মতভেদ ছিল বই ছাপানোর বরাতের প্রক্রিয়া নিয়ে। তার মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সচিবের ডানা ছাঁটলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মুক্তিনাথ চট্টোপাধ্যায়। সচিবের বেশ কিছু দায়িত্ব কেড়ে সেগুলি নিজের হাতে নিয়েছেন তিনি। এতে সংসদে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, প্রয়োজনে তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
সম্প্রতি জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে সভাপতি জানিয়েছেন, সংসদের উপ-সচিব, সহ-সচিবদের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজকর্ম সংক্রান্ত ফাইল সচিবের কাছে না-পাঠিয়ে সরাসরি তাঁর কাছে পাঠাতে হবে। সচিব সংসদের অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম দেখাশোনা, কর্মীদের হাজিরা দেখা ইত্যাদি কাজ করবেন। বিকাশ ভবন বা কোনও বৈঠকে যেতে হলে সংসদ ছাড়ার আগে সভাপতির কাছে সচিবকে অনুমতি নিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
সংসদ সূত্রের খবর, বই ছাপার বরাত দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে সভাপতির বিরোধিতা করেছিলেন সচিব অচিন্ত্য পাল। লিখিত ভাবে নিজের আপত্তির কথা জানিয়ে দেন তিনি। সেই কারণেই সভাপতি এমন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন বলে মনে করছেন সংসদের অনেকে। মুক্তিনাথবাবু বা অচিন্ত্যবাবু বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মঙ্গলবার জানান, এ-রকম কাজ সভাপতির এক্তিয়ারভুক্ত হলে তাঁর কিছু বলার নেই। তবে আইন বা নিয়মবিধি যাচাই করে যদি দেখা যায় যে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কোনও ভাবেই সভাপতির এক্তিয়ারে পড়ে না, সে-ক্ষেত্রে তিনি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
সভাপতির এমন নির্দেশ সংসদের আইনের পরিপন্থী বলে মনে করছেন প্রাক্তন সংসদ-কর্তাদের অনেকে। এক প্রাক্তন কর্তা বলেন, “আইনে প্রত্যেক অফিসারের কাজ নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। সচিব সংসদের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করেন। তাঁকে এড়িয়ে এ ভাবে সরাসরি সভাপতির কাছে ফাইল পাঠানো যায় না।” এতে সংসদের ভিতরেও এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে বলে আশঙ্কা ওই কর্তার। তিনি বলেন, “সচিবকে ডিঙিয়ে সব কাজ করা হলে উপ-সচিব, সহ-সচিবেরা সচিবকে হয়তো মানতে চাইবেন না। তখন চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।” |