চিকিৎসকহীন নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে, কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন, নেই ডাক্তার। সব মিলিয়ে চিকিৎসা বেহাল।
এমনই অবস্থা হাওড়ার নলপুরের রঘুদেববাটি পঞ্চায়েতের অন্তর্গত রঘুদেববাটি নিউ প্রাইমারি হেলথ সেন্টারের। স্বাস্থ্য দফতরের নিয়মানুযায়ী, উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য জেলার প্রতিটি ব্লকের একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (নিউ প্রাইমারি হেলথ সেন্টার) উন্নীত করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সেখানে থাকার কথা ৩ জন ডাক্তার, ৪ জন নার্স, ১২ জন স্বাস্থ্যকর্মী, ১ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান, ৪ জন গ্রুপ-ডি স্টাফ।
সাঁকরাইল ব্লকের নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির হাল অবশ্য শোচনীয়। স্বাস্থ্যকর্মীর আছেন মাত্র ৪ জন। রয়েছেন এক জন নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট, একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান এবং এক জন গ্রুপ-ডি স্টাফ। তা-ও সপ্তাহে প্রতিদিন প্রত্যেকে থাকেন না। স্বাস্থ্যকর্মীর চাহিদা মতো তাঁদের ব্লক হাসপাতালেও ডিউটি করতে হয়। সব থেকে সমস্যা ডাক্তার নিয়ে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও ডাক্তারই নেই। অথচ রোগীর চাপ এখানে যথেষ্ট। স্থানীয় বাসিন্দা হাফিজ আলি বলেন, “ওই হাসপাতালে গেলে শুধু ওষুধ ধরিয়ে দেয়। রোগ কী হয়েছে, তা তেমন করে কিছুই বলে না। আর বলবে কী করে, ডাক্তারবাবুই তো নেই।”

কবে মিলবে পরিষেবা? —নিজস্ব চিত্র।
প্রায় তিন বিঘে জমির উপর রয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। দিনে প্রচুর রোগীও আসেন এখানে। কিন্তু ডাক্তার না থাকায় ওষুধ দেন ফার্মাসিস্ট। কোনও কোনও সময় নার্সরাও সেই কাজ করেন। পরিকাঠামোগত নিয়মানুযায়ী, এই ধরনের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি হওয়া উচিত অন্তত ১০ শয্যার। কিন্তু এই হাসপাতালে শয্যা আছে মাত্র একটি। এ ছাড়াও, নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে থাকার কথা একটি অ্যাম্বুল্যান্স। নলপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেটি অনুপস্থিত।
মহিলা ও শিশুদের জন্য এখানে আছে একটি পিএইচসি সাবসেন্টার। কিন্তু সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা হলেও প্রসূতি মায়েদের আপৎকালীন পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। ওষুধের স্টোররুমের ছাদ থেকে জল পড়ে। ভবনটির দায়িত্বে জেলা পরিষদের পূর্ত দফতর। সেখানে বারবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি বলে জানালেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের। যদিও পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকাদার না পাওয়া, আর্থিক সমস্যা এবং ভোট এসে যাওয়ার কারণেই ওই ভবন মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
কিন্তু ডাক্তার নেই কেন? পরিষেবারও এতটা গলদ কেন?
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ঋতু রায় বলেন, “ওই হাসপাতালে যে ডাক্তার এসেছিলেন, তিনি কাজে যোগ দেওয়ার একমাস পর থেকে আর আসেননি। বারবার চিঠিচাপাটি করেও কোনও জবাব পাইনি। বিষয়টি আমি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও জানিয়েছি। আশা করছি, শীঘ্রই ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীর চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।” অন্য দিকে, হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “শুধু ওখানেই নয়। হাওড়ার প্রায় সব হাসপাতালেই ডাক্তারের সংখ্যা পঞ্চাশ শতাংশ কম। সরকারি বিভিন্ন পদ্ধতিগত কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়াতেও দেরি হয়। পরিষেবারও বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে। এ ব্যাপারে আমার জেলার স্বাস্থ্য অধিকর্তার সঙ্গে কথাও হয়েছে। আশা করছি, বছরখানেকের মধ্যেই সমস্ত সমাধান করা সম্ভব হবে।”
ততদিন স্বাস্থ্য পরিষেবার বদলে এই পরিস্থিতি সহ্য করতে হবে এলাকার মানুষকে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.