ত্রিপুরার নারী নির্যাতন মোকাবিলা
দ্রুত বিচার ও কড়া শাস্তির
প্রস্তাব সর্বদল বৈঠকে
রাজ্যে ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতনের ঘটনার মোকাবিলায় দ্রুত বিচার ও দোষীদের কঠোর শাস্তির সুপারিশ করলেন রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দল। গত কাল সন্ধ্যায় রাজধানী আগরতলায় একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। বৈঠকের মূল আলোচ্যই ছিল রাজ্যের ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন ইত্যাদি।
রাজ্যে যে ভাবে নারী নির্যাতন, খুন, ধর্ষণ বেড়ে চলেছে তাতে সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের রতনলাল নাথ বলেন, ‘‘অভিযুক্তের বিচার দ্রুত করার জন্য আমরা রাজ্যে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ আদালত স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি। পাশাপাশি, পুলিশের কাজকর্মে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ না করলে যে রাজ্যে নারী নির্যাতন কমবে না, সে কথাও পরিষ্কার করে সর্বদলীয় বৈঠকে জানিয়েছি।’’ ভারতীয় দণ্ডবিধি (আইপিসি) সংশোধন করে কাশ্মীর, অসম প্রভৃতি রাজ্যের মতো এ রাজ্যেও নির্যাতিতার সামাজিক ও আর্থিক পুনর্বাসনের বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিতে হবে। রতনবাবু বলেন, পুলিশকে মহিলা-ঘটিত মামলায় চার্জশিট তিন মাসের মধ্যে দিতে হবে, এবং দোষী সাব্যস্ত করে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির মাত্রা বাড়াতে হবে।
‘ফাস্ট ট্র্যাক’ আদালত গঠনের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ প্রায় প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলই। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, ‘‘আইনি ব্যবস্থার পাশাপাশি নারী নির্যাতনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য রাজ্যবাসীর সচেতনতা বাড়ানোর উপর আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। এ ক্ষেত্রে সর্ব স্তরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে করে কাজটা করতে হবে।’ এ ছাড়াও থানায় মহিলা পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিজেপি’র সুধীন দাশগুপ্ত এবং তৃণমূলের অরুণকান্তি ভৌমিক ত্রিপুরায় মহিলা-ঘটিত মামলায় পুলিশের ভূমিকাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। দু’জনেরই বক্তব্য, ‘‘মহিলা নির্যাতনের মামলায় পুলিশের কাজকর্মে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হওয়া জরুরি।’’
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ অবশ্য খারিজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে বলেছি। প্রমাণ দিতে পারলে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে।’’
তাঁর বক্তব্য, এ রাজ্যে পুলিশের কাজে কেউ হস্তক্ষেপ করে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা বিধানসভা অধিবেশনে মহিলাদের উপর নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব মেনেই আমি বৈঠকটি ডাকি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছেন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন একটি কমিটিকে এই প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করে কী করা উচিত তা নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছি। কমিটিতে রয়েছেন ডিজি ও আইন সচিব।
গত কালের সর্বদলীয় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের রতনলাল নাথ, বিজেপির সুধীন দাশগুপ্ত, তৃণমূল কংগ্রেসের অরুণচন্দ্র ভৌমিক, সিপিএমের বিজন ধর, সিপিআইয়ের দীনেশ সাহা, ফরোয়ার্ড ব্লকের ব্রজগোপাল রায়। এ ছাড়াও সিপিআই (এমএল), এসইউসিআই, আইএনপিটি ও আমরা বাঙালি-র প্রতিনিধিরাও এই বৈঠকে হাজির ছিলেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.