নম্বর জাল করে লটারির টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে দুর্গাপুরের একটি হোটেল থেকে তিন জনকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করল দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকার পুলিশ। তারা একটি আন্তঃরাজ্য চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশের দাবি। তাদের কাছ থেকে সিকিম সরকারের কয়েকশো লটারি টিকিট বাজেয়াপ্ত করা হয়। এছাড়াও তাদের ঘর থেকে বেশ কিছু ব্যাথা নিরোধক বড়িও পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি নেশা করতে ব্যবহার করা হত বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “আমাদের অনুমান, দু’বছর ধরে তারা এই কাজ করছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দলের বাকিরা কে কোথায় কাজ করছে, তা জানার চেষ্টা করা হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চক্রের পাণ্ডা আগ্রার সামসাবাদের বাসিন্দা সুনীল কুমার। সে বিহারের সীতামারির অলোক সিংহ ও বালো অমৃত সাহু-সহ আরও অনেককে দলে নেয়। বিভিন্ন লটারি সংস্থার সর্বনিম্ন মূল্যের পুরস্কার যে যে নম্বরে লাগে, সেই নম্বরগুলি জাল করে তারা টাকা তুলে নিত। দু’বছরে তারা প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা এভাবে হস্তগত করেছে। তবে তাদের এই কাজের জন্য কোনও বৈধ প্রাপক বঞ্চিত হননি। একই নম্বরে প্রাপক পুরস্কার পেয়েছেন এবং জাল টিকিট দিয়ে ওই দলটিও টাকা তুলেছে। ক্ষতি হয়েছে লটারি সংস্থাগুলির। |
উদ্ধার হওয়া জাল টিকিট। দুর্গাপুর থানায় তোলা নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন লটারি সংস্থা নগদ অর্থ পুরস্কার দিয়ে থাকে। বড় অঙ্কের অর্থমূল্যের প্রথম পুরস্কার একজনই পান। প্রথম দিকের অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপকের সংখ্যাও খুব বেশি থাকে না। কিন্তু শেষের দিকে কম অর্থমূল্যের পুরস্কার পান বেশ ক’জন। প্রতি দিন বিকেলে কোন কোন নম্বরে পুরস্কার লেগেছে, তার তালিকা বের করে লটারি সংস্থাগুলি। সেই তালিকা দেখেই যে যে নম্বরে স্বল্প মূল্যের পুরস্কার লেগেছে, তার কাছাকাছি নম্বরের টিকিট জোগাড় করে ব্লেড দিয়ে আসল সংখ্যা তুলে রাসায়নিক দিয়ে নকল সংখ্যা লিখে এজেন্সির কাছে তা নিয়ে গিয়ে টাকা তুলে নিত দলটি। পুলিশ জানায়, স্বল্প মূল্যের অর্থ পুরস্কার পেলে অনেকেই আর তা তুলতে যান না। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাত ওই দলটি। দু’একজন হয়তো আসল টিকিট নিয়ে যেতেন। এজেন্সি তাঁদেরও পুরস্কার দিতে বাধ্য হত। অন্য দিকে, এখনও পর্যন্ত লটারি সংস্থাগুলি তাদের সব কাজকর্ম ‘অন লাইন’ বা ‘কম্পিউটারাইজড’ করে ফেলেনি। ফলে একটি টিকিটে টাকা তুলে নেওয়ার পরেও একই নম্বরে অন্য কোনও এজেন্সির কাছ থেকে পুরস্কারের টাকা তুলতেও কোনও সমস্যায় পড়তে হত না দলটিকে। এই ভাবে দিনে গড়ে দেড়শো টিকিট থেকে টাকা তুলত তারা।
পুলিশের দাবি, বছর দুয়েক ধরে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ড, দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ড, বেনাচিতি, ভিড়িঙ্গি, আশিস মার্কেট এলাকায় এমন ঘটনাই ঘটছে। লটারি সংস্থার তরফে এজেন্সি মারফত পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। বুধবার রাতে ধরা পড়ে তিন জন। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “একটি আন্তঃরাজ্য চক্র গড়ে উঠেছে বলে মনে হচ্ছে। কী ভাবে চক্রটি জাল ছড়িয়েছে, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এজেন্সির কেউ ওই দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মদের দোকানে লুঠ। একটি বিলিতি মদের দোকানের শাটার ভেঙে বেশ কিছু সামগ্রী ও নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। ঘটনাটি ঘটেছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে অন্ডাল মোড়ে। প্রসেনজিৎ সাহা নামে ওই দোকানি জানান, বুধবার সকালে তিনি দোকান খুলতে এসে দেখেন শাটার ভাঙা। বেশকিছু সামগ্রী ও নগদ টাকা উধাও। অন্ডাল থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। |