‘মারাকানাজো’ মাথায় রেখে বুধবার বেলো হরাইজোন্তের মাঠে নামছে ব্রাজিল।
ম্যাচটা যতই দুই লাতিন আমেরিকান ফুটবল দেশের স্ট্রাইকিং ফোর্সের মধ্যে হতে চলুক। নেইমার-ফ্রেড-অস্কার বনাম ফোরলান-সুয়ারেজ-কাভানি যুদ্ধের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক কিন্তু ১৯৫০-এর সেই বিশ্বকাপ ফাইনালে মারাকানা স্টেডিয়ামে দেড় লক্ষ সমর্থকের সামনে হটফেভারিট ব্রাজিলের মহা অপ্রত্যাশিত হার উরুগুয়ের বিরুদ্ধে! রিও-র মাঠের মতো ব্রাজিলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর বেলো হরাইজোন্তের মাঠে তেষট্টি বছর আগের বিশ্বকাপেই আর একটা অভুতপূর্ব ফলাফল হয়েছিল। ফুটবল খেলাটার যে দেশে নাম ‘সকার’ সেই তৎকালীন ফুটবল-অজ্ঞ আমেরিকার কাছে হেরেছিল ইংল্যান্ড!
দু’টো অপ্রত্যাশিত ফলই মনে রেখেছেন বুধবারের কনফেড কাপ সেমিফাইনালে ব্রাজিল দলের গোলকিপার জুলিও সিজার। বলছেন, “মারাকানাজো আমাদের বিশ্বকাপ পেতে আরও আট বছর অপেক্ষায় রেখে দিয়েছিল। এ বার উরুগুয়ের কাছে ফের হারতে চাই না। ম্যাচটা মারাকানায় না হোক, যেখানে হচ্ছে সেই বেলো হরাইজোন্তের মাঠেও কিন্তু অভাবিত ফলাফল হয়েছে অতীতে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত।” |
এক ফ্রেমে ফ্রেড-নেইমার-অস্কার। |
কনফেড কাপে এ বার তাহিতির মতো তিন ম্যাচে ২৪ গোল হজম করা এলেবেলে দেশ খেলায় কেউ কেউ ফিফা টুর্নামেন্টের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও পাশপাশি কিন্তু চার সেমিফাইনালিস্টের মিলিত বিশ্বকাপ জয়ের সংখ্যাও ১২। যে উজ্জ্বল পরিসংখ্যান সম্প্রতি বিশ্বকাপ সেমিফাইনালেও বিশেষ দেখা যায়নি। ব্রাজিল ৫। ইতালি ৪, উরুগুয়ে ২। স্পেন ১। মোট ১২ বার বিশ্বজয়ী। বৃহস্পতিবার অপর সেমিফাইনালে দুই ইউরোপীয় সুপার পাওয়ারের মধ্যে ট্যাকটিক্যাল লড়াইয়ের কচকচি থাকতে পারে। কিন্তু বুধবার যে দুই লাতিন আমেরিকান সুপার পাওয়ারের আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের ঝনঝনানি উঠবে তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা একমত।
উরুগুয়ের অ্যাটাকিং ত্রিভুজ সম্পর্কে ব্রাজিলের বায়ার্ন মিউনিখ-খ্যাত ডিফেন্ডার দাতে বলেছেন, “ফোরলান-সুয়ারেজ-কাভানি ত্রিভুজ প্রচণ্ড শক্তিশালী আর স্কিলফুল অ্যাটাকিং লাইন। ওরা নিজেদের দক্ষতায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। আমি ওদের প্রত্যেকের ক্ষমতা জানি। এ রকম বড় ম্যাচে কিন্তু খুব ছোটখাটো ভুল খেলার ভাগ্য গড়ে দেয়। খুব সাবধান থাকতে হবে।”
|
চ্যালেঞ্জার ফোরলান। |
ব্রাজিলের নতুন মহাতারকা নেইমার এই ম্যাচকে কী চোখে দেখছেন? “এ রকম ম্যাচে কেউ ফেভারিট নয়। আমরা যেমন আত্মবিশ্বাসী, তেমনই ওরাও। ব্রাজিল যদি শেষ আট বছরের কনফেড কাপ সেরা হয়ে থাকে, তা হলে উরুগুয়ে শেষ কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন।”
বেলো হরাইজোন্তে গত সপ্তাহে ২০ হাজার আর ৭০ হাজার মানুষের দু’টো প্রতিবাদ মিছিল দেখেছে, ব্রাজিলের এই আর্থিক সঙ্কটের সময় কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার উড়িয়ে কনফেড কাপ করার অভিযোগে। স্কোলারির দলই হয়তো এখন পারে পেলের দেশের মানুষের মুখে অন্তত কিছুটা হাসি ফোটাতে। ফুটবলপ্রেমী ব্রাজিলবাসীর কাছে এ দিন খুশির খবর, ফিফা বলে দিয়েছে পরের বছর তাদের দেশ থেকে বিশ্বকাপ সরানোর কোনও প্রশ্নই নেই। স্কোলারিরও উরুগুয়ের সঙ্গে পুরনো হিসেব মেটানোর নিশ্চয়ই গরজ থাকবে। উরুগুয়ের কাছে ব্রাজিলের শেষ হার ২০০১-এ। যেটা ছিল স্কোলারির ব্রাজিল কোচ হিসেবে প্রথম ম্যাচ। তার পর ব্রাজিল চার বার উরুগুয়েকে হারালেও ‘বিগ ফিল’ তাতে ছিল না।
|
সাম্বা বনাম লা সেলেস্তে |
• ব্রাজিল গত দু’বারের কনফেড কাপ
চ্যাম্পিয়ন
উরুগুয়ে ২০১১-এ শেষ
কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন।
• দু’দলের লড়াইয়ে ব্রাজিল ৩৬ বার জয়ী।
উরুগুয়ে ২৫ বার। শেষ সাক্ষাতে (২০০৯ জুন)
ব্রাজিল জেতে ৪-০।
|
• কনফেড কাপের ইতিহাসে দু’দলের
এটাই প্রথম সাক্ষাত।
• নেইমার ও সুয়ারেজ দু’জনেই তিন গোল করে
চলতি টুর্নামেন্টে যুগ্ম তৃতীয় হায়েস্ট স্কোরার।
• গ্রুপ লিগের তিন ম্যাচে ব্রাজিল দু’গোল খেয়েছে।
উরুগুয়ে তিন গোল। |
|