|
|
|
|
বিজেপির পাল্টা বার্তায় সুর নরম উদ্ধবের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
নীতীশ কুমারের বিদায়ের রেশ কাটেনি। তার মধ্যেই দলের সব চেয়ে পুরনো জোটসঙ্গী শিবসেনা বেগ দিতে শুরু করেছে বিজেপিকে। দু’দিন ধরে দলের মুখপত্র ‘সামনা’য় বিজেপির সমালোচনা করেছে শিবসেনা। গত কাল লালকৃষ্ণ আডবাণীর জোট প্রসারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পরোক্ষে নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করেছিলেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। আজ এক ধাপ এগিয়ে উত্তরাখণ্ডে মোদীর উদ্ধারকার্যের প্রচার নিয়ে সমালোচনা করেছেন উদ্ধব। এর পরেই আসরে নেমে বিজেপি নেতৃত্ব পাল্টা বার্তা দেন উদ্ধবকে। এবং চাপের মুখে অবস্থান বদলে শিবসেনা প্রধান বলেন, মোদী শত্রু নন, তাঁর বিরোধিতাও করেন না।
প্রশ্ন হল, কেনই বা দু’দিন ধরে উদ্ধব বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন? আর কেনই বা আজ তাঁর অন্য সুর?
বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, বাল ঠাকরের মৃত্যুর পর থেকেই উদ্ধব ও রাজ ঠাকরে-কে এক করার চেষ্টা করছে দল। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দুই ভাই আলাদা লড়ে। আর তার ফল ভুগতে হয়েছে বিজেপিকে। তাই নিতিন গডকড়ী, গোপীনাথ মুণ্ডের মতো বিজেপি নেতারা মহারাষ্ট্রে একটি মহাজোট বানানোর চেষ্টা করছেন। যে জোটে বিজেপি, উদ্ধবের শিবসেনা, রাজ ঠাকরের এমএনএস ও রামদাস আটওয়ালের আরপিআই থাকবে। সমস্যার শুরুও সেখানেই। নির্বাচনের আগে এ ধরনের কোনও সমঝোতায় যেতে নারাজ ঠাকরে-ভাতৃদ্বয়।
উদ্ধবের গোঁসার আরও কারণ, রাজের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর বেশি ঘনিষ্ঠতা। বিজেপির প্রধান মুখ মোদীর সঙ্গে অনেক আগে থেকেই ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছেন রাজ। গুজরাত বিধানসভা ভোটের আগে মোদীর ‘সদ্ভাবনা মিশন’ হোক বা ভোটের পর মোদীর শপথ, সব অনুষ্ঠানেই রাজ গুজরাতে হাজির। মোদীর সঙ্গে রাজের এই ঘনিষ্ঠতা না-পসন্দ উদ্ধবের। অন্য দিকে রাজও এখনই উদ্ধবের সঙ্গে মিটমাট করতে চাইছেন না। যে কারণে তিনি কাল সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি নেতাদের নাম না করেই সতর্ক করে বলেন, “যাঁরা মহাজোটের কথা বলছেন, তাঁদের যাবতীয় গোপন কথা ফাঁস করে দেব।”
বিজেপির এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, দুই ভাইয়ের লড়াইয়ের মধ্যেই উদ্ধব একটু ‘দাদাগিরি’ করে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। নীতীশ জোট ছাড়ায় শিবসেনা ও অকালির উপরে বিজেপির নির্ভরতা বেড়েছে। তাই চাপের রাজনীতি করে নিজের গুরুত্ব আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছেন উদ্ধব। রাজনাথ গত সপ্তাহেই মাতোশ্রীতে উদ্ধবের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। রাজনাথ ঘনিষ্ঠ এক নেতা আজ বলেন, “নীতীশ বিজেপি ছেড়ে যেতে পারেন। কিন্তু শুধু মাত্র মুম্বই ও তার আশেপাশের কয়েকটি এলাকার শক্তি নিয়ে উদ্ধব মোটেই নীতীশ হতে পারবেন না। বিজেপি ছাড়া যে তাঁর গতি নেই, সেটাও তাঁকে বুঝতে হবে।” এই পরিস্থিতিতে আজ বিজেপির তরফে উদ্ধবকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। তার পরেই তড়িঘড়ি সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে উদ্ধব বলেন, “সামনা-র সম্পাদকীয় থেকে খুব বেশি মানে খোঁজার প্রয়োজন নেই। সেখানে মোদীর সমালোচনা করা হয়নি।” সেই সঙ্গেই মোদীর প্রশস্তি করে তিনি বলেন, “মোদী জাতীয় স্তরের নেতা। আমরা তাঁর বিরোধিতা করি না।” |
|
|
|
|
|