|
|
|
|
টুপি কেন, ছাতা কই ঘনঘন ফোন নেতাদের |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
“ছাতা কই? পোস্টার-ফেস্টুন সবই দিয়েছেন। ছাতা তো দেননি দাদা। টুপি চাই না, চাই ছাতা।” এমন আর্জি জানিয়ে ঘনঘন ফোন আসছে জেলার তৃণমূল নেতাদের কাছে। কখনও গড়বেতার কোনও কর্মী ফোন করছেন তো কখনও ফোন আসছে কেশপুর-কেশিয়াড়ি থেকে। আর্জি একটাই, ছাতা চাই।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। তবে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তাতে পাল্লা ভারী শাসক তৃণমূলেরই। আজ, বুধবার দু’দিনের প্রচারে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রচারে আসছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু ঘোর বর্ষাতেই চলছে প্রচার, ফলে ছাতার কদর বেড়েছে। তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “মাঝেমধ্যে ছাতা চেয়ে ফোন আসছে। কর্মীরা অনুরোধ করছেন। আমরা ওঁদের বোঝাচ্ছি। আসলে এই সময়টায় তো আমরা ভোট চাইনি! ভেবেছিলাম, বর্ষার আগেই ভোট হয়ে যাবে। খুব বেশি দেরি হলে মে মাস হবে। তাই ছাতার কথাও ভাবা হয়নি!” |
|
মেদিনীপুরে বিকোচ্ছে তৃণমূলের ছাতা।—নিজস্ব চিত্র। |
দলের কাজ সেরে কলকাতা থেকে ফেরার পথে গত সপ্তাহেই বড়বাজারে ঢুঁ মেরেছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। তিনি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানও। বড়বাজারে গিয়েছিলেন প্রচার- সরঞ্জাম কেনাকাটা করতে। দলেরই এক সূত্রে খবর, ওই দিন তিনি ২ হাজার টুপি, ১০ হাজার ছোট পতাকা, ৩০০টি বড় পতাকা, ৫০ হাজার চেন ফ্ল্যাগ কেনেন। নিজের বিধানসভা এলাকায় প্রচারের জন্য এই সব সরঞ্জাম কেনা। কিন্তু তালিকায় ছাতা ছিল না। কেন? মৃগেনবাবুর জবাব, “ভেবেছিলাম, আরও কিছু জিনিস কিনব। তখন ছাতাও কিনব। এখন সময়ই পাচ্ছি না। প্রচারের জন্য এ গ্রাম থেকে ও গ্রাম ঘুরতেই সময় চলে যাচ্ছে।” ছাতা চেয়ে কর্মীদের ফোন আসছে না? জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বলছিলেন, “মাঝেমধ্যে ফোন আসছে। ওঁদের বোঝাচ্ছি। যত দুর্যোগই হোক না কেন, সব রকম পরিস্থিতির মধ্যেই এগোতে হবে।”
শুধু তৃণমূল নয়, ছাতা চেয়ে ফোন আসছে সব দলের নেতাদের কাছেই। সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সম্পাদকের কথায়, “বর্ষাকালে বাড়ির বাইরে বেরোলে ছাতা লাগেই। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি প্রচারের জন্য কয়েকটা ছাতা চেয়েছেন। দেখছি, কী করা যায়।” জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “ঝড়-জল যাই হোক, বামপন্থীরা সব ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।” আগামী ২ জুলাই পশ্চিম মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। হাতে সময় নামমাত্র। ৬ দিন। এই সময়ের মধ্যেই বাকি সমস্ত কাজ সেরে উঠতে হবে। এ দিকে, রোজই আকাশ মেঘলা। হালকা-মাঝারি বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। দুর্যোগের মধ্যেই প্রচার চলছে। বৃষ্টি থামার আশ্বাস দিচ্ছে না আবহাওয়া দফতরও। পূর্বাভাস অনুযায়ী তো ভোটের সময়ও বৃষ্টি হতে পারে। এই অবস্থায় প্রার্থী থেকে দলের নেতা- কর্মী- সমর্থক, সকলেরই উদ্বেগ বাড়ছে। নির্বাচনের সময় বিভিন্ন দলই জেলা থেকে ব্লকে ব্লকে প্রচার সরঞ্জাম পাঠায়। পাঠানো হয় পোস্টার- ফেস্টুন- চেন ফ্ল্যাগ প্রভৃতি। এ বারও তা হয়েছে। যেমন, তৃণমূল জেলা পরিষদের প্রার্থীদের ২০টি করে ফ্লেক্স দিয়েছে। দলের ২ হাজার করে পতাকা দিয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার করে পোস্টার। এ ছাড়াও বিধায়ক, ব্লক সভাপতি এবং জেলা নেতারা নিজেদের প্রয়োজন মতো প্রচার সরঞ্জাম কেনাকাটা করেছেন। কিন্তু, জেলা থেকে ছাতা পাঠানো হয়নি।
তাহলে উপায়? জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “গত লোকসভা-বিধানসভা নির্বাচনের সময় কিছু ছাতা কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে কিছু ছাতা আছে। সেই ছাতাগুলো দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে।”
|
|
|
|
|
|