|
|
|
|
চপার নিয়ে উদ্ধারকাজে দুই দম্পতি |
সংবাদসংস্থা • গোচর |
রোজ সকালে এক বার দেখা হয় ওঁদের। হেলিপ্যাডে। তার পর আবার দেখা সন্ধেয়। মাঝের সময়টায় এক জন ক্রমাগত উড়ে বেড়ান অতিকায় এমআই-১৭ হেলিকপ্টার নিয়ে। অন্য জন ওড়েন তুলনায় হাল্কা চপার চিতা-য়। বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি বাঁক পেরিয়ে, প্রতিকুল আবহাওয়ার চোখে ধুলো দিয়ে, পাগলা হাতির মতো ফুঁসতে থাকা নদীর পাড় থেকে ওঁরা তুলে আনেন একদল অসহায় মানুষকে।
এখন রোজই এটাই রুটিন ওঁদের দু’জনের। ভুল হল। চার জনের।
প্রথম দু’জন স্কোয়াড্রন লিডার এস কে প্রধান এবং খুশবু গুপ্ত। বিবাহিত জীবন চার বছরের। অন্য দু’জন স্কোয়াড্রন লিডার বিক্রম থিয়াগরমন ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তানিয়া শ্রীনিবাস। আলাপ হয়েছিল বিমানবাহিনীতেই। বিবাহিত জীবনের উড়ান শুরু গত বছরে। |
|
দুই পাইলট দম্পতি। ছবি: পিটিআই |
উদ্ধারকাজ চালাতে বিমানবাহিনীর যে গোটা ষাটেক হেলিকপ্টার আপাতত উত্তরাখণ্ডের আকাশে ক্রমাগত চক্কর কাটছে, সেগুলোর পাইলটদেরই অন্যতম এই দু’জোড়া দম্পতি। স্বামীরা চালান এমআই-১৭, স্ত্রী-রা চিতা-র পাইলট। থাকুক না সারা দিনের ব্যস্ততা, কর্তা-গিন্নি দু’জনকেই যে অভিযানে ডাকা হয়েছে সেটাকেই বিরাট পাওনা বলে মনে করছেন দুই দম্পতি। “কখনও একসঙ্গে আসব ভাবিনি। দায়িত্বটাই আমাদের স্পেশাল করে তুলেছে” হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কথার ফাঁকে জানালেন এস কে প্রধান। খুশবু তখন রওনা হওয়ার তোড়জোড় করছেন।
পরে তানিয়া বললেন, “এখানে আসছি জেনে দারুণ লেগেছিল। তবে কাজ আর ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখতে হয়। তাতে ওড়াটাও হয় স্বচ্ছন্দে।” কর্তাদের কিন্তু গিন্নিদের মিশনে যাওয়া নিয়ে দুর্ভাবনা নেই। প্রধান-বিক্রম দু’জনেরই মতে, তাঁদের পাইলট স্ত্রীদের দক্ষতা প্রশ্নাতীত। দুই দম্পতি ভাল বন্ধুও। কোনও একটা এলাকায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে আসার পর সেই নোটস নিয়ে আলোচনা করে নেন চার জনে। শুরু হয় পরের দিনের প্রস্তুতি।
মেঘে ছাওয়া হেলিপ্যাড থেকে বিক্রম যখন তাঁর চপার নিয়ে উড়ে যান, ব্যস্ত না থাকলে সেই সময়ে স্বামীকে ‘থাম্বস আপ’ দিতে ভুল করেন না তানিয়া! আবার প্রধানেরও ভুল হয় না ককপিটে বসার আগে খুশবুকে ‘গুড লাক’ বলতে।
মুহূর্তে মৃত্যু উপত্যকায় নিঃশব্দ উড়ান দেয় ভালবাসা। |
|
|
|
|
|