|
|
|
|
রাজমিস্ত্রি, ঠিকাশ্রমিক ছিলেন অভিযুক্তরা |
প্রাসাদোপম বাড়ি পঞ্চায়েত প্রধানদের,
তল্লাশি চালাল দুর্নীতি দমন দফতর |
স্বপন সরকার • পটনা |
অজ-গ্রামের ওই পঞ্চায়েত প্রধানদের সম্পত্তির হিসেব দেখে চোখ কপালে উঠেছে আর্থিক অপরাধ দমন শাখার অফিসারদের। এক সময়ের রাজমিস্ত্রি, ঠিকাশ্রমিক, বাজনাদারের হাতে এখন কোটি কোটি টাকা, গাড়ি, বাড়ি, একরের পর একর জমি— অনেকটা যেন সিনেমার গল্পের মতোই।
বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযোগ উঠছিল অনেক দিন ধরেই। সম্প্রতি কয়েকটি জেলায় পঞ্চায়েত প্রধানদের বেআইনি সম্পত্তির খোঁজে তল্লাশি চালায় আর্থিক অপরাধ দমন শাখা। তাতেই তাঁদের রাজনৈতিক ‘ফায়দা’র ছবিটা একেবারে স্পষ্ট।
প্রশাসনিক সূত্রে মিলেছে কয়েকটি উদাহরণও। যেমন, গোপালগঞ্জের কুচাইকট ব্লকের প্রধান আগে ঠিকাশ্রমিক ছিলেন। টানাটানির সংসার ছিল তাঁর। পঞ্চায়েতের ভোট জিততেই সব কিছুই বদলাতে শুরু করে। আর্থিক অপরাধ দমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পঞ্চায়েত প্রধানের প্রাসাদোপম বাড়ির সামনে এখন দামী গাড়ির সারি। নামে-বেনামে জমিও রয়েছে প্রচুর। সারণ জেলার দিলওয়ার ব্লকের প্রধান আগে ছিলেন রাজমিস্ত্রি। বেগুসরাইয়ের মাথিহানি ব্লকের প্রধান অর্কেষ্ট্রাতে বাজনা বাজাতেন। দু’জনেরই এখন অঢেল টাকা।
কী ভাবে ওই টাকা লোপাট করছে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধানরা?
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ থেকে ইন্দিরা আবাস যোজনা, পিছিয়ে থাকা এলাকার উন্নয়নের জন্য অনুদান— কেন্দ্র, রাজ্যের এ সব প্রকল্পের টাকা গ্রামের লোকেদের হাতে যায় ওই প্রধানদের মাধ্যমেই। অভিযোগ, টাকার হিসেবে গরমিল করেই কোটি কোটি টাকা ‘মুনাফা’ লুটছেন তাঁরা।
এক সময় ‘নুন আনতে পান্তা ফুরনো’ লোকেদের জীবনযাত্রার এই পরিবর্তন অনেকেরই চোখ এড়ায়নি। তাঁদের কাছ থেকে খবর পৌঁছত আর্থিক অপরাধ দমন শাখায়। অভিযুক্তদের উপর শুরু হয় নজরদারি। রাজ্য পুলিশের ডিজিপি অভয়ানন্দ বলেন, “রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক অপরাধ কমাতে চাই। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উপরও নজরদারি চলবে।” সম্প্রতি, আর্থিক অপরাধ দমন শাখার অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে পঞ্চায়েত প্রধানদের বেআইনি সম্পত্তির হদিশ খোঁজার খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে ডিজিপি জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করতে হবে। অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে সংগৃহীত ওই তথ্যের ভিত্তিতেই।
আর্থিক অপরাধের মোকাবিলায় অনেকদিন ধরেই সচেষ্ট বিহার সরকার।
বেআইনি অভিযোগে অনেকের সম্পত্তিই বাজেয়াপ্ত করে ওই টাকায় স্কুল গড়েছে প্রশাসন।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন প্রধানত সরকারি অফিসারদের বেআইনি সম্পত্তির উপর নজরদারি থাকত তদন্তকারীদের। এখন পঞ্চায়েত প্রধানদের মতো জন-প্রতিনিধিদের দিকেও নজর রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|