যে আদিবাসী কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের জামালপুর গ্রামে, তার সৎ বাবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বুধবার ভোরে বছর বাহাত্তরের ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনাটি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
মঙ্গলবার পূর্বস্থলী থানায় ওই কিশোরীর মা অভিযোগ করেছিলেন, সোমবার রাতে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তার মেয়ে। পর দিন তাঁরা জানতে পারেন, মেয়ে পাশের গ্রাম পাটুলিতে রয়েছে। সেখানে গেলে মেয়ে জানায়, রাতে রাস্তার ধারে তাকে তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক গণধর্ষণ করেছে। মেয়েটির মা পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার বিকেলেই মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় কালনা হাসপাতালে।
বুধবার ভোরে ওই কিশোরীর সৎ বাবার মৃত্যুর পরে পুরো বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। এ দিন সকালে মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য অঞ্জু কর। পূর্বস্থলী থানায় ‘আদিবাসী অধিকার রক্ষা মঞ্চ’-এর তরফে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাতে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেফতার করে কড়া সাজার ব্যবস্থা করতে হবে ও কিশোরীর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে হবে। ঘটনার নিন্দা করে থানায় বিক্ষোভ দেখান সিপিএম নেতা-কর্মীরা। সিপিএমের পূর্বস্থলী জোনাল সম্পাদক সুব্রত ভাওয়ালের দাবি, “মেয়ের উপরে অত্যাচারের ঘটনা সহ্য করতে না পেরেই জামালপুর গ্রামের আদিবাসী পরিবারের ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চেয়েছি।”
সিপিএম থানায় বিক্ষোভ দেখানোর পরেই তৃণমূল নেতা-কর্মীরা জামালপুর ও আশপাশের নানা গ্রামের আদিবাসী পরিবারের লোকজনকে নিয়ে থানায় যান। পুলিশকে তাঁরা জানান, ওই বৃদ্ধের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। অথচ ঘটনাটি নিয়ে সিপিএম অযথা এলাকায় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। পূর্বস্থলীর (উত্তর) তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গণধর্ষণের যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, পুলিশ তার তদন্ত করছে। অথচ সিপিএম বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি শুরু করে দিয়েছে।” পূর্বস্থলী ২ ব্লকে জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূলের প্রার্থী বিপুল দাসের দাবি, “ওই কিশোরীর সৎ বাবা দীর্ঘদিন ধরেই নানা রোগে ভুগছিলেন। বুধবার ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা দুর্ভাগ্যজনক।”
এ দিন কালনা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি দেয় ওই কিশোরী। পুলিশ জানায়, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে। |