দিদির সম্ভ্রম বাঁচাতে গিয়ে বছর দুয়েক আগে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছিল বারাসতের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। এ বার সেই উত্তর ২৪ পরগনারই হাবরায় দিদির শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে গুরুতর জখম হল তার ভাই।
বারাসতের নৃশংসতার স্মৃতি এখনও অনেকের মনে টাটকা। কামদুনি, গাইঘাটার সাম্প্রতিক নারী নির্যাতনের ঘটনাতেও তোলপাড় গোটা রাজ্য। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল হাবরা।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ বিড়ার রবীন্দ্রপল্লি এলাকার বাসিন্দা, সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী নিজের ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। জানলা ভেঙে তার ঘরে ঢোকে সঞ্জয় ব্যাপারী নামে এক পড়শি যুবক। আগেও এলাকার মহিলাদের উত্যক্ত করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে সঞ্জয়ের দুই সঙ্গী ঘরের বাইরে ছিল। অভিযোগ, সঞ্জয় ঘুমন্ত অবস্থাতেই ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে। চিৎকারে পাশের ঘর থেকে মেয়েটির ভাই চলে এলে সঞ্জয়ের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে পালানোর সময়ে প্রতিবেশীদের হাতে ধরা পড়ে সঞ্জয়। শুরু হয় মারধর। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বছর ষোলোর জখম ওই কিশোরকে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ছাত্রীর পরিবারের তরফে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করা হয়েছে। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” বুধবার ধৃতকে বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
এই ঘটনা নিয়ে ওই ছাত্রী বা তার পরিবারের লোকজন বুধবার সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ এবং শাসক দলই তাঁদের সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে বারণ করেছে। জেলার এক পুলিশকর্তা অবশ্য অভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, “পুলিশের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সংবাদমাধ্যমের কাছে কথা বলতে বারণ করা হয়নি। নিচুতলার পুলিশকর্মীরা এমন কিছু করে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা রাউতারা পঞ্চায়েতের প্রধান কল্যাণ রুদ্রের সঙ্গে বারবার চেষ্টা করা হলেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। সঞ্জয়ের বাড়িতে গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি।
রাজ্যর খাদ্যমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। দল কখনই এই ঘটনা সমর্থন করে না। দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।” |