|
|
|
|
দূত বলছেন ‘ব্যক্তিগত’ |
দৌত্য অস্বীকার মুলায়মের দলের
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আলিমুদ্দিনে গিয়ে সিপিএমের সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির দৌত্য নিয়ে রীতিমতো রহস্য দানা বাঁধল! কারণ, দূতকেই অস্বীকার করলেন মুলায়ম সিংহ যাদবের দলের সাধারণ সম্পাদক রামগোপাল যাদব!
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেবের সঙ্গে রবিবার যিনি আলিমুদ্দিনে বৈঠক করেছিলেন, সেই সঞ্জয় ডালমিয়া সমাজবাদী পার্টির কেউ নন বলে সোমবার বিবৃতি দিয়েছেন রামগোপাল। দলের সাংসদ কিরণময় নন্দকে পাশে বসিয়ে এ দিন কলকাতায় রামগোপাল বলেছেন, “আমি সংবাদমাধ্যমে দেখলাম সঞ্জয় ডালমিয়া নামে এক ব্যক্তি আমাদের পার্টির সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে মুলায়ম সিংহ যাদবের প্রতিনিধি হিসাবে সিপিএমের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, গৌতম দেবদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই ব্যক্তি সমাজবাদী পার্টির কর্মকতা দূর অস্ত্, প্রাথমিক সদস্যও নন!” রামগোপাল জানান, মোর্চা বা ফ্রন্ট সংক্রান্ত আলোচনায় তাঁদের দলের কিছু বলার থাকলে তা দলের সভাপতি মুলায়মই বলবেন। রামগোপালের কথায়, “এমন কোনও পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি, যাতে আমাদের এখনই সিপিএমের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। আগামী দিনে জাতীয় স্তরে মোর্চা গঠনের ব্যাপারে কিছু হলে মুলায়ম সিংহ প্রকাশ কারাটের সঙ্গে কথা বলবেন।” |
|
পুরনো সেই দিনের কথা। সেপ্টেম্বর, ২০১১। মুলায়ম সিংহ যাদবের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে অনিল
অম্বানী, জয়া ও অমিতাভ বচ্চনদের সঙ্গে সঞ্জয় ডালমিয়া। একেবারে বাঁ দিকে। ছবি ওয়েবসাইটের সৌজন্যে। |
দলের সাধারণ সম্পাদক রামগোপালকে সমর্থন করেই রাজ্যসভার সাংসদ কিরণময়বাবু প্রশ্ন তুলেছেন, “সিপিএমের তরফে জানতে চাওয়া হল না, লোকটা কে? এখানে তো আমাদের নেতা, বিধায়ক আছেন! স্থানীয় ভাবে তো আমরাও আছি! আমাদের এক বার জিজ্ঞাসা করবেন না? এ রকম অবস্থা আলিমুদ্দিনের হয় কী করে?”
ডালমিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পরে গৌতমবাবু জানিয়েছিলেন, মুলায়মকে যে তাঁরা ‘স্বাভাবিক মিত্র’ মনে করেন এবং আগামী দিনে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’য় পাশে পেতে চান, সে কথাই তাঁরা বলেছেন। ডালমিয়া অবশ্য আলিমুদ্দিন থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক কোনও কথা বলেননি। রামগোপালের বক্তব্যের পরে এ দিন যোগাযোগ করা হলে ডালমিয়া আনন্দবাজারকে বলেছেন, “আমি মুলায়মজি’র বন্ধু। রামগোপালজি’ও আমার বন্ধু।
উনি ঠিকই বলেছেন যে, আমি সমাজবাদী পার্টির কোনও পদে নেই। ব্যক্তিগত ভাবে অনেকের সঙ্গেই আমার যোগাযোগ থাকে।
সেই ভাবেই সিপিএম নেতাদের কাছেও গিয়েছিলাম।” সমাদবাদী পার্টির টিকিটেই তিনি যে ১৯৯৪ থেকে ’৯৮ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন, সেই তথ্য অস্বীকার করেননি ডালমিয়া। বছরদুয়েক আগে এটাওয়ায় মুলায়মের ছেলে প্রতীক যাদবের বিয়ের অনুষ্ঠানে সমাজবাদীর সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গেই জয়া ও অমিতাভ বচ্চনের পাশে দিল্লি-নিবাসী এই ব্যবসায়ীকে দেখা গিয়েছিল। একটি সূত্রের দাবি, “কিছু দিন আগেই সমাজবাদী পার্টির এই একই দূত তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখা করে গিয়েছেন।” ডালমিয়াও সে খবর সরাসরি অস্বীকার করছেন না। তাঁর বক্তব্য, “অনেকের সঙ্গেই আমি দেখা করেছি।” সমাজবাদী পার্টির একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, কিরণময়বাবুকে পাশে বসিয়ে রামগোপাল যে ভাবে রাতারাতি সিপিএমের সঙ্গে দৌত্যের কথা খারিজ করেছেন, তার নেপথ্যে কিছু বিশেষ রাজনৈতিক কারণ আছে।
প্রশ্ন উঠেছে, ভাল করে না জেনেই বুদ্ধবাবু-গৌতমবাবুদের সঙ্গে এক জনের সাক্ষাৎ আলিমুদ্দিনে হল কী করে? সিপিএম সূত্রের খবর, সম্প্রতি দিল্লিতে ডালমিয়া সমাজবাদী পরিচয়েই গৌতমবাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন এবং একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসে আলিমুদ্দিনে সাক্ষাৎ চেয়ে বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনিই। গৌতমবাবু এ দিন বলেন, “আরও খোঁজখবর নিচ্ছি। তার পরে যা বলার, বলব।” এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর বক্তব্য, “আমি ওই সময় কলকাতায় ছিলাম না। কারা এসেছিল, কী বৃত্তান্ত, এখনও রিপোর্ট পাইনি। তার আগে বলতে পারব না।” |
পুরনো খবর: আলিমুদ্দিনে মুলায়মের দূত, সাড়া বামেদেরও
|
|
|
|
|
|