চার বছর আগে যেখানে আটকে দেওয়া হয়েছিল তাঁর পথ, বুধবার সেখান থেকে কিছুটা দূরে মঙ্গলকোটের খুদরুন মোড়ে নির্বাচনী জনসভা করলেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার সন্ধ্যায় তাঁর সভামঞ্চ তৈরি হয়েছিল যেখানে, তার উল্টো দিকেই রয়েছে নিহত নেতা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের নামাঙ্কিত মঙ্গলকোট উত্তর-পূর্ব লোকাল কমিটির দফতর। এ দিন পার্থবাবুর সভা চলাকালীন ওই অফিস অবশ্য বন্ধ ছিল।
২০০৯ সালের ১৫ জুন খেঁড়ুয়া গ্রামের কাছে লালবাবা আশ্রমের সামনে খুন হন সিপিএমের তৎকালীন জেলা কমিটির সদস্য তথা বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়। সেই ঘটনা নিয়ে অশান্তির আগুন জ্বলে মঙ্গলকোটে। তখন পার্থবাবু খেঁড়ুয়া গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন। |
জনসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়। |
এ দিন পার্থবাবু অভিযোগ করেন, “সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনী পথ আটকে দিয়েছিল। রাত পর্যন্ত রাস্তার উপরে টুল নিয়ে বসেছিলাম। এক দিকে টর্চের আলো, অন্য দিকে সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনী। বাম জমানার পুলিশ ছিল দর্শক!”
পার্থবাবু এ দিন আরও বলেন, “আমি শুধু নির্বাচনী সভা করতে আসিনি, সে দিন যে সব বন্ধু আতঙ্কের মধ্যেও আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।” এ দিন যেখানে সভা হয়, ২০০৯ সালের ৮ অগস্ট সেই মাঠেই তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও মদন মিত্রের সভায় লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। পোড়ানো হয়েছিল পুলিশের গাড়ি। খুদরুন মোড়ে তৃণমূল নেত্রী তথা তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সভা করে গিয়েছিলেন।
|
সিপিএম অফিসের সামনে সভা শুরুর অপেক্ষা। |
এ দিন আউশগ্রামের ছোঁড়া হাটতলায় নির্বাচনী জনসভা করেন পার্থবাবু। সেখানে তিনি দাবি করেন, “আমরা ভোট চাই। ওরা চায় ঘোঁট। আমরা আইনের শাসন মেনে পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছি। ওরা সেটাকে বানচাল করতে আদালতে গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট নির্দিষ্ট সময়েই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শুনেছি, বুদ্ধবাবু বর্ধমানে এসে সন্ত্রাসের কথা বলেছেন। বলেছেন, কবে পঞ্চায়েত ভোট হবে তার ঠিক নেই। আমি জানতে চাই, যদি ভোটই না হবে, তাহলে কেন তিনি বর্ধমানে সভা করতে এসেছিলেন?” তবে এ দিন আউশগ্রামে সভামঞ্চে পার্থবাবুর উপস্থিতিতেই রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী তথা জেলার তৃণমূল নেতা মলয় ঘটক বলেন, “এখনও এখানে বলতে পারছি না, পঞ্চায়েত ভোট কবে থেকে শুরু হবে। তবে আমরা ভোট করাতে প্রস্তুত।” |
আউশগ্রামে সভার আগে হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। —নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন সন্ধ্যায় জামালপুরের জৌগ্রামে জনসভা করে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ফের বলেছেন, “ইতিমধ্যে সরকারি কর্মীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া শুরু করেছেন। তাই কোনওমতেই ভোট আটকানো যাবে না।”
পার্থবাবু এ দিন মঙ্গলকোটে বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনাদের সামনে রেখে সিপিএম-কংগ্রেস রাজনীতি করতে চাইছে। আপনারা চক্রান্তের পথে পা বাড়াবেন না।”
|