ভোট কবে হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়ে চলেছে, তার পরেও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কোচবিহারে প্রচারে ঝড় তুললেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার জেলার চারটি জায়গায় সভা করে তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দিতে আবেদন করেন তিনি। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “রাজ্য জুড়ে উন্নয়নে জোয়ার এসেছে। কোচবিহারে বিশ্ববিদ্যালয়, সেতু তৈরি সহ নানা প্রকল্পের কাজ চলছে। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের প্রার্থীরা সর্বত্র জয়ী হবেন।” তবে তিনি নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা। তার পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে। কখনই যেন সাধারণ মানুষের ওই সংস্থার প্রতি বিশ্বাসে চিড় না ধরে তা দেখা উচিত।”
এদিন গৌতমবাবু বিকাল ৩ টা থেকে পর পর চারটি সভা করেন। প্রথম সভা করেন কোচবিহার ১ নম্বর সুটকাবাড়িতে। তারপর দিনহাটার গোসানিমারী, ওকড়াবাড়ি এবং ভেটাগুড়িতে সভা করেন। সকাল থেকেই বৃষ্টি চলছিল কোচবিহারে। দুপুর আড়াইটা নাগাদ ঝিরঝির বৃষ্টির মধ্যে তিনি সুটকাবাড়ির সভার উদ্দেশে বের হন। তিনি বলেন, “সভার সময়টুকু বৃষ্টি থেমে গেছে। হাজার হাজার মানুষ সভায় উপস্থিত হয়েছেন। মানুষের এই উন্মাদনা দেখে আমি খুশি।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে কোচবিহারে কি কি উন্নয়নের কাজ নিয়ে খতিয়ান তুলে ধরেন। যেখানে কোচবিহারে বিশ্ববিদ্যালয় চালু সিতাইয়ের আদাবাড়িঘাট সেতু নির্মাণের কাজের পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ মেডিক্যাল কলেজ মাদ্রাসা কলেজ স্থাপনের উদ্যোগের কথাও জানান।
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি তাঁর বক্তব্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নির্বাচনে কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, ১৯৭৮ সালের গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে বুথ ছিল ২২ হাজার, পুলিশ কর্মীর সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার। ১৯৮৩ সালের নির্বাচনে রাজ্যে বুথ ৩২ হাজার, পুলিশ কর্মীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে বুথ ছিল ৪০ হাজার, পুলিশ ছিল ৩২ হাজার, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বুথ ছিল ৫১ হাজার, পুলিশের সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজার।
তিনি বলেন, “এ রাজ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রয়োজন হয়নি। অথচ সিপিএম নির্বাচনে প্রত্যেকবার সন্ত্রাস করে জিতেছে। এবার গণতান্ত্রিক পরিবেশে ভোট হচ্ছে। অথচ ভোট করতে না দেওয়ার জন্য সবাই চক্রান্ত করছে। ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি জোটবদ্ধ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না।” এদিনের সভায় তৃণমূল নেতা আব্দুল জলিল আহমেদ ও খোকন মিয়াঁ উপস্থিত ছিলেন। |