গভীর রাতে বৃষ্টিতে পাহাড়ি রাস্তা থেকে তিস্তা নদীর খাদে পড়ে একটি ছোট গাড়ির তিন আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে দার্জিলিং পাহাড়ের রম্ভি ফাঁড়ির হনুমানঝোরা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পাশাপাশি, বুধবার পাহাড়ের সেবক ফাঁড়ির করোনেশন সেতু লাগোয়া এলাকায় আরেকটি ছোট গাড়ি খাদে পড়ে গেলে ৬ জন মারাত্মক জখম হয়েছেন। তাঁদের শিলিগুড়ির সেবক রোড এলাকার এক নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। দুটি ক্ষেত্রেই পুলিশ গাড়ি দুটি উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে দার্জিলিং ও সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে টানা বৃষ্টি শুরু হয়। এর জেরে দার্জিলিং জেলার ৩১-এ জাতীয় সড়ক বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা ছোট ছোট ধস নামে। কয়েকটি এলাকায় রাস্তা চওড়া করার জন্য পাশের পাহাড়ের কাটা অংশ থেকে মাটি ও নুড়ি পাথর বৃষ্টির জলে সঙ্গে রাস্তা নেমে এসে রাস্তা সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়। সিকিমেরও বিভিন্ন এলাকায় টানা বৃষ্টি ধসের খবর মিলেছে। নাথুলাগামী জহরলাল নেহেরু মার্গ এবং চুনথাং যাওয়ার রাস্তাও এ দিন ধসের জেরে বন্ধ হয়ে যায়। পররে অবশ্য রাস্তা দুটি খুলেছে। |
রম্ভির কাছে খাদে পড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে যাত্রীদের উদ্ধার করার কাজ চলছে।
রাস্তার পাশে ভিড় করেছেন বাসিন্দারা। বুধবার ছবিটি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে দুটি ঘটনা ঘটেছে। তিন জন মারা গিয়েছেন। বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি এবং ছোট ছোট ধসের ঘটনাও ঘটেছে। দুর্ঘটনার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বিকালের পর দার্জিলিং থেকে মৃত তিনজন ছোট গাড়িটি নিয়ে শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। গভীর রাতে ওই ৩১-এ জাতীয় সড়কের ২১ মাইল এলাকায় ছোট একটি ধসও নামে। কাদা মাটিতে রাস্তা প্রচন্ড পিছল হয়ে পড়ে। সেখানেও কোনও ভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি প্রায় ৩০০ ফুট নিচে তিস্তার খাদে পড়ে যায়। এদিন সাত সকালে কয়েকজন গাড়ির চালক এবং বাসিন্দারা খাদে গাড়িটি দেখতে পান। রম্ভি ফাঁড়ির ওসি দীপঙ্কর বিশ্বাস সকালে এলাকায় গিয়ে লোকজনের সাহায্য নিয়ে তিনটি দেহ উদ্ধার করেন। মৃতরা হলেন দার্জিলিঙের আলুবাড়ির বাসিন্দা নিমা শেরিং ইয়লমো (৩৬), জোরবাংলো সিনচল রোডের মণি রাই (৩০) এবং কালিম্পঙের লোপচুর সন্তোষ গহতরাজ (৪৮)। গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
পাশাপাশি, এদিন সকালে সাড়ে ৮টা নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের গ্যাংটকগামী আরেকটি ছোট গাড়ি করোনেশন সেতু লাগোয়া এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে প্রায় ২০০ ফুট নিচে তিস্তার খাদে পড়ে যায়। খবর পেয়ে সেবক ফাঁড়ির ওসি নির্মল রায় এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়ে ছয়জন আহতকে উদ্ধার করে শিলিগুড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির সকল আরোহীই কমবিস্তর জখম হয়েছেন। আহতেরা সকলেই সিকিমের বাসিন্দা। |