|
|
|
|
প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুপস্থিত ৭০০ ভোটকর্মীকে শো-কজ
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুপস্থিত থাকার জন্য জেলার প্রায় ৭০০ সরকারি কর্মী-আধিকারিককে শো-কজ করল জেলা প্রশাসন। শিবিরে অনুপস্থিত ওই কর্মী-আধিকারিকদের কাছে শো-কজের চিঠিও পাঠানো হয়েছে। চিঠির সদুত্তর না মিললে তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। অি তরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) পাপিয়া ঘোষ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, “যাঁরা প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের শো-কজ করা হয়েছে। অনুপস্থিতির কারণও জানতে চাওয়া হয়েছে।”
আর শো-কজের উত্তর না দিলে?
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “তখন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতেই হবে।” তবে ইতিমধ্যে অবশ্য শো-কজের চিঠি পেয়ে অনুপস্থিতির কারণ জানাতে শুরু করেছেন শিবিরে অনুপস্থিত কর্মী-আধিকারিকেরা। চিঠির জবাবে কেউ শারীরিক অসুস্থতার কথা জানাচ্ছেন। কেউ বা জরুরি কাজে বাইরে চলে যাওয়ার কথা জানাচ্ছেন। বুধবারই এক কর্মী কালেক্টরেটে এসে জেলার ওসি (ইলেকশন) বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন, “মায়ের শরীর খুব খরাপ। কোমায় চলে গিয়েছেন। মায়ের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত ছিলাম। তাই প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে পারিনি।”
জেলা প্রশাসনেরই এক সূত্রে খবর, ঘাটাল মহকুমায় প্রায় ১০০ জন, মেদিনীপুর ও খড়্গপুর-এই দুই মহকুমায় ৫০০-রও বেশি কর্মী-আধিকারিকের কাছে শো-কজের চিঠি পাঠানো হয়েছে। সরকারি কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ নির্বাচনের ডিউটি এড়াতে চান। এ জন্য নানা অজুহাত দেখান। জেলা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য খবর, শো-কজের সমস্ত উত্তরই খতিয়ে দেখা হবে। কেউ ইচ্ছে করে প্রশিক্ষণ শিবির এড়িয়ে গিয়েছেন বলে প্রমাণিত হলে নির্বাচন-পর্ব শেষে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।” তবে, অনুপস্থিতির সংখ্যাটা যেহেতু প্রায় ৭০০, তাই নির্বাচন পরিচালনায় কোনও সমস্যা হবে না-বলেই জানাচ্ছে ওই সূত্র। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, সাধারণত ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ভোটকর্মী রাখা হয়। সেই হিসেবে অতিরিক্ত কর্মীর সংখ্যাটা ২ হাজারেরও বেশি। ফলে, এ ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। যদি অনুপস্থিত কর্মীর সংখ্যা আরও বেশি হত, সে ক্ষেত্রে সামান্য হলেও সমস্যা তৈরি হত।
পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৭৪৭টি বুথ রয়েছে। প্রতিটি বুথে পাঁচ জন করে ভোটকর্মী থাকার কথা। একজন করে প্রিসাইডিং অফিসার, ফাস্ট পোলিং অফিসার, সেকেন্ড পোলিং অফিসার, থার্ড পোলিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার। সাধারণত, প্রিসাইডিং অফিসার বুথের পুরো বিষয়টি দেখভাল করেন। তাঁর উপরই প্রধান দায়িত্ব বর্তায়। ফাস্ট পোলিং অফিসার ভোটারদের চিহ্ণিত করেন। তাঁর সই নেন। স্লিপ দেন। সেকেন্ড পোলিং অফিসার পঞ্চায়েত সমিতির ব্যালট পেপার দেন। এবং থার্ড পোলিং অফিসার জেলা পরিষদের ব্যালট পেপার দেন। আর ফোর্থ পোলিং অফিসার ভোটারদের হাতে কালি দেবেন। প্রয়োজনে কী ভাবে ব্যালট পেপার মুড়তে হয়, দেখিয়ে দেবেন। এক-একটি বুথে পাঁচজন করে ভোটকর্মী থাকলে মোট ভোটকর্মী প্রয়োজন ২৩ হাজার ৭৩৫ জন। সঙ্গে ১০ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থাৎ, ২ হাজার ৩৭৪ জন। সব মিলিয়ে ২৬ হাজার ১০৯ জন ভোটকর্মীর কাছে প্রশিক্ষণ শিবিরের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। প্রশিক্ষণ শুরু হয় ১৪ জুন থেকে। প্রিসাইডিং অফিসার এবং ফাস্ট পোলিং অফিসারদের নিয়ে দু’টি শিবির হয়। অন্য দিকে, সেকেন্ড পোলিং অফিসার, থার্ড পোলিং অফিসার এবং ফোর্থ পোলিং অফিসারদের নিয়ে একটি শিবির হয়। বস্তুত, সুষ্ঠু ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সারতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। তাদের দাবি, প্রস্তুতির কাজ ভালো ভাবেই এগোচ্ছে। |
|
|
|
|
|