অবশেষে ভেঙে গেল বাঁধ। ডলারে টাকা বুধবার ১০৬ পয়সা পড়ে নেমে গেল ৬০-এরও নীচে। যা ঠেকাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তৎপরতা হার মানল টাকার অবাধ পতনের কাছে।
বুধবার লেনদেনের শুরু থেকেই পড়তে থাকে টাকা। এক সময়ে তা দিনের সর্বনিম্ন ৬০.৭৬-এ নামলেও বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬০.৭২ টাকা। প্রতি ডলারের দাম ৫৯.৯০ টাকা ছোঁয়ার পরই ব্যাঙ্ক মারফত ডলার বিক্রির মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে তাতে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি। পতনের জন্য যে-সব কারণকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা, সেগুলি হল:
• বিদেশিদের ভারতীয় শেয়ার বাজার থেকে লগ্নি তুলে নেওয়া।
• চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগ।
• মাসের শেষে আমদানিকারীদের বাড়তি ডলারের চাহিদা।
• বিশ্বে ডলারের দামে তেজী ভাব। |
বিশেষজ্ঞদের মতে, টাকার মূল্য পতনেই আমদানির খরচ বাড়ায় চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি বাড়ছে। অন্য দিকে, ওই ঘাটতির কারণেই ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কায় ভারতীয় বাজারে শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করে লগ্নি তুলে নিচ্ছেন বিদেশিরা। যার পরিণতি ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি ও টাকার আরও পতন। এই আবর্ত থেকে টাকাকে বার করে আনতে অর্থনীতির হাল ফেরানো ছাড়া গতি নেই। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, কেন্দ্র এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ডলারের দামে রাশ টানার ব্যবস্থা না-নিলে ৬১ বা ৬২-র নীচে নামতেও দেরি হবে না টাকার। বুধবার বিদেশি আর্থিক সংস্থার শেয়ার বিক্রির চাপে এবং টাকার পতন নিয়ে আতঙ্কের জেরে সেনসেক্সও পড়েছে ৭৭ পয়েন্ট। একদিনেই ৫৫০ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে বিভিন্ন বিদেশি সংস্থা।
পাশাপাশি এ দিন ভারতে এক মাসে সবচেয়ে নীচে নামে সোনা। যদিও লেনদেনকারীরা মনে করছিলেন, নিরাপদ লগ্নির মাধ্যম হিসেবে টাকার পতনে বাড়বে সোনার চাহিদা এবং দাম। তবে বিশ্ব বাজারে সোনার দামে ধসই এ দিন ভারতে টেনে নামায় সোনাকে। ইউরোপ-আমেরিকায় মন্দা কাটার আশাতেই প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নামে সোনা। সোনার বদলে শেয়ার-বন্ডে লগ্নি লাভজনক হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। লন্ডনের বাজারে এ দিন প্রতি আউন্স সোনা প্রায় ৩.৮% পড়ে নেমে যায় ১২২৩.৫৪ ডলারে। |