শ্বশুরবাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় এক বধূর দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট থানার হরিশপুরে। মৃত মনিকা সমাদ্দারের (২৫) একটি মেয়েও রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানান, এ দিন সকালে ওই বাড়ি থেকে এক নাগাড়ে শিশুর কান্না শুনে তাঁরা গিয়ে দোতলার ঘরে মনিকদেবীকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। বাড়িতে কেউ ছিলেন না। তাঁরাই মনিকাদেবীকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মনিকাদেবীর স্বামী উজ্জ্বল সমাদ্দার গত ১৩ মে দোতলার ওই ঘরেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। তিনি সানমার্গ নামে একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন। অভিযোগ, সংস্থার জন্য আমানতকারীদের কাছ থেকে তিনি প্রায় চার লক্ষ টাকা তুলেছিলেন। সারদা কাণ্ডের জেরে আমানতকারীরা তাঁদের আমানত ফেরত চাইলে উজ্জ্বলবাবু তা ফেরত দিতে না পারায় তাঁর উপরে চাপ বাড়তে থাকে। চাপ সামলাতে না পেরে তিনি আত্মঘাতী হন। সেই সময় স্ত্রী মনিকাদেবী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। দিন কুড়ি আগে তাঁর একটি মেয়ে হয়। মেয়েকে সাহায্য করতে মা জ্যেৎস্নাদেবী তাঁর কাছে এসেছিলেন।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে শ্বশুর নিমাইবাবু মাঠের কাজে গিয়েছিলেন। শাশুড়ি মীরাদেবীও বাড়ি ছিলেন না। তিনি খোলাপোতায় গিয়েছিলেন। মনিকাকে খাইয়ে তাঁর কাছে বাচ্চাকে দিয়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে যান জ্যোৎস্নাদেবী। তাঁর কথায়, “বেলা ১১টা নাগাদ বাচ্চার এক নাগাড়ে কান্না শুনে এসে দেখি বাচ্চাটা বারান্দায় শুয়ে। আশপাশে কেউ নেই। এদিক ওদিক খুঁজেও মেয়েকে না পেয়ে দোতলা যাই। সেখানে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। ধাক্কা মেরে দরজা খুলতে দেখি সিলিং ফ্যানে ঝুলছে মেয়ে।”
তবে মনিকাদেবীর এ হেন মৃত্যুর জন্য তাঁর ভাই ও কাকীমা শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মনিকার উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন। যদিও জ্যোৎস্নাদেবী এ ধরনের কোনও অভিযোগ করেননি। তিনি বলেন, “মেয়ের মৃত্যুর জন্য ওঁরা কেউ দায়ী নন।” |