপান থেকে চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করে বলে শুনেছিলাম। সব জেনে ইউজিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সপ্তাহ দুয়েক আগে চিঠি পাঠিয়ে ইউজিসি জানিয়েছে, আগে ওদের একটি ফরেন ন্যাশনাল স্কিম চালু ছিল। কিন্তু এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন বিদেশি নাগরিককে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করার ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হয়েছে।” কমিশনের চিঠিটি সুগতবাবুর কাছে পাঠিয়ে মেন্টর গ্রুপের সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে উপাচার্য জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বেতন পান ইউজিসি-র বেঁধে দেওয়া বেতনহার অনুযায়ী। ওই তিন বিদেশি শিক্ষকের বেতনক্রম কী হবে?
উপাচার্য বলেন, “ওঁরা তিন জনেই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিযুক্ত হবেন। ওই পদে যে-বেতনে সবাই যোগ দিচ্ছেন, ওঁরাও সেই বেতনেই যোগ দিতে রাজি হয়েছেন।”
প্রেসিডেন্সিতে বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষকের অভাব রয়েছে। অনেক পদে এখনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। তার উপরে বিভিন্ন কারণে গত চার মাসে আট জন শিক্ষক চাকরি ছেড়েছেন। এমন অবস্থায় তিন শিক্ষকের কাজে যোগদানের ক্ষেত্রে এই জটিলতা কি সমস্যা বাড়াচ্ছে?
উপাচার্য বলেন, “তা ঠিক নয়। শিক্ষাগত যোগ্যতার দিক থেকে এই তিন জনই যথেষ্ট উচ্চ মানের। তাই তাঁদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হলে পঠনপাঠনের মান বাড়বে।”
প্রেসিডেন্সি সূত্রের খবর, রসায়ন বিভাগে মাত্র পাঁচ জন, গণিতে দু’জন, ইংরেজিতে পাঁচ জন শিক্ষক রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষক মাত্র চার জন। আজ, বুধবার স্নাতক স্তরে ভর্তি শুরু হচ্ছে প্রেসিডেন্সিতে। ক্লাস শুরু আগামী সপ্তাহে। শিক্ষকের অভাবে যাতে সমস্যা না-হয়, সেই জন্য অর্থনীতি বিভাগে উপদেষ্টা কমিটি গড়েছেন কর্তৃপক্ষ। মালবিকাদেবী বলেন, “ইংরেজিতে এক সপ্তাহের মধ্যে চার জন নিযুক্ত হবেন। সেখানে সমস্যা নেই। তবে অন্যান্য বিভাগে অতিথি শিক্ষকদের দিয়ে আপাতত পঠনপাঠন চালানো হবে।” ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট বা আইএসআইয়ের শিক্ষকদের অঙ্ক পড়াতে অনুরোধ করা হবে বলে জানান উপাচার্য।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.