ধর্ষককে পিটিয়ে মারা উচিত: অধীর
র্ষণকারীকে ‘পিটিয়ে মেরে ফেলতে ইচ্ছা করে’ বলে মন্তব্য করলেন খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। মঙ্গলবার মুর্শিদাবাদের খোরজুনা গ্রামে গিয়ে তিনি বললেন, “আমার সামনে যদি কোনও ধর্ষণকারী ধরা পড়ে, জানি না, আমি আইন নিজের হাতে তুলে নেব কি না। এ যা চলছে, তাতে ধর্ষণকারীকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করে।”
রেল প্রতিমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে তিনি কী করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কথা বললেন? বহরমপুরে ফিরে অধীরের জবাব, “মন্ত্রী তো পরে। আগে তো আমি মানুষ।” তবে সেই সঙ্গেই তাঁর বক্তব্য, “আইন নিজের হাতে তুলে নেব এ কথা বলিনি। বলেছি, রাজ্য জুড়ে যা চলছে, তাতে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে ইচ্ছা করে। আমি কাউকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে উৎসাহী করছি না।”
এই গ্রামে রবিবার এক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ধর্ষণের আশঙ্কা উড়িয়ে না দিলেও, তা স্বীকারও করেনি। ওই মহিলার স্বামী, প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনেরা দাবি করেছেন, জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দিতে ‘ইচ্ছে করেই’ ধর্ষণের অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারাও সেই দাবি করছিলেন। মঙ্গলবার খোরজুনাতে যান জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর। গাড়ি থেকে নামতেই গ্রামবাসীরা চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেন। তারপরে তিনি একটি মোটরবাইকে উঠে বক্তৃতা শুরু করেন। তখনই ধর্ষণকারীকে দেখলে নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারেন বলে মন্তব্য করেন রেল প্রতিমন্ত্রী।
খোরজুনায় অধীর চৌধুরী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
দাপুটে নেতা বলে পরিচিত অধীরের খাসতালুক মুর্শিদাবাদ। এলাকায় বিভিন্ন ঘটনায় তিনি বারবার তীব্র প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়েছেন। বারবার নানা উত্তেজক মন্তব্যও করেছেন। কিন্তু তখন তিনি সাংসদ থাকলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন না। এখন কি এই মন্তব্য করতে পারেন? অধীরের বক্তব্য, “গ্রামের মহিলাদের বুক ফাটা কান্না দেখেই আমি আবেগ সামলে রাখতে পারিনি। তা ছাড়া, পুলিশ যে ওই ঘটনাটি লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করছে, তা-ও আমি মেনে নিতে পারছি না। সে কারণেই এমন কথা বলেছি।” জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর অবশ্য জানিয়েছেন, ঘটনাটি মোটেই লঘু করার চেষ্টা হচ্ছে না। তাঁর কথায়, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে কি না, তা জানা যাবে। সেই মতোই মামলা করে তদন্ত করা হবে।”
খোরজুনায় অধীরের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহম্মদ আলি। তাঁর বক্তব্য, “এই মন্তব্য উস্কানিমূলক। এর ফলে সমাজে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে, তার দায় তাঁকেই নিতে হবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, “দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে এমন মন্তব্য করা অনুচিত। তবে রাজ্য জুড়ে যা চলছে, তাতে আইনের শাসন বলে কিছু নেই।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য অবশ্য অধীরের বক্তব্যকে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করেন। তাঁর কথায়, “অধীর হয়ত কথার কথা বলেছেন। আইনের রক্ষকদের কাছে কোনও ভরসা না পেয়ে মানুষ আর আইনের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না। অধীরের কথাতেও সেই ক্ষোভই ঝরে পড়েছে। কোনও ভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়ার কথা অধীর বলতে চাননি বলেই আমার মনে হয়।” কংগ্রেসের আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিও বলেন, “একের পর এক ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটছে। পুলিশের ভূমিকা নীরব দর্শকের। অপরাধীরা কোনও না কোনও ভাবে শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত। এ সব নিয়ে প্রতিবাদ করলে মাওবাদী আখ্যা দেওয়া হয়। কোথাও কোথাও শো-কজও করা হয়। তাই ক্ষোভ জমতে জমতে এই ধরনের ভাষা বেরিয়ে আসে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.