স্কুল থেকে ফেরার পথে উত্ত্যক্ত করত প্রায়ই। বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু তাতে সায় না দেওয়ায় কিশোরীর উপরে ছুরি হাতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে জামুড়িয়ার কুনস্তরিয়া রেলপাড়া এলাকায় এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়ে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি মেয়েটি। অভিযুক্ত যুবক অবশ্য পালিয়েছে। সোমবার কোচবিহারের দিনহাটায় প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে রাস্তায় এক কিশোরীকে ছুরি মেরে খুন করে এক যুবক। সেই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তাড়া খেয়ে যুবকটিও একটি স্কুল বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়। এ দিন জামুড়িয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক সুধীর রাম অবশ্য পালিয়েছে। রাত পর্যন্ত তাকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
কুনস্তরিয়া রেলপাড় এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঠাকুমার সঙ্গে সে মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে যাচ্ছিল। অভিযোগ, মাঝরাস্তায় পাড়ার বছর পঁচিশের যুবক সুধীর চড়াও হয়। কোনও কথাবার্তা ছাড়াই এলোপাথাড়ি ছুরি চালাতে শুরু করে সে। মেয়েটির পিঠ, হাত, মাথা ও থুতনিতে কোপ মারে। মেয়েটির ঠাকুমা জানান, তিনি জাপটে ধরার চেষ্টা করলেও সুধীর পালিয়ে যায়। চিত্কার-চেঁচামেচি শুনে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। তাঁরাই জখম কিশোরীকে কুনস্তরিয়ায় ইসিএলের হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে বাহাদুরপুরে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে আসানসোল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটির দেহে মোট আট জায়গায় ক্ষত রয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ছাত্রীটির বাবা জামুড়িয়া থানায় সুধীরের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “সুধীর কিছু দিন আগে আমার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমরা মানিনি, মেয়েও সায় দেয়নি। তার পর থেকেই সে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করত। কিন্তু এ ভাবে একেবারে ছুরি নিয়ে হামলা করবে ভাবিনি।” ওই ছাত্রীর মায়ের কথায়, “স্কুলে যাতায়াতের পথে আমার মেয়ের পিছু নিত সুধীর। ওর বাড়ির লোকজনকে বলেছিলাম, ছেলেকে এমন আচরণ করতে বারণ করুন। তার পরেও এমন ঘটল!”
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা সোহরাব আলি খানের অভিযোগ, “ওই যুবক প্রায়ই নানা স্কুল-কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে বলে এলাকাবাসীর কাছে শুনেছি। সে লোহাচুরি, কয়লাচুরির সঙ্গে জড়িত বলেও জেনেছি। পুলিশকে যত শীঘ্র সম্ভব সুধীরকে ধরার আর্জি জানিয়েছে।” ঘটনার পরে সুধীরের বাবা উপেন্দর রামও বাড়ি ছেড়েছেন। ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি গোটা ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জখম ছাত্রীর ভাইয়ের দাবি, এ দিন যখন তার দিদিকে আসানসোল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, হাসপাতাল চত্বরে তারা সুধীরকে এক বার দেখেছেন। সে ফের হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছে তারা। পুলিশ অবশ্য জানায়, সুধীরের খোঁজে তল্লাশি চলছে। |