|
|
|
|
ময়না-তদন্ত নিয়ে টালবাহানা |
হাসপাতালেই মৃত্যু হল বৃদ্ধ সিপিএম কর্মীর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সিপিএম কর্মী রামজীবন খামরি (৬৭) মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মারা গেলেন। রামজীবনবাবু গত ২০ জুন থেকে এসএসকেএমের অর্থোপেডিক বিভাগে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধের ফিমার বোন ভেঙে গিয়েছিল। জোরদার আঘাতে গভীর ক্ষত হয়েছিল তাঁর তলপেটে, তা থেকে সংক্রমণও ছড়ায়। তবে এ দিন গোপীবল্লভপুর থানা থেকে পুলিশ রিপোর্ট ভবানীপুর থানায় এসে না পৌঁছনোয় ময়না-তদন্ত করা যায়নি। আজ বুধবার রির্পোট এসে পৌঁছলে এসএসকেএম হাসপাতালেই তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত হবে।
ময়না-তদন্ত নিয়ে এই জটিলতা কেন? পুলিশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর সভার প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ততার কারণে এ দিন পুলিশ রিপোর্ট পাঠানো হয়নি। যদিও ঘটনা হল থানায় এতদিনেও এফআইআর লিপিবদ্ধ না হওয়ার কারণেই ময়নাতদন্তের ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়।
গত বৃহস্পতিবার, ঘটনার পর দিনই থানায় রামজীবনবাবুর দুই ছেলে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, ওই হামলার ঘটনায় তৃণমূল কর্মীরা যুক্ত থাকায় গোপীবল্লভপুর থানা এফআইআর নিতে চায়নি। গত শুক্রবার ডাকযোগে থানায় অভিযোগপত্র পাঠান রামজীবনবাবুর ছোট ছেলে ভগীরথ খামরি। সেই অভিযোগপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ এখনও ভগীরথবাবুর কাছে এসে পৌঁছয়নি। মঙ্গলবার পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চ মহলে বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া হওয়ায় রাতে অভিযোগ দায়ের ও মামলা রুজু হয়।
গত বুধবার ১৯ জুন বিকেলে গোপীবল্লভপুর থানার মানিচবাড়িয়া গ্রামে নিজের বাড়িতে আক্রান্ত হন সিপিএমের অমরদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য রামজীবনবাবু। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মানস পাত্রের নেতৃত্বে জনা চল্লিশ সশস্ত্র লোকজন রামজীবনবাবুর উপর হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। টাঙি ভোজালির কোপে গুরুতর জখম হন তিনি। তাঁর ডান হাতটি কব্জি থেকে কেটে ঝুলে গিয়েছিল। মাথায় ও পেটেও গভীর ক্ষত হয়েছিল। রামজীবনবাবুকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর দুই ছেলে সমীর ও ভগীরথ খামরিও জখম হন। পরদিন হাসপাতাল থেকে তাঁরা ছাড়া পাওয়ার পরে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ ফিরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা ঝাড়গ্রামের সাংসদ পুলিনবিহারী বাস্কে বলেন, “শাসকদলকে আড়াল করতে পুলিশের এই ভূমিকা অত্যন্ত অমানবিক।” সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার বলেন, “জঙ্গলমহল থেকে তৃণমূল যত জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে, ততই ওরা মাওবাদী কায়দায় হামলা ও খুন-সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছে।” |
|
|
|
|
|