বারবার দুষ্কর্ম বাজারে, তবু বসেনি সিসিটিভি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
জনবহুল বেনাচিতি বাজারে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি লেগেই রয়েছে। অথচ দুষ্কৃতীদের হাতে নাতে ধরার কোনও উপায় নেই। জনবহুল এলাকায় সহজেই ভিড়ে মিশে যায় তারা। সহজে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার জন্য দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বা সিসিটিভি বসানোর কথা চলছে অনেক দিন ধরেই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাজারের ব্যবসায়ী মহল। তবে পুলিশ প্রশাসন ও বণিক সংগঠনের দাবি, দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।
বেনাচিতির স্টিল মার্কেট থেকে ভিড়িঙ্গি মোড়ের মধ্যে ২২টি ব্যাঙ্ক-সহ নানা আর্থিক সংস্থা রয়েছে। ভিড়িঙ্গি মোড়ে ২০০৯ সালে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ডাকাতি হয়। এর পরে ২০১০ সালে নাচন রোডেও একই ভাবে আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ডাকাতি হয়। তার পরেই বেনাচিতি বাজারে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কথা ওঠে। কোথায় কতগুলি ক্যামেরা লাগানো হবে তা নিয়ে পুলিশ ও দুর্গাপুর ‘চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর বৈঠকও হয়। ওই সংগঠনের তরফে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে সিসিটিভি লাগানোর খরচ বাবদ চাঁদাও তোলা হয়। কিন্তু শেষমেশ আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরত দিয়ে দেয় বণিক সংগঠন।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট চালু হওয়ার পরে নতুন করে উদ্যোগ শুরু হয়। কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বণিক সংগঠনটিকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের আর্জি জানানো হয়। বৈঠক হয় একাধিকবার। কিন্তু তার বেশি আর এগোয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে বেনাচিতির একটি বেসরকারি আর্থিক সংস্থায় দিনেরবেলা প্রকাশ্যে বড় ডাকাতি হয়। এর পরে ফের দু’পক্ষ নড়েচড়ে বসে। তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে, রাস্তার মোড়ে সিসিটিভি থাকলে দুষ্কৃতীদের হদিস মিলত। এর পরে কমিশনারেট থেকে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে চিঠি দিয়ে দ্রুত সিসিটিভি লাগাতে অনুরোধ করা হয়। পুলিশ জানায়, শুধুমাত্র ভিতরে নয়, ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথেও সিসিটিভি লাগানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে প্রায় চার মাস কেটে গেলেও এ নিয়ে আর কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলেই অভিযোগ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
বণিক সংগঠন যদিও এই অভিযোগ মানতে চায়নি। দুর্গাপুর ‘চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর প্রাক্তন সম্পাদক তথা বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য হরপ্রসাদ ঘোষাল জানান, পাঁচ-ছ’টি উৎসাহী সংস্থার তরফে তাদের কাছে ‘প্রজেক্ট রিপোর্ট’ জমা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, ৩০-৩২টি ক্যামেরা লাগাতে হবে। তাতে প্রায় আট লক্ষ টাকা খরচ হবে। তিনি বলেন, “সেই সব ‘প্রজেক্ট রিপোর্ট’ আমরা কমিশনারেটের কাছে জমা দিয়ে দিয়েছি।” বণিক সংগঠনটির সভাপতি রমাপ্রসাদ হালদার আবার জানান, কমিশনারেট থেকে অত্যাধুনিক ‘পিটিজেড ক্যামেরা’ লাগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই ক্যামেরা গাড়ির নম্বর প্লেটের ছবিও ধরে ফেলতে সক্ষম। সে জন্য বাজেট ১০ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, “বেনাচিতি বাজারের সমস্ত ব্যবসায়ী, ব্যাঙ্ক, আর্থিক সংস্থাগুলির কাছে বাজেট বৃদ্ধির কথা জানিয়ে নতুন করে সহযোগিতা চেয়েছি আমরা।” পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “আশা করছি মাসখানেকের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।”
|