ঠিকাদার সংস্থা দেউলিয়া হওয়ায় রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে মাটির তলায় নিকাশির কাজ মাঝপথে বন্ধ। সেই অসমাপ্ত কাজ এক সংস্থাকে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে এমন অভিযোগকে ঘিরে মঙ্গলবার তোলপাড় হয় পুর-অধিবেশনে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য চলাকালীন কংগ্রেসের মালা রায় ও সিপিএমের রূপা বাগচী ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। পাল্লা দিতে সদলবল এগিয়ে যান মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার। প্রায় ১০ মিনিট ধরে চলে দু’পক্ষের বাদানুবাদ।
পুরসভা সূত্রের খবর, নিকাশির উন্নয়নে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে জিআরপি লাইনার বসানোর কাজের দায়িত্ব পায় অ্যাঞ্জেলাইনার নামে আন্তর্জাতিক এক ঠিকাদার সংস্থা। ২০১১ সালে ওই কাজ শুরু হয়। এ বছরের শুরুতে সংস্থাটি দেউলিয়া হওয়ায় প্রায় ১০২ কোটি টাকার ওই কাজ মাঝপথে আটকে গিয়েছে। অভিযোগ, পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার বাকি কাজের বরাত অন্য একটি বিদেশি সংস্থাকে দেওয়ার চেষ্টা চালায়। তা রুখে দেয় পুর-প্রশাসন। বন্ধ করা হয় বাকি কাজ। যদিও ওই কাজ শেষ না হলে যে কোনও সময়ে ওই রাস্তায় ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা পুর-প্রশাসনের।
কংগ্রেসের মালা রায় এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব আনেন অধিবেশনে। তিনি বলেন, “ওই অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য নতুন করে টেন্ডার করা হোক।” জবাব দিতে গিয়ে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের এই দুই সদস্যের প্রস্তাব দু’রকম ছিল। নতুন টেন্ডারের পক্ষে মালাদেবীর মত হলেও প্রকাশবাবু তাঁর প্রস্তাবে লিখেছেন নতুন করে টেন্ডার হলে পুরসভার বেশি টাকা খরচ হবে।” মেয়র এ কথা বলতেই প্রতিবাদ করেন মালাদেবী। চেয়ারম্যানের উদ্দেশে তিনি বলেন, তাঁর প্রস্তাবটি পুর-অধিবেশনে গৃহীত হয়েছে। প্রকাশবাবুরটি নয়। গৃহীত না হওয়া প্রস্তাবের উপরে আলোচনা করা নিয়ম বিরুদ্ধ। মেয়র অবশ্য তাঁর বক্তব্য থামাননি। তখন চেয়ারম্যান সচ্চিদানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়রকে বলেন, “যে প্রস্তাব আলোচ্য সূচিতে নেই, তা উল্লেখ করতে পারেন না।” মেয়রও চেয়ারম্যানকে কিছু বোঝাতে চেষ্টা করেন। ততক্ষণে চেঁচামেচি শুরু করেন কংগ্রেস ও বাম কাউন্সিলরেরা। পাল্টা প্রতিবাদ জানান তৃণমূলের কাউন্সিলরেরাও।
পুরসভা সূত্রের খবর, একই প্রস্তাবে কংগ্রেসের দুই সদস্যের দু’রকম বক্তব্য নিয়েই সমস্যা হয়। মালাদেবীর প্রস্তাব প্রথমে জমা পড়ে। জবাবের জন্য দু’টি প্রস্তাবই মেয়রের কাছে পাঠানো হয়েছিল। পরে প্রকাশবাবু তাঁর প্রস্তাবটি তুলে নেন। |