হঠাৎ কী হল বলুন তো? এ যেন মহামারি— বুধবার সারা দিন অল ইংল্যান্ড ক্লাব জুড়ে শুধু এই গুঞ্জন।
স্টিভ দারসিসের খবরটা দিয়ে শুরু। তার পর একে একে আসতে শুরু করল দুঃসংবাদ। যেন কোথাও বড় কোনও বিপর্যয় নেমে এসেছে। একের পর এক আসছে ক্ষয়-ক্ষতির খবর। বুধবার সারাটা দিন উইম্বলডনে বসে তো সে রকমই মনে হচ্ছিল।
দারসিসের কাঁধে চোটের জন্য টুর্নামেন্ট থেকে সরে যাওয়ার খবরটা সকালে অল ইংল্যান্ড ক্লাবে ঢুকতে ঢুকতেই পেলাম। নাদালকে সে দিন কি ভাবেই না হারাল ছেলেটা। অথচ দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে নামতেই পারবে না! অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যখন পর পর দুঃসংবাদ আসতে শুরু করল তখন আর কিছুই অবিশ্বাস্য নয় আমার কাছে। যে ঘটনার সাক্ষী কোনও দিন হইনি, তা এ বারের উইম্বলডনেই হতে হল। এক দিনে এত চোট, এত অঘটন! বিপর্যয় ছাড়া কী? |
কালো বুধবারে উইম্বলডনে অঘটনের শিকার লিয়েন্ডারও। ছবি: গৌতম ভট্টাচার্য |
ক্যারোলিন ওজনিয়াকি, অ্যানা ইভানোভিচরা তো চোটের জন্যই ঠিকমতো খেলতে না পেরে হার মানতে বাধ্য হল। শারাপোভাও শুনলাম ম্যাচের মাঝখানে ফিজিওকে নিয়ে অনেকটা সময়ই কাটাল। সানিয়াদের ডাবলস ম্যাচটা দেখতে দেখতে এই কথাগুলোই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আজারেঙ্কা না কি প্রেস কনফারেন্সে এসে সরাসরি কোর্টকেই দায়ী করেছে। ওর মতে, খেলোয়াড়দের এত চোট-আঘাতের জন্য ঘাসের কোর্টই দায়ী। কেন ওর এ কথা মনে হল জানি না। আমি কিন্তু একমত হতে পারছি না, আসলে ঘাসকোর্টে নেমেই সঙ্গে সঙ্গে দারুন খেলাটা মোটেই সোজা কাজ নয়। এমনিতেই ঘাসের কোর্টে বলের গতি কমে যায়। তাই খেলোয়াড়দের নিজেদের মুভ করাতে রীতিমতো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়। তাও তো এখনকার খেলোয়াড়রা ঘাসের কোর্টের জন্য তৈরি বিশেষ জুতো পরে নামে। আমাদের সময় তো এ সব কিছুই ছিল না।
বছরের বেশিরভাগ সময়ই পেশাদার সার্কিটের খেলোয়াড়রা যে হার্ডকোর্টে বা সিন্থটিক কোর্টে খেলে থাকে, তার চেয়ে কিন্তু ঘাসের কোর্টে খেলা কঠিন এবং প্রথম দিকের রাউন্ডগুলোতে নিজেদের মানিয়ে নিতে হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু এরা দেখছি এই কাজটাই ঠিকমতো করতে পারছে না। আর এটা ঠিক মতো করতে না পারলে হঠাৎ চোট আঘাত হবেই। আসলে সারা বছর ধরে এত হার্ডকোর্ট টুর্নামেন্ট খেলার জন্যই এই কেলেঙ্কারি। এখানেই ফেডেরারের সঙ্গে অন্যদের তফাৎ। এতেই ওর জাত বোঝা যায়।
এত খারাপের মধ্যে অবশ্য মহেশ ও সানিয়াদের জেতাটা মরুদ্যানের মতো। দিনের শেষে এই দুটো খবরই শান্তি দিল। |