ভাবনা উপপুরপ্রধান নিয়ে
ঘাটালে নতুন পুরপ্রধান বিধায়ক ঘনিষ্ঠ বিভাস
বশেষে ঘাটাল পুরসভা একক ভাবে দখল করল তৃণমূল। নতুন পুরপ্রধান হলেন তৃণমূলের বিভাস ঘোষ। বুধবার ঘাটাল পুরসভার সভাঘরে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিভাস ঘোষকে পুরপ্রধানের শপথ বাক্য পাঠ করান ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারী। নিয়ম মতো ১৫ দিনের মধ্যে নতুন পুরবোর্ড গঠন করতে হবে। নতুন ভাবে উপপুরপ্রধান নির্বাচন করবেন পুরপ্রধান। এর আগে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের পুরবোর্ডে যিনি উপপুরপ্রধান ছিলেন, সেই উদয়শঙ্কর সিংহরায়ই থাকবেন কি না, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। কারণ পুরপ্রধান পদের অন্যতম দাবীদার উদয়বাবু নিজেই আর পুরনো পদে থাকতে চাইছেন না। এমনকী তৃণমূলেই আর থাকবেন কি না, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে খবর।
গত পুরভোটের ফলপ্রকাশের পরে ঘাটালে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট বেধে পুরবোর্ড গড়েছিল। কংগ্রেসের পুরপ্রধান হন জগন্নাথ গোস্বামী, তৃণমূলের উপপুরপ্রধান উদয়শঙ্কর সিংহ রায়।
পুরপ্রধানকে বরণ দলীয় কর্মীর।—নিজস্ব চিত্র।
কিছু দিনের মধ্যেই অবশ্য দুই দলের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়ে যায়। ক্রমশই তিক্ততা বাড়তে থাকে। সম্প্রতি কংগ্রেসের তিন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে পাশা বদলে যায়। তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে অনাস্থা আনে। এ দিকে কংগ্রেসের পুরপ্রধান নিজেই বোর্ড অফ কাউন্সিলর্স-এর কাছে পদত্যাগ করলে তৃণমূলের বোর্ড দখলের প্রক্রিয়াটি বেশ কিছু দিন পিছিয়ে যায়।
এত দিন হাতে পেয়েও অবশ্য তৃণমূল পুরপ্রধান ঠিক করেছে আগের দিন, মঙ্গলবার রাতে। উদয়বাবু ও বিভাসবাবুর মধ্যে পুরপ্রধান কে হবে তা নিয়ে কোন্দল চলছিল দীর্ঘ দিন। মঙ্গলবার রাতেই ঠিক হয় স্থানীয় বিধায়ক শঙ্কর দোলই ঘনিষ্ঠ বিভাস ঘোষ চেয়ারম্যান হবেন। অন্দরের খবর, তখন উদয়বাবুর অনুগামী কাউন্সিলর এবং নেতা-কর্মী-সমর্থকরা হতাশ হয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে যান। উদয়বাবুও ঠিক করে নেন, তিনি আর উপপুরপ্রধান হবেন না। তিনি বলেন, “আমাকে দল থেকে উপপুরপ্রধান থাকার জন্য আর্জি জানিয়েছিল। আমি তা নাকচ করে দিয়েছি।” কারণ জানতে চাইলে চুপ করে গিয়েছেন উদয়বাবু।
এ দিকে, বুধবার পুরসভায় একদিকে যখন পুরপ্রধান নির্বাচন চলছে, তখন পুরসভার মোড়ে দলের প্রকাশ্য সমাবেশ শুরু হয়। কিছুক্ষণ পরই নতুন পুরপ্রধান বিভাস ঘোষ সঙ্গী ৭ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। উদয়বাবু মঞ্চে না আসায় কর্মীদের মধ্যে ছোটাছুটি পড়ে যায়। পরে দলের নেতারা উদয়বাবুকে মঞ্চে নিয়ে আসেন। কিন্তু তিনি কোনও বক্তব্য রাখেননি।
সভায় অবশ্য ব্লক ও মহকুমা স্তরের অধিকাংশ নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলই, ব্লক সভাপতি অজিত দে, যুব নেতা সুদীপ মণ্ডল, দলের শহর সভাপতি অলোক দে, সম্পাদক অরুণ মণ্ডল প্রমুখ।
বিধায়ক শঙ্কর দোলই বলেন, “এ বার আমরা ঘাটাল পুরসভায় একক ভাবে ক্ষমতায়। সরকারও আমাদের। এতদিন ধরে বঞ্চিত ঘাটাল শহরে এ বার বন্যা নিয়ন্ত্রণ থেকে পার্ক, নিকাশিনালা তৈরি-সহ নানা উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।” পুরবোর্ডে কংগ্রেসের সঙ্গী হয়ে এত দিন ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও বিধায়কের মতোই বক্তারা প্রত্যেকে “গত তিন বছরে ঘাটাল শহরে কোনও উন্নয়ন হয়নি” বলে মন্তব্য করতে থাকেন। যা শুনে সভায় উপস্থিত লোকজন হাসাহাসি শুরু করেন। কেউ কেউ আবার ক্ষোভ প্রকাশও করেন। শহরের এক বাসিন্দা বলেন, “ক্ষমতায় থেকেও এই ভাবে দায় এড়াতে পারে না তৃণমূল। যদি তিন বছরে কোনও কাজই না হয় তা হলে জোট ছেড়ে আসতে তৃণমূল এত দেরি করল কেন?”
বিদায়ী পুরপ্রধান তথা কংগ্রেস নেতা জগন্নাথ গোস্বামী বলেন, “এ সব আজগুবি কথার কোনও দাম নেই। গত তিনs বছরে পুরসভা কত টাকা পেয়েছে, আর ১৭টি ওয়ার্ডে কী কাজ হয়েছেতার সঠিক তথ্য কেউ পুরসভায় গিয়ে জানতে চাইলেই পেয়ে যাবেন। আমরা দলের পক্ষ থেকেও তা প্রকাশ করব। তখনই সাধারণ মানুষ সব বুঝতে পারবেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.