খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এক বালককে খুনের সুপারি দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। ওই বালককে খুনের অভিযোগে ধরা পড়ল এক কলেজ ছাত্র-সহ দু’জন।
২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে খুন হন স্বরূপনগরের চারঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ইসাক গাজি। লবণগোলা বাজারে অনেকের সামনেই তাঁকে গুলি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। সে সময়ে ঘটনাস্থলে ছিল সুমন দাস নামে স্থানীয় ওই বালক। পরে সে ঘটনা কথা অনেককে বলে বেড়ায়। যা কানে ওঠে দুষ্কৃতীদেরও। সুমনের সঙ্গী ছিল অশোকনগরের একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। মধ্যমগ্রামে হোটেল ম্যানেজমেন্টও পড়েন কাঁচদহ গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক। পুলিশের দাবি, ওই যুবককে দলে টানে দুষ্কৃতীরা। সুমনকে খুনের জন্য ২০ হাজার টাকায় রফা হয়। লবণগোলা গ্রামের এক সব্জি ব্যবসায়ী-সহ আরও তিন জনকে রাজি করান ওই কলেজ ছাত্রটি। গত ৩০ এপ্রিল সকলের সঙ্গে গ্রামের এক বাড়িতে প্রসাদ খেতে গিয়েছিল সুমন। ধৃতদের জেরায় তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের দাবি, সেখান থেকে ফেরার পথে সুমনকে গাছে মাথা ঠুকে দেয় চার জন। আহত ছেলেটিকে একটি বাড়ির পিছনে নিয়ে গিয়ে মাথায় বাটালির ঘা মেরে খুন করা হয়।
সুমনের মায়ের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, ওই কলেজ ছাত্রের সঙ্গে তার যোগাযোগের কথা। তাঁকে আটকও করে পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই যুবকের মোবাইল কললিস্ট থেকে জানা যায়, ইসাককে খুনের ঘটনায় জড়িতদের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগের কথা। পুলিশ পিছু নিয়েছে বুঝতে পেরে বেশ কিছু দিন বাড়ি ছাড়া ছিলেন ওই যুবক। মোবাইলও বন্ধ করে দেন। মুম্বই পালানোর ছক ছিল তাঁর। কিন্তু এক বার মোবাইল চালু করতেই পুলিশ ওই যুবকের হদিশ পেয়ে যায়। সেই মতো মঙ্গলবার রাতে তেপুল গ্রাম থেকে ধরা পড়েন তিনি। জেরা করে সব্জি ব্যবসায়ী যুবকের সন্ধান পায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তাঁকেও।
বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এক ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ছিল ওই বালক। তাকে খুন করার জন্য দুষ্কৃতীরা চার জনকে বরাত দেয়। মোবাইলের কললিস্ট পরীক্ষার পরে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।” বুধবার ধৃতদের বসিরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের সাত দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্তদের আইনজীবী অরিন্দম গোলদার অবশ্য বলেন, “কেবলমাত্র একটা ফোন বাজেয়াপ্ত করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। প্রয়োজনে আমরা উচ্চ আদালতে যাব।” কলেজ ছাত্রটির দাবি, “পড়াশোনার সূত্রে মুম্বই যাওয়ার কথা ছিল। ওই ছেলেটিকে কে খুন করেছে আমরা জানি না। পুলিশ আমাদের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করেছে।” |