|
|
|
|
উঠছে প্রশ্ন |
অঙ্গনওয়াড়ির কড়াই নিম্নমানের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অঙ্গনওয়াড়িতে রান্নার জন্য নতুন কড়াই কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। মাস ছয়েক আগে কড়াই কেনাও হয়। কিন্তু তাতে রান্না করা যাচ্ছে না। রান্না করলেই কালো হয়ে যাচ্ছে। সেই খাবার মুখে রুচছে না শিশু ও প্রসূতিদের। ফলে, নিম্নমানের এই কড়াইগুলি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অভিযোগ, কড়াইয়ে আইএসআই চিহ্ন নেই। তা সত্ত্বেও লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে নিম্নমানের কড়াইগুলি কেনা হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম দত্ত বলেন, “এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ৮৬৭৩টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জন্য একটি করে কড়াই কেনা হয়েছিল। মোট খরচ হয়েছিল ৩৪ লক্ষ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা। কড়াইগুলি কেনা হয় হাওড়ার দাসনগরের ‘সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং অর্গানাইজেশন’ থেকে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু ও নারী কল্যাণ বিভাগ থেকে কড়াই কেনার সিদ্ধান্ত জানানোর সময়ই বলা হয়েছিল, সরকারি ওই সংস্থা থেকে কড়াই কেনার কথা জানানো হয়। সেই মতো টেন্ডারের ঝক্কি এড়াতে জেলা প্রশাসনও প্রকল্প আধিকারিকদের (সিডিপিও) জানিয়ে দেয়, তাঁরা যাতে ওই সংস্থা থেকে কড়াই কেনেন। সেই নির্দেশ মেনেই জেলার ৩০টি প্রকল্পের আধিকারিকেরা তা কিনে নেন। প্রতিটির দাম পড়ে ৪০০ টাকা করে।
ইতিমধ্যে নিম্নমানের কড়াই নিয়ে বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি থেকে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ এসেছে প্রকল্প আধিকারিকদের কাছে। প্রকল্প আধিকারিকেরা প্রশাসনিক কর্তাদের তা মৌখিকভাবে জানিয়েওছেন। তারপরেও ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। জেলার এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, “রাজ্য থেকে বিভিন্ন জেলাতেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওই সংস্থা থেকে কড়াই কেনার জন্য। কিছু ক্ষেত্রে জেলাশাসকেরা তা মানেননি। সিডিপিওদের দরপত্র আহ্বান করেই তা কিনতে বলেছিলেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে ওই সংস্থা থেকেই কিনতে বলা হয়েছিল। তার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরও রয়েছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সিডিপিও-রা কেন কড়াই নেওয়ার সময় গুণগত মান যাচাই করল না? কেন আইএসআই চিহ্ন আছে কিনা না দেখে নিলেন না? এক সিডিপিও বলেন, “রাজ্যের নির্দেশের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন নির্দেশ জারি করে ওই সংস্থা থেকে কড়াই কিনতে বলেছে। কড়াইয়ের গুণগত মান নিয়ে হইচই করলে তো আমাদেরই সমস্যায় পড়তে হত!”
প্রশ্ন উঠেছে, কেন ওই সংস্থার কাছেই কড়াই কেনার নির্দেশ জারি করা হল, কেনই বা সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাটি গুণগত মান না দেখেই জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দিল কড়াই। নিম্নমানের কড়াই সরবরাহ করায় তাই কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলেই অভিযোগ উঠেছে। জেলা প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়া গেলে তা রাজ্যকে জানানো হবে। আদৌ কোনও অভিযোগ উঠবে নাকি সকলেই নীরব থেকে যাবেন, আর নীরবতার ফাঁক গলে এমনই ভাবে সরকারি টাকা নয়ছয় হবে, প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায়। |
|
|
|
|
|