|
|
|
|
আলিমুদ্দিনে মুলায়মের দূত, সাড়া বামেদেরও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
তৃতীয় বিকল্প গড়ার লক্ষ্যে এ বার আলিমুদ্দিনে দূত পাঠালেন মুলায়ম সিংহ যাদব। এর আগে নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর প্রতিনিধি আলিমুদ্দিনে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুর সঙ্গে বৈঠক করে গিয়েছিলেন। মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও কথা বলতে গিয়েছিলেন জেডিইউ-র মহাসচিব কে সি ত্যাগী। সমাজবাদীর দূত অবশ্য এ যাত্রায় কালীঘাট বা তৃণমূল ভবনের দিকে যাননি। তৃতীয় বিকল্প গড়ার জন্যই আজ, সোমবার দিল্লিতে চার বাম দলের কনভেনশন হচ্ছে। তার ২৪ ঘণ্টা আগে মুলায়মের ‘বার্তা’য় উৎসাহিত বাম শিবির।
বস্তুত, সমাজবাদী পার্টির শীর্ষ নেতা মুলায়ম নিজেও রবিবার শহরে ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের বাম মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য এবং অধুনা উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার সাংসদ কিরণময় নন্দের মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে কয়েক ঘণ্টার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন সপার্ষদ মুলায়ম। প্রশ্নের জবাবে আর্যাবর্তের ‘নেতাজি’ বলে গিয়েছেন, তৃতীয় বা ফেডেরাল ফ্রন্ট, যা-ই হোক না কেন, তা হবে লোকসভা ভোটের পরেই। তারই ফাঁকে সমাজবাদী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় ডালমিয়া এ দিন আলিমুদ্দিনে গিয়ে কথা বলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেবের সঙ্গে। আলিমুদ্দিন ছাড়ার সময় ডালমিয়া অবশ্য বলেন, “রাজনীতির চর্চা করতে আসিনি। চা খেয়ে গেলাম!” যদিও বৈঠকের পরে গৌতমবাবু বলেছেন, “মুলায়ম আমাদের স্বাভাবিক মিত্র। আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ সাথী হিসাবেই তাঁকে পাশে পাব বলে বিবেচনা করছি, এ কথা ওঁদের নেতাকে আমরা বলেছি।” |
|
কিরণময় নন্দের সঙ্গে মুলায়ম সিংহ যাদব। রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে।—নিজস্ব চিত্র। |
মুলায়মের সঙ্গে সিপিএমের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। দলের দুই প্রয়াত নেতা জ্যোতি বসু ও হরকিষেণ সিংহ সুরজিতের সঙ্গে পরম হৃদ্যতা ছিল তাঁর। বসুর শতবর্ষ আয়োজনেও এখন উদ্যোগী হয়েছে মুলায়মের দল। ঠিক এক বছর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় তৃণমূল নেত্রী মমতা অবশ্য প্রাথমিক ভাবে মুলায়মকে পাশে নিয়েই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে উদ্যত হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত মুলায়ম তৃণমূলের পাশ থেকে সরে যাওয়ায় দু’দলের সম্পর্কে কিছুটা ‘জটিলতা’ তৈরি হয়েছে। মমতার ফেডেরাল ফ্রন্টের আহ্বান সংক্রান্ত প্রশ্নে এ দিন মুলায় সহাস্য জবাব দিয়েছেন, “রাজনৈতিক কোনও কথাবার্তা এখন হয়নি। মমতাজি’র সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এমনিতে ভাল। তবে মাঝেমাঝে উনি বড় রেগে যান!”
অ-কংগ্রেস এবং অ-বিজেপি বিকল্প গড়ার কাজে গতি যে লোকসভা ভোটের ফলাফলের পরেই আসতে পারে, তা অবশ্য এ দিন পরিষ্কার করে দিয়েছেন মুলায়ম। তাঁর কথায়, “কংগ্রেস ২০১৪ সালের ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। বিজেপি-র পক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হাসিল করা সম্ভব হবে না। আঞ্চলিক দলগুলির শক্তি বাড়বে। তখন ফ্রন্ট গড়ার তৎপরতা গতি পাবে।” সিপিএম সূত্রের খবর, মুলায়মের দূত ডালমিয়াকে দলের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধবাবু বলেছেন, দিল্লির কনভেনশন থেকে আজ যে ন্যূনতম কর্মসূচির খসড়া তৈরি হবে, তার ভিত্তিতে সমাজবাদী-সহ সব আঞ্চলিক দলের সঙ্গেই ফের কথা বলবে বামেরা।
গৌতমবাবুরও বক্তব্য, “দিল্লির সভা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিভিন্ন দলের অবস্থান, ওঁদের দলের মূল্যায়ন নিয়ে সমাজবাদী পার্টির কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বামেদের কাছে ওঁদের কিছু প্রত্যাশা আছে, সে কথাও উনি আমাদের বলেছেন।” প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের কর্মসূচি উপলক্ষে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমানবাবু এ দিন ছিলেন উত্তরবঙ্গে। কলকাতায় ফিরে আজ, সোমবারই তাঁর বামফ্রন্টের বৈঠক করার কথা। |
পুরনো খবর: জোট চেয়ে বিমানের কাছে জেডিইউ |
|
|
|
|
|